Thank you for trying Sticky AMP!!

হাইস্কুলে পড়া অর্ধেক শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ে

বাংলাদেশে প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো মাপকাঠি নেই। এক গবেষণায় এ কথা বলেছে জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা-ইউনেসকো।

‘বৈশ্বিক শিক্ষা পরিবীক্ষণ প্রতিবেদন ২০১৭-২০১৮’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যে সমাপনী পরীক্ষা হয়, তা ‘যোগ্যতাভিত্তিক নয়’। প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ পরীক্ষার পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে সঠিক মান অর্জন করা সম্ভব হয় না।’

মাঠপর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম তদারকির কাজে যেসব কর্মকর্তা আছেন, তাঁদের একধরনের অদৃশ্য দুর্নীতি আছে। আবার এর সঙ্গে যুক্ত আছে রাজনৈতিক প্রভাবে সৃষ্টি করা স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাইভেট টিউশন এবং বেশি বেশি মাত্রায় পরীক্ষা শিক্ষার মানের অবনতি ঘটাচ্ছে। আর এসব অনুষঙ্গ দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুফল থেকে বঞ্চিত করছে।

ইউনেসকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর হার ৮০ শতাংশ। কিন্তু নিম্নমাধ্যমিক স্তর পেরোনোর হার ১৯ শতাংশ মাত্র। এখানে বলা হয়, সারা বিশ্বে এখন প্রাইভেট পড়ার হার বাড়ছে। কিন্তু বাংলাদেশ বিশ্বের হাতে গোনা সেসব দেশের একটি যেখানে হাইস্কুলে পড়া অর্ধেক শিক্ষার্থী প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়ে।

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার পরিকাঠামোকে জটিল বলে উল্লেখ করা হয় প্যারিসভিত্তিক এ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, এই স্তরের শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে কোনো স্বীকৃত কর্তৃপক্ষ নেই।

দেশের বিশেষজ্ঞরা ইউনেসকোর এসব পর্যবেক্ষণে সঙ্গে একমত পোষণ করেন। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমরা সাক্ষরতার হার বাড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে সর্বজনীন নিম্নমানের শিক্ষাব্যবস্থার ফাঁদে পড়ে গেছি। মানসম্পন্ন শিক্ষা নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে কোনো আলোচনাও নেই।’ হোসেন জিল্লুর মনে করেন, মানসম্মত শিক্ষার ক্ষেত্রে সুশাসন একটি বড় সমস্যা। এর কারণেই শিক্ষার মান নিম্নগামী হচ্ছে।

মানসম্মত বা গুণগত শিক্ষার বিষয়টি বোঝা যাবে কীভাবে? এর উত্তরে গবেষক হোসেন জিল্লুর কিছু উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজধানীর খুব বেশি বেতনের চাকরিতে রমরমা অবস্থা বিদেশিদের। আবার দেশের ছেলেমেয়েরা বিদেশের নানা পরীক্ষা দিতে গিয়ে গলদঘর্ম হচ্ছে। অপর দিকে বৈশ্বিক বিভিন্ন ব্যাংকিংয়ে অনেক পিছিয়ে আছে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষকেরা যদি শ্রেণিকক্ষে গুণগত ও পর্যাপ্ত সময় দেন, তবে প্রাইভেট পড়ার দরকার হয় না। অর্থ বানানোর একটা বাজে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে দেশে।’ তিনি এই প্রবণতা রোধ করতে সরকারের জোর তৎপরতা দাবি করেন। তিনি বলেন, মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে একটি কর্তৃপক্ষ তৈরির আইন পাস হয়েছে। এটি শিগগিরই গঠন করা হবে।