Thank you for trying Sticky AMP!!

১৫ দিনের মধ্যে রিভিউ করতে হবে নিজামীকে

মতিউর রহমান নিজামী

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী ও জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় আজ মঙ্গলবার প্রকাশ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিয়ম অনুসারে, আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করতে পারবেন নিজামী। তাতেও যদি নিজামীর ফাঁসির দণ্ড বহাল থাকে, তাহলে সবশেষে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
১৫৩ পৃষ্ঠার এই রায় লিখেছেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা। এতে সই করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা, গণহত্যা, হত্যা ও ধর্ষণের দায়ে আলবদরের নেতা নিজামীর ফাঁসির সাজা বহাল রেখে ৬ জানুয়ারি রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চ।
২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসির আদেশ দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বলেছিলেন, নিজামী যে ঘৃণ্য অপরাধ করেছেন, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কোনো সাজা তাঁর জন্য যথেষ্ট নয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ এ রায়ই বহাল রাখেন।

একাত্তরের বর্বর ও নৃশংস বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের নকশাকার নিজামী কোনোদিন তাঁর অপরাধের জন্য অনুশোচনা করেননি। বরং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাঁকে পুনর্বাসিত করা হয়। ২০০০ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীর এদেশীয় শীর্ষ নেতা বা আমির হন। এমনকি ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের কৃষি ও শিল্পমন্ত্রী ছিলেন তিনি। এ নিয়ে ট্রাইব্যুনাল রায়ে বলেছিলেন, নিজামীকে এ দেশের মন্ত্রী করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা দুই লাখ নারীর গালে চড় মারা হয়েছে। এটা জাতির জন্য লজ্জা, অবমাননা। 

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে করা এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন নিজামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০১২ সালের ২৮ মে ট্রাইব্যুনাল নিজামীর বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার শুরু করেন। ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে আটটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন ট্রাইব্যুনাল, এর মধ্যে চারটিতে ফাঁসির আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন নিজামী। গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর আপিলের শুনানি শুরু হয়। ১১ কার্যদিবস শুনানি শেষে ৮ ডিসেম্বর মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। ৬ জানুয়ারি আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়। আজ আপিলের সেই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হলো।