Thank you for trying Sticky AMP!!

২০ বছর জেল খাটার পর স্ত্রী–সন্তান খুনের দায় থেকে মুক্ত তিনি

হাইকোর্ট

দুই দশকের বেশি সময় আগে স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায় থেকে খালাস পেলেন শেখ জাহিদ। ওই হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে শেখ জাহিদের করা জেল আপিল মঞ্জুর করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এই রায় দেন।

স্ত্রী ও সন্তান হত্যার ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে জাহিদের মৃত্যুদণ্ড হয়, যা হাইকোর্টে বহাল থাকে। এই রায়ের বিরুদ্ধে কারাগারে থেকে জেল আপিল করেন জাহিদ। আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

আদালতে জাহিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হিসেবে শুনানিতে অংশ নেন সারোয়ার আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

পরে আইনজীবী সারোয়ার আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, জাহিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় আপিল বিভাগ তাকে খালাস দিয়েছেন। প্রায় ২০ বছর ধরে জাহিদ কনডেম সেলে আছেন। বিচারকালে এক বছর কারাগারে ছিলেন। আপিল মঞ্জুর হওয়ায় তার কারামুক্তিতে বাধা নেই।

তবে ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পেয়ে তা পর্যালোচনা করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আইনজীবীর তথ্যমতে, ১৯৯৭ সালের ১৫ জানুয়ারি দিবাগত রাতে বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার উত্তরপাড়া এলাকার ভাড়া বাসায় রহিমা ও তার দেড় বছরের কন্যাশিশু রেশমা খুন হয়। পরদিন রাতে রহিমার বাবা ময়েন উদ্দিন ফকিরহাট থানায় নিহতের স্বামী শেখ জাহিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পরিবর্তন হয় সাত বার। তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ১৯ নভেম্বর জাহিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় তদন্ত কর্মকর্তা, যিনি ছিলেন অষ্টম।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, ওই মামলায় বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালত ২০০০ সালের ২৫ জুন রায় দেন। রায়ে জাহিদের মৃত্যুদণ্ড হয়। এর আগে ওই মামলায় ১৯৯৮ সালের ১৮ জানুয়ারি বিচারিক আদালতে আত্নসমর্পণ করেন শেখ জাহিদ, যিনি পেশায় মাছ বিক্রেতা। স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় ১৯৯৯ সালের ২০ জুন তিনি জামিন পান। পরবর্তীতে মামলায় গড় হাজির থাকলে তার অনুপস্থিতিতে সাজার রায় হয়। এরপর জাহিদ আবার কারাগারে যান। কারাগারে থেকে ২০০০ সালের ২ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে জেল আপিল করেন তিনি।

আইনজীবীর তথ্যমতে, এরপর ডেথরেফারেন্স ও আসামির করা জেল আপিলের শুনানি নিয়ে ২০০৪ সালের ৩১ জুলাই হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে জাহিদের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। এই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর জেল আপিল করেন জাহিদ। এর ধারাবাহিকতায় আপিলের ওপর আজ রায় দেওয়া হয়।