স্বামীকে হত্যা করে মাটিচাপা, স্ত্রী ও তাঁর প্রেমিকের মৃত্যুদণ্ড
বাগেরহাটে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ দুজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে বাগেরহাটের অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ দণ্ডাদেশ দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন দক্ষিণ কুমারিয়াজোলা গ্রামের আল আমিন শেখের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪৬) এবং একই গ্রামের মিরাজ উদ্দিন শেখের ছেলে শাহাজাহান শেখ (৬০)। বেকসুর খালাস পেয়েছেন সাইফুল শেখ।
তিন বছর আগে জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দক্ষিণ কুমারিয়াজোলা গ্রামের আল আমিন শেখ ওরফে আলাম হত্যার দায়ে আদালত ওই রায় দেন। আসামিদের উপস্থিতিতে বিচারক ওই রায় ঘোষণা করেন। একই মামলার অপর একটি ধারায় (৩০১) হত্যার পর লাশ গুমের অপরাধে ওই দুই আসামিকে আরও সাত বছর কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার নথির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আইনজীবী সীতা রানী দেবনাথ বলেন, ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ছেলে শেখ মোহম্মদ আলীর বাসা থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন আল আমিন শেখ। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। মোহম্মদ আলী ঢাকায় চাকরি করতেন। বাবার খোঁজ না পেয়ে কেরানীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি। পুলিশ এ ঘটনায় নিখোঁজ আল আমিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তাঁর ফোনের অবস্থান বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পায়। এরপর পুলিশ আল আমিনের স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি তাঁর স্বামীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
ওই আইনজীবী বলেন, জবানবন্দিতে প্রতিবেশী শাহজাহানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে জানান ফাতেমা। ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ তাঁর স্বামী আল আমিন ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। এ সময় তিনি তার প্রেমিক শাহজাহান শেখকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমের মধ্যে বালিশ চাপা দিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে মাটির নিচে পুঁতে লাশ গুম করেন।
পরে ফাতেমার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ওই বছরের ১৭ জুন বাড়ির রান্নাঘরের পেছনে মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় আল আমিন শেখের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই নিহত ব্যক্তি ভগ্নিপতি মো. মোবারক আকন বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (সিআইডি) পুলিশ পরিদর্শক মো. সাইফুল ইসলাম তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ১০ জুন নিহত ব্যক্তির স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও তাঁর কথিত প্রেমিক শাহাজাহান শেখ এবং স্থানীয় সাইফুল শেখের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ সোমবার ওই আদেশ দেন। আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী বাহাদুর ইসলাম।
আরও পড়ুন
-
নারী আম্পায়ারের ম্যাচ আসলেই কি খেলতে চাননি মুশফিক–মাহমুদউল্লাহরা
-
রাফায় এক পরিবারের ৯ জন নিহত, শুধু বেঁচে রইল মেয়েশিশুটি
-
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আবারও বিএসইসি চেয়ারম্যান, যেমন ছিল তাঁর আগের ৪ বছর
-
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ
-
ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে যে বদল এসেছে