Thank you for trying Sticky AMP!!

সুষ্ঠু নির্বাচনের দায়ভার

এ টি এম শামসুল হুদা

একটি নির্দিষ্ট দিনক্ষণে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণ করা হলেও নির্বাচন কোনো এককালীন ঘটনাবিশেষ নয়, এটি দীর্ঘ সময়ব্যাপ্ত একটি প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংবিধান কিংবা সংশ্লিষ্ট আইনে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও এই প্রক্রিয়ায় বহুবিধ সংগঠন ও বিভিন্ন সংস্থার প্রায় এক লাখ কর্মীই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিনের আগে ও পরে কয়েক সপ্তাহ সম্পৃক্ত থাকেন। নির্বাচনী প্রচারণা, ব্যয়, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও দলগুলোর নির্বাচনকালীন আচরণ, ভোটকেন্দ্র প্রস্তুতকরণ, ভোটের মালামাল সংগ্রহ ও বিতরণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোট গ্রহণ ব্যবস্থাপনা, ভোট গণনা, ফলাফল তৈরি ও ঘোষণা ইত্যাদি খুঁটিনাটি বিষয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে সামাল দিতে হয়। এতসব কাজের মধ্যে ত্রুটিবিচ্যুতি ঘটা কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়।

আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলো এই ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতিকে স্বাভাবিক মানবিক দুর্বলতা হিসেবে ক্ষমাসুন্দর চোখে না দেখে পোলিং স্টাফ তথা নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সজ্ঞানে ভোটের ফলাফলকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে জনসমক্ষে তুলে ধরেন। অবশ্য এ কথা অনস্বীকার্য যে এক লাখ লোক, যাঁদের মধ্যে তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া বাকি সবাই অন্য সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান থেকে স্বল্প সময়ের জন্য নির্বাচন ব্যবস্থাপনা কাজে নিয়োজিত হন, তাঁদের মধ্যে হাতে গোনা দু-চারজন ইচ্ছাকৃতভাবে বিধিবিধানের হেরফের করতে পারেন। কিন্তু সংখ্যায় তাঁরা এতই নগণ্য যে এঁদের হিসাবে না আনাই সমীচীন। তবু কথিত এসব ত্রুটিবিচ্যুতিকে অনেক সময়ই বিশাল আকারের একটা অপকর্ম হিসেবে তুলে ধরে সমগ্র নির্বাচন-প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করা হয়। অথচ আমাদের মতো উন্নয়নশীল অনেক দেশেই এ ধরনের বিচ্যুতি নিয়ে কেউ এক মুহূর্তের জন্যও তাঁদের মূল্যবান সময় নষ্ট করতে চান না। অনেক বড় ধরনের অঘটনও অনেক দেশে সার্বিক পরিস্থিতির বিবেচনায় উপেক্ষা করা হয় এবং নব উদ্যমে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে নাইজেরিয়ার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণকালে সংঘটিত বিরাট আকারের বিপর্যয়ের ঘটনা উল্লেখ করতে পারি। ওই বছর ২ এপ্রিল সকাল আটটা থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেশ কিছু কেন্দ্রে কোনো পোলিং স্টাফ কিংবা ভোটের মালামাল তখনো পৌঁছায়নি। কেন্দ্রের বাইরে লাইনে সারিবদ্ধ ভোটারদের বিপুল উপস্থিতি কিন্তু তাঁদের দেখার কেউ নেই। আবার কোনো কোনো ভোটকেন্দ্রে দেরিতে হলেও ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এমন সময় দুপুরের দিকে অনেকগুলো কেন্দ্রের পোলিং স্টাফ আবিষ্কার করেন যে তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত ব্যালট এবং ফলাফল শিট নেই। এমন পরিস্থিতিতে দুপুরের পর নাইজেরীয় নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান দেশব্যাপী ভোট গ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করে প্রথমে ৪ এপ্রিল ও পরে ৯ এপ্রিল ভোট গ্রহণের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করেন। এ ধরনের গুরুতর বিচ্যুতি অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার পরিচয় বহন করে। কিন্তু এতৎসত্ত্বেও সব কটি রাজনৈতিক দলই বিষয়টি নিয়ে আর কোনো উচ্চবাচ্য না করে কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে এক অভূতপূর্ব দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে দেশকে এক ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের হাত থেকে রক্ষা করে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রাথমিক এই বিপর্যয় ও অব্যবস্থাপনা সত্ত্বেও সার্বিকভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে তাদের সুস্পষ্ট মতামত ব্যক্ত করেছে।

