Thank you for trying Sticky AMP!!

সড়ক নির্মাণে দুর্নীতি রোধে দুদকের একগুচ্ছ সুপারিশ

সড়ক নির্মাণে পদে পদে অনিয়ম হচ্ছে। এসব অনিয়মের মধ্যে রয়েছে সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট, খোয়া, বিটুমিন ব্যবহার করা। ঠিকমতো মাটি ও বালু না ফেলা। সময়মতো কাজ শেষ না করে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো, দরপত্রের মাধ্যমে পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া। এ বক্তব্য দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে গঠিত ‘সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরসংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিম’-এর অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চাপে ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। ঠিকাদার নিয়োগে সিন্ডিকেট প্রথা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। সড়ক নির্মাণে পদে পদে দুর্নীতি হওয়ায় সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে বলেও দুদকের অভিমত। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের দুর্নীতি কমাতে দুদক ২১টি সুপারিশও করেছে। দুদকের সচিব মো. শামসুল আরেফিন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে পাঠান। আজ মঙ্গলবার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ইটের খোয়া ও পাথর। দরপত্রে উল্লেখিত ইট ও খোয়া না দিয়ে নিম্নমানের ইট ও খোয়া দেওয়া হয়। এটি সওজ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ঠিকাদারেরা করেন। এ দুর্নীতি বন্ধে অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দরপত্রে উল্লেখিত ইট ও খোয়া ঠিকাদার দিচ্ছেন কি না, তা প্রত্যয়ন করতে হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়ক নির্মাণে দরপত্রের শর্তানুযায়ী উন্নত মানের বালু ব্যবহৃত হয় না। এ দুর্নীতি বন্ধে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল বিভাগের অধ্যাপক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, নির্মাণকাজের বিশেষজ্ঞ ও এই অধিদপ্তরের সততার খ্যাতি রয়েছে, এমন প্রকৌশলীদের নিয়ে কমিটি গঠন করা যেতে পারে। এ কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন ব্যতীত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত বিল ছাড় করা হবে না।

সড়ক নির্মাণের অন্যতম উপাদান বিটুমিন ব্যবহারেও অনিয়ম হয়। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মহাসড়কে ৬০-৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে। কিন্তু ঠিকাদারেরা সড়ক-মহাসড়কে ৮০-১০০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করছেন। উন্নত মানের বিটুমিন ব্যবহার করলে ভারী বৃষ্টিতেও সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এ দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হলে সংশ্লিষ্ট মাঠ প্রকৌশলীরা নির্মাণ সাইটে গিয়ে দৈবচয়নের ভিত্তিতে বিটুমিনের মান পরীক্ষা করবেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকল্পের সময়সীমার মধ্যে কাজ শেষ না করে ব্যয় বাড়ানো হয়। এ ক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করা নিশ্চিত করতে হবে। কোনোভাবেই প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো যাবে না।

প্রকল্পের ক্রয়, নির্মাণ, মেরামত ও সংস্কারকাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য প্রকল্পের সব অংশীজনকে নিয়ে ‘গণশুনানি’ ও ‘সামাজিক নিরীক্ষার’ আয়োজন করা যেতে পারে। সড়ক নির্মাণ স্থায়ী ও টেকসই করার জন্য বিটুমিনের বদলে কংক্রিট ব্যবহার করার সুপারিশ করা হয়েছে।