Thank you for trying Sticky AMP!!

সাপ উদ্ধারকারী কর্মী নেই, অবমুক্তের ব্যবস্থাও নেই

রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় গত ১০ দিনে বাসাবাড়িতে দুই শতাধিক সাপ পাওয়া গেছে, যার সবগুলোই পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন স্থানীয় লোকজন। তবে পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, নির্বিচারে সাপ না মেরে প্রকৃতির মাঝেই ছেড়ে দেওয়া প্রয়োজন। অন্যথাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হবে।
তবে রাজশাহী বিভাগীয় বন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছর ধরে এখানে সাপ উদ্ধারকারী লোকবল নেই। এমনকি সাপ উদ্ধার করে আনলেও অবমুক্ত বা সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই।
এদিকে, পবা উপজেলায় বোরহান বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি সাপের খামার করে বিপাকে রয়েছেন। বন্য প্রাণী আটকে রাখার দায়ে সাত বছর আগে ছয় মাসের সাজা হয়। সাপগুলো কাগজে-কলমে জব্দ করা হলেও বন বিভাগ কোথায় সাপগুলো অবমুক্ত করবে, এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। সাপগুলো এখনো বোরহানের জিম্মায় রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় বাসাবাড়িতে সাপের উপদ্রব বেড়েছে। সব শেষ গত বুধবার মোহনপুর উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের একটি মাটির বাড়ির গর্ত খুঁড়ে ২০টি সাপ পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৯টি বাচ্চা সাপ। সবগুলোই মেরে ফেলা হয়। এর আগে গত সোমবার রাতে দুর্গাপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামের একটি বাড়িতে ১০টি সাপ ও ৪৫টি ডিম, বেলঘরিয়া গ্রামের মুরগি ব্যবসায়ীর বাড়িতে ৩টি সাপ ও ৪০টি ডিম এবং অনন্তকান্দি গ্রামের ১টি বাড়িতে ৩০টি গোখরা সাপ ও ৪৫টি ডিম পাওয়া যায়। সাপগুলো মেরে ফেলা হয়েছে। ডিমগুলোও নষ্ট করা হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে রাজশাহী নগরের বুধপাড়া ও তানোর উপজেলার ২টি বাড়ি থেকে ১৫৩টি গোখরা সাপ ও ১৩টি ডিম পাওয়া যায়। এসব সাপও মেরে ফেলা হয়েছে।
রাজশাহীতে পরিবেশ নিয়ে কাজ করেন শাহ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা জাহাঙ্গীর শাহ। তিনি বলেন, নির্বিচারে সাপ মেরে ফেলার কারণে ইঁদুরের উপদ্রব বাড়ছে। সাপকে প্রকৃতিতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।
রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এক বছর ধরে তাঁদের সাপ উদ্ধারকারী কোনো দল নেই। কেউ খবর দিলে তাঁরা অন্য প্রাণী উদ্ধার করতে পারেন। কিন্তু সাপ উদ্ধার করতে পারবেন না।
সাপ উদ্ধার ও সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে নগরের শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরহাদ উদ্দিন বলেন, এ চিড়িয়াখানায় সাপ রাখার ব্যবস্থা নেই। খাঁচা না থাকায় বর্তমানে চিড়িয়াখানায় কোনো সাপও নেই। কেউ সাপ ধরে দিলেও তাঁরা রাখতে পারবেন না।
সাপের খামারি বোরহান বিশ্বাস বলেন, তাঁর ছয় মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল। তখন দেখভাল করার কেউ না থাকায় অনেকগুলো সাপ মরে গেছে। বন বিভাগ তাঁর কাছ থেকে সাপগুলো নিচ্ছে না। আবার সাপের খাবার ও পরিচর্যা বাবদ কোনো খরচও দিচ্ছে না। প্রাকৃতিক পরিবেশে এগুলো অবমুক্ত করা দরকার।
বোরহানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী রবিউল ইসলাম বর্তমানে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলায় ফরেস্ট রেঞ্জ কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। এত দিনেও কেন বোরহানের জিম্মা থেকে সাপগুলো নেওয়া হয়নি—জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিষয়টি আদালতের আদেশসহ বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল, ঢাকার বন সংরক্ষককে চিঠি পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সাপগুলো এভাবেই রয়ে গেছে।