অনেক সময়ই কল্পিত ও সূক্ষ্ম কারচুপির অজুহাত তুলেও সার্বিকভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর যে গতি-প্রকৃতি তাতে তারা প্রয়োজনে এ ধরনের উদারতা দেখাবে, এমনটি কেউ আশা করে না। তবে রাজনীতি যদি জনগণের নামে করা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আরও অধিক দায়িত্বশীলতা জনগণ দাবি করতে পারে। আমাদের দেশে আসলেই সংঘটিত ত্রুটিবিচ্যুতির জন্যই যে শুধু নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করা হয় তা নয়। অনেক সময়ই কল্পিত ও সূক্ষ্ম কারচুপির অজুহাত তুলেও সার্বিকভাবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হয়। নির্বাচন-প্রক্রিয়া, নির্বাচনের ফলাফল এবং ফলাফলের ওপর রাজনৈতিক দলের ও প্রার্থীদের প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার মানসিকতা থেকে এই ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। আমাদের রাজনীতিবিদেরা পশ্চিমা ধাঁচের গণতন্ত্রের গুণকীর্তনে সোচ্চার। কিন্তু ওই সব দেশে গণতন্ত্রচর্চার, বিশেষ করে দলীয় রাজনীতি পরিচালনায় যুগ যুগ ধরে প্রচলিত যেসব লিখিত ও অলিখিত বিধান আছে সেগুলো অনুসরণ তো দূরের কথা, সেগুলো সম্পর্কে কোনো আলোচনাও কেউ করতে আগ্রহী হন না। ওই সব দেশে সংসদ নির্বাচনে পরাজিত দলের নেতা পরাজয়ের দায়দায়িত্ব নিয়ে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। আমাদের দেশে এই রীতি নেই বরং পরাজয়ের দায়ভার অন্যের ওপর চাপিয়ে নেতারা পরাজয়ের গ্লানি হতে মুক্ত হতে চান। এটা জাতীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্ব পর্যন্ত সমভাবে বিস্তৃত এবং সে জন্য পরাজয়ের বিরুদ্ধে ব্যাখ্যা তৈরি করতে একটা ঐকতানের সৃষ্টি করা হয়। সম্ভাব্য পরাজয়ের পক্ষে যুক্তি তৈরি করা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই এই কৌশলের ওপর কাজ শুরু হয়। দলীয় কর্মীরা নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষপাতিত্ব এবং নির্বাচনের দিন ভোট জালিয়াতি ও কারচুপির ওপর অবিরাম অভিযোগ করতে থাকেন।

অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যেসব আসনে দলীয় প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন, সেসব আসনের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই তাঁরা অনিয়ম, কারচুপি ও পক্ষপাতিত্বের নানা অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তা, কমিশন কিংবা মিডিয়ার কাছে পেশ করতে থাকেন। ফলাফল প্রকাশের পর এত জাল-জুয়াচুরির পরও তাঁরা কীভাবে জয়ী হলেন, জিজ্ঞেস করলে তাঁদের বাঁধা উত্তর—কারচুপি অবশ্যই হয়েছে, না হলে আমরা আরও অধিক ভোটে জয়ী হতাম। এসব অভিযোগের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এগুলো সব মৌখিকভাবে মুঠোফোনে কিংবা এসএমএসের মাধ্যমে করা হয়। অথচ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ হলো: অভিযোগ লিখিত হতে হবে যেখানে অপরাধের ধরন, অপরাধ সংঘটনের স্থান, সময়, কাল এবং অভিযোগকারীর সম্পূর্ণ পরিচিতি লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। নির্বাচন কমিশন কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কারও মুখের কথার ওপর কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন না। তাৎক্ষণিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযোগ প্রমাণিত হলেই শুধু দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব। কিন্তু ৯৫ ভাগ ক্ষেত্রে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় না। তবু এসব বায়বীয় অভিযোগের ভিত্তিতেই ১০ লক্ষাধিক লোকের মাসাধিক কালের অধিক অক্লান্ত পরিশ্রমে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে তাঁরা পক্ষপাতপুষ্ট, প্রহসনমূলক কিংবা সূক্ষ্ম কারসাজির শিকার আখ্যা দিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে চান।

