Thank you for trying Sticky AMP!!

সোনাই নদে ভবন নির্মাণ কাজ আবার শুরু

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় সোনাই নদের মধ্যে সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নির্মাণকাজ আবার শুরু হয়েছে। গত সোমবার ছবিটি তুলেছেন হাফিজুর রহমান

হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সোনাই নদের ওপর ফিউচার কমপ্লেক্স নির্মাণকাজ ফের শুরু করেছে সায়হাম গ্রুপ। পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের মুখে দীর্ঘদিন এ কাজ বন্ধ ছিল।
সম্প্রতি সায়হাম গ্রুপের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় নদী কমিশনের টাস্কফোর্সের ২৮তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা কাজ শুরু করেছে। এতে আইনত কোনো বাধা নেই।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বলছে, জাতীয় নদী কমিশনের পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠানটি ফের নির্মাণকাজ শুরু করছে। কমিশনের ওই প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বাপা সূত্র জানায়, ২০১১ সালে সোনাই নদ ভরাট করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান সায়হাম গ্রুপ সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নামে একটি বহুতল ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে। এতে নদীর প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘সোনাই নদ দখল করে ৪০০ কোটি টাকার সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। একপর্যায়ে বাপা নির্মাণকাজ বন্ধের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কাজটি বন্ধ হয়ে যায় এবং এ বিষয়ে তদন্ত করতে মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়।
গত ২৯ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের টাস্কফোর্সের ২৮তম সভায় সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ চালানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্সের মালিকপক্ষ দাবি করেছে, তাদের মালিকানাধীন জমিতে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে সোনাই নদ নেই। এ দাবির সমর্থনে মাধবপুরের কানুনগো, সহকারী কমিশনার (ভূমি), হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও সর্বশেষ ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের তদন্তে বলা হয়েছে, ব্যক্তিমালিকানাধীন ভূমিতে সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হচ্ছে।
মন্ত্রণালয়ের কমিটির আট সদস্যের মধ্যে আহ্বায়ক জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুর-উর-রহমান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক সাদিকুল ইসলাম ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রাফিউল আলম প্রতিবেদনে সই করেন। কমিটির অপর চার সদস্য স্বাক্ষর করেননি।
বাপার হবিগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, নদীর প্রবাহ ও আকার বিবেচনায় না এনে জাতীয় নদী কমিশন সায়হাম গ্রুপের পক্ষে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। এর সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তারা টাস্কফোর্সের সভার সিদ্ধান্ত বাতিল এবং বিষয়টি আবার তদন্তের দাবি জানান।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান আতাহারুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীও ছিলেন। তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তারপরও বলছি, বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা গেছে, ফিউচার কমপ্লেক্সের ওই জায়গা সায়হাম গ্রুপের ব্যক্তিগত সম্পত্তি। তাই সেখানে তাদের ভবন নির্মাণের অনুমতি দিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।’
সায়হাম ফিউচার কমপ্লেক্সের পরিচালক সৈয়দ শাহজাহান বলেন, ভূমিটি তাঁদের পৈতৃক সম্পদ। এ ছাড়া নির্মাণকাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা না থাকায় তাঁরা এ কাজ শুরু করেছেন।