Thank you for trying Sticky AMP!!

সৌদি জোটে যাওয়া সংবিধানের পরিপন্থী: বাদশা

ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেছেন, সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন ৩৪টি দেশের জোটে বাংলাদেশের যোগ দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানের ২৫ ধারার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। গতকাল শনিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এদিকে, চীন আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হং লেই গত শুক্রবারের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সৌদি জোটের প্রতি চীনের সমর্থন নিশ্চিত করেছেন। হং লেই বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে সৌদি আরব ও অন্য দেশের প্রয়াসকে চীন সমর্থন করে। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যোগাযোগ ও সমন্বয় জোরদার হবে এবং যৌথভাবে আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে পারবে।
বাংলাদেশ গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবের সন্ত্রাসবিরোধী উদ্যোগে যুক্ত হওয়ার কথা জানায়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য রিয়াদে একটি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। তাতে বাংলাদেশ যোগ দিয়েছে। তবে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৩৪টি মুসলিম দেশ নিয়ে একটি সামরিক জোট করছে রিয়াদ। সুন্নি মতাদর্শের মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ে এ জোট করায় শুরু থেকেই এর ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গতকাল দুপুরে নাচোলে ইলা মিত্র পাঠাগারে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘আইএসের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটে অংশ নিয়ে বৈদেশিক মন্ত্রণালয় (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) এক আজব পদক্ষেপ নিয়েছে।’ তিনি বলেন, তিনি সংসদে প্রতিবাদ জানাবেন। এটা ভুল পদক্ষেপ। এই থেকে বিরত হওয়া উচিত।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, সাংসদ কাজী রোজী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল, উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল কাদের প্রমুখ।
সৌদি জোটে যোগ দেওয়াটা কেন সংবিধানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, এ বিষয়ে পরে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে জানতে চাইলে ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, সংবিধানে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতি বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। যুদ্ধের উদ্দেশ্যে বা অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের নীতি আমাদের নেই। সংবিধানে সাম্রাজ্যবাদী তৎপরতার বিরুদ্ধেও সুস্পষ্ট অবস্থান আছে। হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐতিহ্য ও আঞ্চলিক বৈদেশিক নীতির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আরব বিশ্বের দেশ নয়। আরবের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিল না। বাংলাদেশ এর আগে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়াদি নিয়ে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। সরাসরি যুদ্ধ জোটে যোগ দেয়নি। এ ছাড়া জোটে যেসব দেশ রয়েছে তাদের অনেকের বিরুদ্ধে আইএস (ইসলামিক স্টেট) লালনের অভিযোগ আছে। তারা শিয়া-সুন্নি বিভাজনে ভূমিকা রেখেছে। ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা স্পষ্ট ছিল না। এ অবস্থায় জোটে যোগ দেওয়া মানে আরব বিশ্বের ভুল রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হওয়া।