নির্বাচন অনুষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ঠিকই, তবে এ কাজ কমিশনকে সংশ্লিষ্ট সবার শুভেচ্ছা, সহমর্মিতা আর সহযোগিতা নিয়েই সম্পন্ন করতে হয়। এ কাজে কমিশনের সবচেয়ে বড় অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলো ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। নির্বাচনে জয়ের উদগ্র কামনায় যেসব অনিয়ম, অনাচার, দুর্নীতি আর সন্ত্রাসের ঘটনা সংঘটিত হয় তার জন্য দায়ী রাজনৈতিক দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। এঁরা যদি সবাই নির্বাচনী আইন ও বিধিবিধান মেনে চলেন, তাহলে তো আর সমস্যাই থাকে না। কিন্তু বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় এ ধরনের দায়িত্ববোধের উন্মেষ সম্ভব নয়।

সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে সব ধরনের বাধাকে শুধু অপসারণই আমাদের লক্ষ্য নয়, সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ‘সুষ্ঠু হয়েছে’ এই মর্মে প্রত্যয় প্রতিষ্ঠার জন্য ও প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন ধরনের আইন, বিধিবিধান ও নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিধান তৈরি করেছে। এগুলো বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থা থেকে প্রচুর কর্মী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়। নির্বাচনের কর্মকাণ্ড নজরদারির জন্য নতুন নতুন অনেক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কাজে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে কিন্তু এতসব করেও নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও সার্থকতা সম্পর্কে কোনো মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হয় না।

ওপরে বর্ণিত সব কলাকৌশলের একটি মৌলিক দুর্বলতা এই যে, এখানে নির্বাচন কমিশন আর রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। যেন নির্বাচন কমিশন একটি পক্ষ যারা নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে, আর রাজনৈতিক দল আরেক পক্ষ, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিষয়টিকে এভাবে বিন্যস্ত না করে সম্পূর্ণ বিষয়টিকে যদি একটি সম্মিলিত ও একক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা হয় তবে পক্ষের ধারণাটির পরিবর্তে অংশীদারির বিষয়টিই মুখ্য হয়ে আসবে। অংশীদারেরা নিজ নিজ দায়িত্বের ভার বহন করেই যাঁর যাঁর কাজটি করে থাকেন। এ ক্ষেত্রেও যদি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দল ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পক্ষ না মনে করে অংশীদার হিসেবে নির্বাচন ব্যবস্থাপনাকে সাজানো হয়, তবে অবশ্যই সঠিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়ভার অনেকটাই তাঁদের ওপর অর্পণ করা সম্ভব। এ কাজের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কতিপয় দায়িত্ব প্রদান করা যেতে পারে। যেমন নির্বাচনী আচরণবিধির পরিপালন বিষয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কতিপয় সংসদীয় আসনের জন্য একটি করে ‘যৌথ মনিটরিং কমিটি’ মাঠে নামানো যেতে পারে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিলিতভাবে এই কমিটির কর্মপরিধি ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচন কমিশনের বিদ্যমান কমিটিগুলো কিছুটা সীমিত আকারে আগের মতোই কাজ করে যেতে পারে। প্রস্তাবিত কমিটির কাজ নির্বাচন শেষে যৌথ মূল্যায়নের মাধ্যমে এর গঠন ও কর্মপরিধি প্রয়োজনে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যেতে পারে। সফল প্রতিপন্ন হলে এই কমিটি ক্রমান্বয়ে সবগুলো আসনের জন্যই গঠন করা হতে পারে এবং ওই সময় কমিশনের নিজস্ব কমিটিগুলো গঠনের আর প্রয়োজন হবে না।

একইভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে ভোটকেন্দ্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের জন্য ওই এলাকার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ‘ভোটকেন্দ্র শৃঙ্খলা কমিটি’ গঠন করা যেতে পারে। একইভাবে সম্মিলিতভাবে এগুলোর কার্যপরিধি ও দায়দায়িত্ব নির্ধারণ করে এগুলো পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালনা করে এর রূপরেখা চূড়ান্ত করা যেতে পারে। সীমিত আকারে ভোটকেন্দ্রের কাছাকাছি সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সীমিত আকারে আপৎকালীন বাহিনী হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। প্রয়োজন না হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না। অংশীদারির এ ধারণাকে আরও এগিয়ে নিয়ে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণাও প্রজেকশন সভার মাধ্যমে যৌথভাবে নিষ্পন্ন করা যায়। আরও অনেক নির্বাচনী প্রক্রিয়া আছে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্পৃক্ত করে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়ভার তাদের মধ্যে সমর্পণ করা যায়। যে কাজ নির্বাচন কমিশন এককভাবে করতে সক্ষম নয়, সে কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্ববান করার সময় এসে গেছে।

এ টি এম শামসুল হুদা: সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার