স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, আবার চালু হচ্ছে ওএমএস
অকালবন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওরাঞ্চলের পাঁচটি জেলায় খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচির আওতায় চাল বিক্রির স্থগিতাদেশ বাতিল করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বদরুল হাসানের সই করা এক চিঠিতে জুন পর্যন্ত এ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে বলা হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহরাব হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, স্থগিতাদেশ বাতিল হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার ডিলারদের কাছ থেকে আবার চালান নেওয়া হয়েছে। ফলে এক দিন বন্ধ রাখার পর শুক্রবার থেকে নেত্রকোনার ৬৯টি ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নের ৭২টি কেন্দ্রে যথারীতি আবার ওএমএসের চাল বিক্রি শুরু হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা, ডিলার, জেলা খাদ্য কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অকালবন্যায় নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও কিশোরগঞ্জে বোরো ফসল নষ্ট হওয়ায় সাড়ে আট লাখের মতো কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হন। এর মধ্যে নেত্রকোনায় নিঃস্ব হয় অন্তত ১ লাখ ৬৭ হাজার কৃষক পরিবার। এ অবস্থায় নেত্রকোনার ১০টি উপজেলার ৫০ হাজার পরিবারকে দুস্থ গোষ্ঠীর জন্য খাদ্যসহায়তা (ভিজিএফ) কর্মসূচির আওতায় নেওয়া হয়। এসব পরিবারের মধ্যে মাসে ৩০ কেজি করে চাল এবং ৫০০ টাকা করে বিতরণ করা হচ্ছে। বাকিদের জন্য গত ১৭ এপ্রিল থেকে ৬৯টি ইউনিয়নে ৭২ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস কর্মসূচি চালু করে খাদ্য বিভাগ। এ কর্মসূচির আওতায় একজন ডিলারকে প্রতিদিন এক মেট্রিক টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভিজিএফ সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিরা ডিলারের দোকান থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে দৈনিক পাঁচ কেজি করে চাল কেনার সুযোগ পান। একেকটি ইউনিয়নের ২০০ পরিবার প্রতিদিন ওএমএসের সুবিধা পান। কিন্তু কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই গত মঙ্গলবার খাদ্য বিভাগের ‘সরবরাহ বণ্টন ও বিপণন বিভাগ’-এর উপপরিচালক এম এ সাঈদের সই করা এক চিঠিতে চাল বিক্রি বন্ধ রাখতে বলা হয়। ফলে গতকাল থেকে বন্ধ হয় ৭২টি বিক্রয়কেন্দ্র। এ কারণে খাদ্যসংকটের আশঙ্কা দেখা দেয়।
এ নিয়ে গতকাল প্রথম আলোয় ‘কম দামে চাল কেনার সুযোগ থাকছে না; নেত্রকোনায় ওএমএসের চাল বিক্রি স্থগিত’ শিরোনামে ও একাধিক জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া স্থানীয় প্রশাসনও ওএমএস কার্যক্রম চালু রাখার তাগিদ দিয়ে খাদ্য অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদরুল আলমের সই করা অপর চিঠিতে স্থগিতের আদেশটি বাতিল করা হয়।
ওএমএস চালু রাখার খবরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। খালিয়াজুরী সদরের পুরানহাটি গ্রামের হরিধন বর্মণ বলেন, লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে হলেও কম দামে পাঁচ কেজি করে চাল পাচ্ছি। এতে অনেক টাকা কম লাগে। বাইরে চালের দাম প্রায় দ্বিগুণ।
জেলা প্রশাসক মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘ওএমএস চালু রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে সঙ্গে কথা বলেছি। বুধবার রাত আটটার দিকে খাদ্য অধিদপ্তর মুঠোফোনে ওএমএস চালুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। আজ (গতকাল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লিখিত চিঠি পেয়েছি।’
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সোহরাব হোসেন বলেন, মহাপরিচালকের সই করা আদেশটিতে বলা হয়েছে, ‘বন্যাকবলিত সুনামগঞ্জে ১১০টি, হবিগঞ্জে ৩৩টি, মৌলভীবাজারে ১৭টি, নেত্রকোনায় ৭২টি এবং কিশোরগঞ্জে ৪৭টি কেন্দ্রে দৈনিক এক মেট্রিক টন করে চাল ওএমএস খাতে বিক্রি কার্যক্রম জুন মাস পর্যন্ত অব্যাহত রাখার জন্য বলা হলো।’
আরও পড়ুন
-
ইসরায়েল–যুক্তরাষ্ট্রের তোপ সামলানোই হবে ইরানের নতুন নেতৃত্বের বড় পরীক্ষা
-
ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসির মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শোক
-
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমের খোঁজ পাওয়া যায়নি পাঁচ দিনেও
-
ইরানে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার পর ঘণ্টাখানেক বেঁচে ছিলেন এক আরোহী
-
মেসি–দি মারিয়াকে নিয়েই কোপা আমেরিকার প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে আর্জেন্টিনা