Thank you for trying Sticky AMP!!

সড়কে দুধ ঢেলে প্রতিবাদ

হরতাল-অবরোধে দুধ বিক্রি করতে না পেরে ক্ষুব্ধ পাবনার খামারিরা। ক্রয়কেন্দ্রগুলো দুধ না কেনায় গত শনিবার ভাঙ্গুড়া উপজেলার ৭৭ জন খামারি রাস্তায় দুধ ঢেলে এই পরিস্থিতির প্রতিবাদ জানান l ছবি: প্রথম আলো

টানা অবরোধ-হরতালে পাবনার ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার দুগ্ধ খামারিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। ক্রয়কেন্দ্রগুলো নিয়মিত দুধ না কেনায় ৫০ টাকা দরের প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকায়। ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিক্ষুব্ধ খামারিরা গত শনিবার বিকেলে প্রায় দুই হাজার লিটার দুধ সড়কে ঢেলে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলার অধিকাংশ মানুষই দুগ্ধ খামারের ওপর নির্ভরশীল। দুটি উপজেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ লিটার দুধ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যায়। আর কিছু দুধ সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ী মিল্ক ভিটায় প্রক্রিয়াজাত করা হয়। বাকি দুধ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরাসরি কিনে অন্যত্র সরবরাহ করেন। কিন্তু টানা অবরোধ-হরতালে পরিবহন বন্ধ থাকায় দুধ সরবরাহ কমে গেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদামতো দুধ কিনছে না। অনেক প্রতিষ্ঠান ৫০ টাকা লিটারের দুধ দাম কমিয়ে ২৮ থেকে ৩৩ টাকা নির্ধারণ করেছে। তাও আবার তাদের সুবিধামতো ক্রয় করছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে দুধ সরবরাহ করতে না পেরে তাঁরা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন হাটবাজারে ১২ থেকে ১৫ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করছেন। এতে তাঁদের খরচই উঠছে না।
ভাঙ্গুড়া উপজেলার খামারিরা জানান, প্রতিদিন তাঁদের খামারের প্রায় ৩০ হাজার লিটার দুধ উপজেলার জগাতলা এলাকায় ব্র্যাকের দুগ্ধ ক্রয়কেন্দ্রে সরবরাহ করেন। কিন্তু সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি দুধ ক্রয় ও দাম কমিয়ে দিয়েছে। অনেক সময় পরিবহনে সমস্যা হলে দুধ ক্রয় বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে প্রতিদিনই দুধ নিয়ে ঝামেলায় পড়ছেন তাঁরা। অনেকের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশাও দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকেলে উপজেলার কয়েকটি সমবায় সমিতির খামারিরা দুধ নিয়ে ব্র্যাকের ক্রয়কেন্দ্রে যান। ক্রয়কেন্দ্র থেকে তাঁদের জানানো হয় যে বিকেলে দুধ নেওয়া হবে না। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন খামারিরা। শেষ পর্যন্ত ক্রয়কেন্দ্র দুধ না নেওয়ায় ৭৭ জন খামারি তাঁদের প্রায় দুই হাজার লিটার দুধ সড়কে ঢেলে প্রতিবাদ জানান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলার পাথরঘাটা সমিতির জুয়েল রানা বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে তাঁরা প্রতিদিন দুধ নিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। প্রতিদিন দেনা বাড়ছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে খামারের গাভি বিক্রি করেছেন। এভাবে চলতে থাকলে খামারিদের পথে বসতে হবে।
ফরিদপুর উপজেলার আরকান্দি গ্রামের খামারি আবদুল মমিন বলেন, ‘আমার খামারে ১০০ লিটার দুধ হয়, যা বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতাম। অবরোধের কারণে কোনো প্রতিষ্ঠানই দুধ নিচ্ছে না। ফলে পুরো দুধই স্থানীয় বাজারে অল্প দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
ব্র্যাকের ভাঙ্গুড়া দুগ্ধ ক্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুদ দায়েন বলেন, টানা হরতাল ও অবরোধের কারণে দুধের লরি নিয়মিত যাতায়াত করতে পারছে না। তাই প্রতিদিন দুধ ক্রয়ও সম্ভব হচ্ছে না।