Thank you for trying Sticky AMP!!

সীমান্ত চুক্তিতে সমর্থন দেবে না বিজেপি

বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের লক্ষ্যে ভারতের সংবিধান সংশোধনী বিলে সমর্থন দেবে না বিজেপি। তাই ভারতীয় সংসদের চলতি বর্ষাকালীন অধিবেশনে ঐতিহাসিক চুক্তিটির অনুমোদন চরম অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিজেপির নেতা ও ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা গতকাল মঙ্গলবার সংসদ ভবনে সীমান্ত চুক্তির বিষয়ে তাঁর দলের এই অবস্থানের কথা জানান। তিনি দুপুরে সংসদ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

সম্প্রতি দিল্লি সফরের সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ভারতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী-দলীয় নেতা অরুণ জেটলির কাছে সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে বিজেপির সহযোগিতা চেয়েছেন। তখন বিজেপির নেতা অরুণ জেটলি দীপু মনিকে বলেছিলেন, দলের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে তাঁদের অবস্থান জানাবেন। গতকাল যশবন্ত সিনহার বক্তব্যে বিজেপির অবস্থান পরিষ্কার হলো।

গত ২৫ থেকে ২৭ জুলাই দিল্লিতে দীপু মনির ওই সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালমান খুরশীদ সীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের বিল সংসদে উত্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন।

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ (প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক জোট) সরকারের সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী রাজীব শুক্লা গত সোমবারও প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘স্থলসীমান্ত চুক্তির বিলটি পাস করানোর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে দেওয়া প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রাখার চেষ্টা করব। এ জন্য বিজেপির সহযোগিতা প্রয়োজন। সেই সহযোগিতা না পেলে আমাদের চেষ্টা হবে রাজ্যসভায় বিলটি অন্তত উত্থাপন করা, যা গত অধিবেশনে চেষ্টা সত্ত্বেও সম্ভব হয়নি।’

কংগ্রেস সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার শুরু হওয়া দ্বিকক্ষবিশিষ্ট ভারতের সংসদের (রাজ্যসভা ও লোকসভা) চলতি অধিবেশনে সরকার ৪৪টি বিল পাস করাতে আগ্রহী। ওই তালিকায় ৪ নম্বরে (রাজ্যসভা) আছে স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদন বিল।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গতকাল যশবন্ত সিনহা বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন বিল পাস করানোর প্রক্রিয়াটা কী, তা প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত। এ জন্য সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সমর্থন প্রয়োজন। আমাদের সাহায্য ছাড়া এটি হবে না। চুক্তিটি সইয়ের আগে প্রধানমন্ত্রীর বিজেপির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। তা না করে তিনি এখন সমর্থন চাইছেন। আমরা তা কিছুতেই হতে দিতে পারি না।’

ঝাড়খন্ড রাজ্যের হাজারীবাগ থেকে বিজেপির নির্বাচিত লোকসভার এই সাংসদ খুব স্পষ্ট করেই জানিয়েছেন, চুক্তিটি সইয়ের পর এভাবে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় তাঁরা সমর্থন দেবেন না।

বিজেপির সঙ্গে আলোচনা না করে চুক্তি সইয়ের কথা যশবন্ত বললেও ঘটনা হলো, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কিন্তু চুক্তিতে সায় দিয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির এক সাংসদ প্রথম আলোকে বলেন, নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে কোনো মতপার্থক্য ছিল না। কিন্তু রাজ্যস্তরে, বিশেষ করে আসামের বিজেপি নেতাদের প্রবল আপত্তি রয়েছে। তাই ভোটের আগে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

আসাম গণপরিষদের রাজ্যসভার সদস্য বীরেন্দ্র বৈশ্য প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিজেপি কী করবে তা জানি না। ওদের নেতারা যা বলেন, কাজে অনেক সময় তার প্রতিফলন থাকে না। তবে আমরা আগেও বিলটির বিরোধিতা করেছি, এবারও করব।’

ভারতের সংসদের বর্ষা অধিবেশন শুরু হয়েছে গত সোমবার। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত স্থায়ী এই অধিবেশনের মোট কার্যদিবস ১৬ দিন। স্বাভাবিকভাবেই স্থলসীমান্ত চুক্তি অনুমোদনের বিল সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। রাজ্যসভায় যে তালিকা প্রস্তুত হয়েছে, তাতে বিলটির ক্রমিক সংখ্যা ৪ এবং লোকসভায় ক্রমিক সংখ্যা ১৫।

সংসদীয় অধিবেশনের সাম্প্রতিক যা হাল, তাতে গত বাজেট অধিবেশনে ৩৫টির মধ্যে দুটি মাত্র বিল পাস করা সম্ভব হয়েছিল। এর আগে গত শীতের অধিবেশনে ২৫টির মধ্যে পাস হয়েছিল মাত্র ছয়টি বিল।