Thank you for trying Sticky AMP!!

সাদাবুক মাছরাঙা

যশোর শহরের খড়কি মোড়ে দেখা মিলল সাদাবুক মাছরাঙার। ছবি: লেখক

যশোর শহরের খড়কি মোড়ে রেললাইনের পাশে শান্ত একটি পুকুর। হঠাৎ গাছ থেকে ঝুপ করে কিছু একটা পড়ার শব্দ পেলাম। তাকিয়ে দেখি, মাছ শিকার করে আবার ডুমুরগাছের ডালে বসেছে একটি বড় মাছরাঙা। চকলেট রঙের তীক্ষ্ণ বড় ঠোঁট দিয়ে মাছটা টুপ করে গিলে ফেলল। ক্যামেরা তাক করে দুটি ক্লিক করতেই সুন্দর পাখিটি ফুড়ুৎ।

এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম জানালেন, প্রতিদিন এখানে এই পাখি আসে। বড় করে ডাক দেয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, মানুষ পাশ দিয়ে গেলেও সহজে উড়ে যায় না।

পাখির বর্ণনা দিয়ে কথা বললাম পাখিবিষয়ক লেখক শরীফ খানের সঙ্গে। তিনি বললেন, এটি সাদাবুক মাছরাঙা (White-breasted Kingfisher)। এই পাখি সারা দেশে দেখা যায়। গ্রাম–শহর, এমনকি ঢাকাতেও এদের দেখা মেলে। চোখের আকার কিছুটা বড়, মাথার ওপরের দিকটা চকলেট রঙের, বুকের রং সাদা ও ডানার রং নীল হয়। স্ত্রী ও পুরুষ পাখি একই ধরনের দেখতে হয়।

এই পাখির কথা তুলতেই শরীফ খান জানালেন, এটি কেবল মাছ নয়; গিরগিটি, ছোট ব্যাঙ, এমনকি ছোট পাখির ছানাও খেয়ে ফেলে অবলীলায়। তাই এরা জলে বা ডাঙায়—উভয় জায়গাতেই বিচরণ করে। থেকে থেকে এত জোরে ডাক দেয় যে মানুষ চমকে ওঠে।

পাখিটি বেশ চালাক। ডোবা বা পুকুরের ধারে এমন জায়গায় বাসা তৈরি করে যে শত্রুর চোখে পড়ে না সহজে। এভাবে নিজেকে নিরাপদ রাখে। জোড়া হয়ে বাসা তৈরি করে। বাসার কৌশলটা চমৎকার। গর্ত করেই একটা প্যাঁচ দিয়ে আবার গর্ত করে। ফলে সাপ এই গর্তে ঢুকে ডিম নষ্ট করতে পারে না। দুজন মিলেই ডিমে তা দেয়। ডিম দেশি কচ্ছপের ডিমের মতো দেখতে, তবে ছোট। সাধারণত ছয়টি ডিম দেয়। প্রজনন মৌসুম গ্রীষ্ম থেকে বর্ষা।

এদের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে এয়ারগানধারী শিকারি। বড় পাখি বলে একে শিকারিরা মেরে খায়। একসময় প্রচুর দেখা গেলেও এখন সেভাবে আর দেখা যায় না।