Thank you for trying Sticky AMP!!

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকতে পারেনি মশকনিধন দল

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি

এডিস মশা নির্মূলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ‘চিরুনি অভিযানের’ তৃতীয় দিনে গতকাল মঙ্গলবার গুলশানের পার্ক রোডে অবস্থিত স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাড়িতে ঢুকতে পারেননি এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে নিযুক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। মন্ত্রী বাসায় না থাকায় তাঁদের বাড়িতে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

জানতে চাইলে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহিদ আহসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা সব বাড়ি যাচ্ছি। মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও আমরা ঢুকতে চেয়েছিলাম। তবে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী জানান, তিনি বাড়িতে নেই। অনুমতি নেওয়া লাগবে। আপনারা পরে আসেন।’

গতকাল ছিল এডিস মশা নির্মূলে ডিএনসিসির ৩৬টি ওয়ার্ডে চলমান ‘এডিস মশা ধ্বংসকরণ ও পরিচ্ছন্নতা অভিযান’ বা ‘চিরুনি অভিযানের’ তৃতীয় দিন। এর অংশ হিসেবে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বারিধারা, গুলশান ২ নম্বরের দূতাবাস সড়ক ও পার্ক রোডে অভিযান চালান ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর। দূতাবাস সড়কের চারটি বাড়িতে অভিযান চালায় ডিএনসিসির দলটি। এ সময় দুটি বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া যায়। বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে সতর্ক করে লার্ভা পাওয়া বাড়ি দুটির বাইরের দেয়ালে স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দূতাবাস সড়ক লাগোয়া পার্ক রোডের ৩ নম্বর বাড়িটি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেকের। অভিযানের অংশ হিসেবে এই বাড়িতে ঢুকতে চায় ডিএনসিসির ম্যাজিস্ট্রেট, কাউন্সিলর ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর দলটি। তবে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের ঢুকতে দেননি।

ঘটনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের লোকজন যখন এসেছিলেন, তখন মন্ত্রী বাসায় ছিলেন না। আমি ওনার অনুপস্থিতিতে দলটিকে ভেতরে যেতে দিইনি। আমি ওনার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ সভায় থাকায় তাঁর অনুমতি নিতে পারিনি।’

ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘১৮ নম্বর ওয়ার্ডে আমরা ১৫১টি নির্মাণাধীন ভবন ও বাড়িতে গিয়েছি। সেখানে ৬০ শতাংশের মতো বাড়িতে বিভিন্ন পাত্র ও জলাধারে পানি জমে থাকতে দেখেছি। এগুলোতে মশার লার্ভাও ছিল। বারিধারা এলাকার বেশির ভাগ বাড়িতেই বাড়ির মালিক থাকেন না। নিরাপত্তারক্ষী বা বাড়ির তত্ত্বাবধায়কেরা বাড়িগুলো দেখভাল করেন। আমাদের মনে হয়েছে তাঁদের দেখাশোনার ঘাটতি আছে।’

অভিযান চলার সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন। তিনি গতকাল বারিধারা এলাকার ৪০টির মতো বাড়িতে মশকনিধনের অভিযানে অংশ নেন। জাকির হোসেন বলেন, ‘যতগুলো বাড়িতে গেছি সেগুলোর অর্ধেকের মতো বাড়িতে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। নির্মাণাধীন বাড়িতে জমে থাকা পানিতে মশার লার্ভা পাওয়ায় একটি ভবন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা এবং আরেকটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ম্যাজিস্ট্রেট।’

ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বাড়িতে সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেট ও কাউন্সিলরকে ঢুকতে না দেওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। তিনি এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন, আইন সবার জন্য সমান। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এডিস মশার লার্ভা পরিষ্কার করে আসছেন। মেয়র এ কাজে সবার সহযোগিতা চান।

বক্তব্য জানতে গতকাল বিভিন্ন সময় কয়েক দফা যোগযোগ করার চেষ্টা হলেও স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেককে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।