Thank you for trying Sticky AMP!!

সড়ক নয়, যেন নর্দমা

তেজগাঁও রেলস্টেশন ফটক থেকে রেলওয়ে কলোনির ভেতর দিয়ে নাখালপাড়ার দিকে যাওয়ার সড়কের সাম্প্রতিক অবস্থা। ছবি: প্রথম আলো

সড়ক না ভাগাড় বোঝা দায়। চাইলে বড় নালাও বলা চলে। দুই পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আবর্জনার স্তূপ। মাঝে গোড়ালিসমান পানি জমে আছে, হেঁটে চলা অসম্ভব। রিকশাও উল্টে পড়ে মাঝেমধ্যে। কেবল ব্যক্তিগত গাড়ি কিংবা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে গেলে গায়ে-পায়ে কাদাপানি, আবর্জনা লেগে যাওয়ার শঙ্কা কম থাকে।

এই অবস্থা তেজগাঁও রেলস্টেশনের সামনে থেকে রেলওয়ে কলোনির ভেতর দিয়ে ছাপরা মসজিদ পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের। এই পথে চলাচলকারী নিয়মিত যাত্রীরা ঠাট্টাচ্ছলে বলছেন, রাস্তাটি এখন ‘ভিআইপি’ সড়কে রূপ নিয়েছে। কারণ, সবার পক্ষে এই রাস্তা ব্যবহার করা সম্ভব হয় না।

তেজগাঁও রেলস্টেশনের সামনে থেকে দক্ষিণে এই সড়ক নাখালপাড়ার ভেতর দিয়ে মহাখালী পর্যন্ত পৌঁছেছে। নাখালপাড়া থেকে কারওয়ান বাজারের দিকে আসার সহজ পথও এটি।

গত বৃহস্পতিবার দেখা যায়, স্টেশন ফটক থেকে সামান্য এগিয়ে সড়কের দুরবস্থার শুরু। দুই পাশের আবর্জনা আর মাঝে জমে থাকা বৃষ্টির পানি মিলিয়ে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সড়কের মুখে কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। এই অংশটুকু ঠিকঠাক পার হওয়া যাবে কি না, সে ব্যাপারে চালকেরা আলোচনা করছেন। পথচারীরা বাঁ পাশ দিয়ে ঘুরপথে যাচ্ছেন। এখান থেকে সোজা ফকিন্নি বাজার পর্যন্ত সড়কের অবস্থা একই রকম। দুই পাশে আবর্জনার সঙ্গে অনেকগুলো ট্রাক দাঁড় করিয়ে রাখা। সেখান থেকে ছাপরা মসজিদ পর্যন্ত সড়কে কাদাপানি না থাকলেও পিচের কোনো আস্তরণ নেই। দেখে মনে হবে কোনো পায়ে হাঁটা মেঠো পথ।

এ সময় কলোনির ভেতরের অংশে সড়কের পাশে একটি চায়ের দোকানে কথা হলো দোকানি সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, সড়কটির অবস্থা আগেও খারাপ ছিল। কিন্তু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য দুই পাশের স্থাপনা উচ্ছেদের পর এই সড়কে ভারী ট্রাক ঢুকতে শুরু করে। ফলে অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে।

ওই দোকানে উপস্থিত ছিলেন কলোনির বাসিন্দা সবুজ। তিনি বলেন, প্রতিদিন শত শত মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে। রাস্তার খারাপ অবস্থার জন্য স্টেশন থেকে নাখালপাড়া পর্যন্ত ১০ টাকার রিকশা ভাড়া এখন ৩০ টাকায় উঠেছে।

দিদার ইসলাম নামের এক রিকশাচালক ঠাট্টাচ্ছলে বলেন, ‘এইডা অহন ভিআইপি রাস্তা। সবাই চলতে পারে না। বালবাচ্চা নিয়া হাইডা যাওনের উপায় নাই। রিকশার কলকবজা পারলে খইসা পড়ে।’

একই কথা বলেন নাখালপাড়ার বাসিন্দা সাদিকুর রহমান। তাঁর ভাষ্য, এই সড়কে যান চলাচল এখন সংরক্ষিত। কারণ, সামান্য বৃষ্টি হলেই রিকশা, ভ্যান, সাইকেল কিংবা মোটরসাইকেল এখান দিয়ে চলতে পারে না। এলাকাটি পড়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের আওতায়।

সড়কটি সম্পর্কে কাউন্সিলর শামীম হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটি এখন তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এটি এখন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষের হাতে। এই সড়ক এখানে আদৌ থাকবে কি না বা সংস্কার করা হবে কি না, এসব তারাই নির্ধারণ করবে।