Thank you for trying Sticky AMP!!

হত্যার পরিকল্পনা করেই সাংসদ আমানুরের দুই ভাই বিদেশে গিয়েছিলেন

আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের দিন আজ এই মামলার প্রধান আসামি সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাকে টাঙ্গাইল আদালতে আনা হয়। ২৭ জুন, টাঙ্গাইল। ছবি: প্রথম আলো

আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের ছেলে আহমেদ মজিদ ওরফে সুমন আদালতে বলেছেন, সাংসদ আমানুর রহমান খান রানা ও তাঁর ভাইয়েরাই তাঁর (সুমনের) বাবার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এ হত্যার পরিকল্পনা করেই সাংসদের ভাই তৎকালীন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি ভারতে এবং জাহিদুর রহমান খান কাঁকন মালয়েশিয়ায় গিয়েছিলেন। আসামিদের দেওয়া জবানবন্দিতেই এসব বের হয়ে এসেছে। 

আজ বুধবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার পর জেরার সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে সুমন এ কথা বলেন।
টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সুমন সাক্ষী দেন। পরে সাংসদ আমানুর রহমান খানে পক্ষে ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী মাহবুব আহমেদ প্রথমে জেরা করেন। পরে পলাতক আসামি আমানুরের তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পা এবং কবির মিয়া, আলমগীর হোসেন, ছানোয়ার হোসেন ও বাবু মিয়ার পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আরফান আলী মোল্লা জেরা করেন।
টাঙ্গাইল কোর্ট পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ থেকে মাইক্রোবাসে করে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ আমানুর রহমান খানকে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আনা হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিচারক মাকসুদা খান এই মামলার কার্যক্রম শুরু করেন।
মামলার আরেক সাক্ষী নিহত ফারুক আহমেদের মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনেরও হাজিরা বুধবার আদালতে দাখিল করা হয়। পরে আদালত শুধু আহমেদ মজিদ সুমনের সাক্ষ্য ও জেরা গ্রহণ করেন। আগামী ২৬ জুলাই পরবর্তী সাক্ষ্যের দিন ধার্য করেন আদালত।
মামলার প্রধান আসামি সাংসদ আমানুর ছাড়াও টাঙ্গাইল কারাগারে থাকা আরও তিন আসামি মোহাম্মদ আলী, আনিছুর রহমান রাজা ও মো. সমিরকে আদালতে হাজির করা হয়। এ ছাড়া জামিনে থাকা আসামি নাসির উদ্দিন নুরু, মাসুদুর রহমান মাসুদ ও ফরিদ আহম্মেদ আদালতে হাজিরা দেন।
আদালতের কার্যক্রম শেষে দুপুরেই আমানুরকে কড়া পুলিশি প্রহরায় কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর আমানুর ২০১৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এ আদালতেই আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার-১ আছেন। কয়েক দফা উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতে আবেদন করেও জামিন পাননি তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ তাঁর কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এ হত্যায় আমানুর ও তাঁর ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এ মামলায় সাংসদ আমানুর ছাড়াও তাঁর তিন ভাই—টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি রয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।