Thank you for trying Sticky AMP!!

সেপটিক ট্যাংকে নেমে ২ শ্রমিকের মৃত্যু

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের হোসেন মণ্ডল পাড়ার সাঈদ শিকদারের নবনির্মিত বহুতল ভবনের (৪ তলা) সেপটিক ট্যাংকের শাটারিংয়ের বাঁশ খুলতে গিয়ে গতকাল শনিবার দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের উদ্ধার করতে গিয়ে আরও এক শ্রমিক গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মৃত ব্যক্তিরা হলেন গোয়ালন্দ পৌরসভার হাউলি কেউটিল গ্রামের রহিচ ফকিরের ছেলে রাজমিস্ত্রির সহকারী রিয়াজ ফকির (২২)। অপরজন হলেন সাঈদ শিকদারের বাড়ির গরুর খামারের রাখাল স্থানীয় হোসেন মণ্ডলপাড়ার মাইনদ্দিন শেখের ছেলে হারুন শেখ (৩৫)। সাঈদ শিকদার দৌলতদিয়া যৌনপল্লির পাহারাদারদের কথিত সরদার। বিকেলে রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের একটি দল লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর থেকে বাড়ির মালিক ও রাজমিস্ত্রিরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী দু-তিনজন বলেন, কয়েক মাস ধরে সাঈদ শিকদার গ্রামের বাড়িতে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। ভবনের নিচতলায় (মাটির নিচে) ১০ ফুট প্রশস্ত ও ১২ ফুট লম্বা একটি সেপটিক ট্যাংক স্থাপন করেন। প্রায় এক মাস আগে সেপটিক ট্যাংকসহ ভবনের নিচতলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়। গতকাল রাজমিস্ত্রিদের সরদার চান মিয়া সকালে বাড়ি থেকে সহকারী হিসেবে রিয়াজ ফকিরকে নিয়ে আসেন। বেলা আড়াইটার দিকে প্রথমে ওই বাড়ির গরুর খামারের রাখাল হারুন শেখ ট্যাংকের মাত্র এক ফুট বর্গাকৃতির ঢাকনাটি খুলে শাটারিংয়ের বাঁশ খুলতে নিচে নামেন। কিছুক্ষণ পর আরেক রাজমিস্ত্রি গোয়ালন্দ পৌরসভার হাউলি কেউটিল গ্রামের সিদ্দিক ব্যাপারী (৩২) ট্যাংকে নামতে থাকেন। অর্ধেকটা নামার পর দম বন্ধ হয়ে মারা গেলাম বলে চিৎকার করতে থাকলে রিয়াজ এগিয়ে গিয়ে দ্রুত রশি দিয়ে সিদ্দিককে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। এ সময় হারুনের কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে রিয়াজ নেমে পড়েন ট্যাংকে। দুজনের কোনো শব্দ না পেয়ে ওপরে থাকা অন্য রাজমিস্ত্রিরা ঢাকনা দিয়ে দেখেন তাঁরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করতে দেয়াল কাটা শুরু করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের দল লাশ দুটি ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে। এ সময় হারুনের ডান চোয়ালে গভীর কাটা ক্ষত দেখা যায়, যা দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছিল।
উপস্থিত নবনির্বাচিত নির্মাণশ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইউছুপ আলী প্রামাণিক বলেন, ‘বাড়ির মালিক ও রাজমিস্ত্রি উভয়ের দোষ আছে। কারণ বহুতল বাড়ি নির্মাণে বাড়ির মালিক কোনো বিশেষ ব্যবস্থা নেননি।’