Thank you for trying Sticky AMP!!

সুবর্ণচরে গণধর্ষণ: আরও দুই সাক্ষী বৈরী

প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাতে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে চার সন্তানের মাকে (৪০) গণধর্ষণের মামলায় আরও দুই সাক্ষীকে বৈরী ঘোষণা করেছেন আদালত। তাঁরা হলেন অভিযোগপত্রের ৯ নম্বর সাক্ষী আবুল কালাম ও ১০ নম্বর সাক্ষী সাদ্দাম হোসেন। এ নিয়ে পাঁচজন সাক্ষীকে বৈরী ঘোষণা করা হলো।

আজ রোববার দুপুরে নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২–এর বিচারক জেলা জজ মোহাম্মদ সামস উদ্দীন খালেদ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখিত সাক্ষীদের বৈরী ঘোষণা করেন। পরে আদালতে দুই সাক্ষীকে জেরা করে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) মো. ছালেহ আহমদ সোহেল খান প্রথম আলোকে বলেন, বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ৯ নম্বর সাক্ষী আবুল কালামকে ডাকা হয়। সাক্ষ্য দিতে এসে সাক্ষী আবুল কালাম পুলিশের কাছে ১৬১ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি অস্বীকার করেন। তিনি গণধর্ষণের ঘটনাটি সকালে শুনেছেন বলে দাবি করেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ আসামিকে বৈরী ঘোষণার আবেদন করেন আদালতে।

পরে রাষ্ট্রপক্ষের জেরার জবাবে আবুল কালাম রাতেই ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছেন বলে স্বীকার করেন। এ সময় তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়জন আসামির নাম বাদীর কাছ থেকে শুনেছেন বলে উল্লেখ করেন। জেরার সময় বাদীপক্ষের আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রছুল মামুন কাঠগড়ায় থাকা সব আসামি (১৪ জন) ঘটনাস্থলে ছিলেন বললে সাক্ষী আদালতকে জানান, না, নয়জন আসামির কথা তিনি শুনেছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জসিম উদ্দিনের জেরার জবাবে সাক্ষী আবুল কালাম আদালতকে জানান, সকাল সাতটা থেকে সাড়ে সাতটার মধ্যে তিনি নির্যাতনের শিকার নারীর বাড়িতে যান। তখন নারীর স্বামী নয়জন আসামির নাম বলেছেন। দুই দিন পর তিনি হাসপাতালে ওই নারীকে দেখতে গেছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এরপর অভিযোগপত্রের ১০ নম্বর সাক্ষী সাদ্দাম হোসেন (২২) সাক্ষ্য দানকালে আদালতে বলেন, তিনি ঘটনার রাতে নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামীর ডাকে তাঁদের বাড়িতে যান। মামলার বাদী তখন তাঁকে বাড়িতে ‘ডাকাত’ ঢুকে তাঁদের মারধর করেছে জানান। তিনি তখন সোহেল এক ও দুই, বেচু, সালাউদ্দিন ও আবুর নাম বলেছেন। এই পাঁচজন আসামি ছাড়া বাকিদের তিনি চেনেন না।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মো. মর্তুজা আলী পাটোয়ারী জানান, সাক্ষী সাদ্দাম হোসেন ধর্ষণের ঘটনাকে ডাকাতির ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করায় তাঁকে বৈরী ঘোষণার আবেদন করা হয়েছে। আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে সাক্ষীকে জেরার করার অনুমতি দেন।

এ সময় বাদীপক্ষের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রছুল মামুন সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন, তাঁর (সাক্ষীর) বাবা মো. মোস্তফা আর আসামি হাসান আলী বুলু ভায়রাভাই কি না? সাক্ষী সত্য নয় বলে আদালতকে জানান। এ পর্যায়ে আদালতের কার্যক্রম মুলতবি ঘোষণা করেন।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-সন্তানদের বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও গণধর্ষণ করা হয়। নির্যাতনের শিকার নারীর অভিযোগ ছিল, ভোটকেন্দ্রে থাকা ব্যক্তিদের পছন্দের প্রতীকে ভোট না দেওয়ার জের ধরে ওই হামলা ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২৭ মার্চ আদালতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযোগপত্র দেয়।