২১-২৮ মার্চের মধ্যে পদ্মায় বসছে দুটি স্প্যান
চলতি মার্চ মাসে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্ত মিলিয়ে দৃশ্যমান হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতুর দেড় কিলোমিটার অংশ। এর মধ্যে ২১ মার্চ সেতুর ৩৫ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর একটি স্প্যান বসানো হতে পারে। এরপর ২৭ অথবা ২৮ মার্চ মাওয়া প্রান্তে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর আরও একটি স্প্যান বসানো হবে। এই দুটি নিয়ে মোট ১০টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হবে।
পদ্মা সেতু প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এই দুটি স্প্যান বসানোর বিষয়ে আনুষঙ্গিক কার্যক্রম এরই মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। ২০ মার্চ মাওয়ার কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেন দিয়ে নবম স্প্যানটি জাজিরা প্রান্তে নেওয়া হবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ২১ মার্চ এটি বসানো হবে। এই স্প্যান বসানোর পর মাওয়ায় ২৭ অথবা ২৮ মার্চের যেকোনো এক দিন ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর দশম স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
আজ সোমবার পদ্মা সেতুর প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এই সপ্তাহে জাজিরায় একটি স্প্যান বসতে পারে। চলতি মাসে আরও একটি স্প্যান বসানোর বিষয়ে ঠিকাদারদের প্রোগ্রাম রয়েছে।
পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর সঙ্গে সঙ্গে নকশা জটিলতা কাটানো পিলারগুলোর কাজও দ্রুত চলছে বলে জানান শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতিদিনই অবশিষ্ট পিলারের পাইল বসানোর কাজ চলছে। আশা করা যায়, ৬, ৭ ও ৮ নম্বর পিলারগুলোর পাইল বসানোর কাজ শেষ করা যাবে।
পদ্মা সেতুর প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, মূল পদ্মা সেতুর ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে আটটি স্প্যান এরই মধ্যে বসানো হয়েছে। এ ছাড়া ৪২টি পিলারের মধ্যে ২২টির পাইল পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে আরও ১০টি পিলার নির্মাণ সম্পন্ন হবে। সব মিলিয়ে দুই মাসের মধ্যে ৩২টি পিলারের নির্মাণ শেষ হবে। এ ছাড়া ২৬২টি পাইলের মধ্যে ২১০টি পাইল নদীগর্ভে বসানো হয়ে গেছে।
সর্বশেষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাজিরা প্রান্তে ৩৬ ও ৩৫ নম্বর পিলারের ওপর পদ্মা সেতুর অষ্টম স্প্যান বসানো হয়। ওই স্প্যান বসানোর মধ্যে দিয়ে এই প্রান্তে পদ্মা সেতুর টানা ১ হাজার ৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হয়েছিল। এ ছাড়া মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে দেড় শ মিটারের আরও একটি স্প্যান আগেই বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে পদ্মা সেতুর ১ হাজার ২০০ মিটার এখন দৃশ্যমান।
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় পদ্মা সেতু। ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি ৩৮ ও ৩৯ নম্বর পিলারে বসানো হয় দ্বিতীয় স্প্যান। গত বছরের ১১ মার্চ ৩৯ ও ৪০ নম্বর পিলারের ওপর বসে তৃতীয় স্প্যান। ১৩ মে ৪০ ও ৪১ নম্বর পিলারের ওপর চতুর্থ স্প্যান বসানো হয়। ২৯ জুন সেতুর পঞ্চম স্প্যান বসানো হয় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকায়। এ বছরের ২৩ জানুয়ারি জাজিরা প্রান্তের তীরের দিকের ষষ্ঠ স্প্যান বসে। আর গত বছরের শেষ দিকে মাওয়া প্রান্তে ৪ ও ৫ নম্বর স্তম্ভের ওপর একমাত্র স্প্যানটি বসানো হয়।
বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পটির যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার ওই বছরের ২৮ আগস্ট ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এসে রেলপথ সংযুক্ত করে ২০১১ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম দফায় সেতুর ব্যয় সংশোধন করে। প্রকল্পের বর্তমান ব্যয় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূল সেতু নির্মাণের দায়িত্বে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি। আর নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন। দুই প্রান্তে টোল প্লাজা, সংযোগ সড়ক, অবকাঠামো নির্মাণ করছে দেশীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন
-
নাইজারে মার্কিন বাহিনীর অবস্থান থাকা ঘাঁটিতে রুশ সেনাদের প্রবেশ
-
প্রথম টি–টোয়েন্টি: তানজিদের অভিষেক, টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
-
সফর বন্ধের ঘোষণা দিয়ে সাড়ে তিন মাসেই বিদেশ গেলেন প্রতিমন্ত্রীসহ ২৩ জন
-
উপজেলা চেয়ারম্যানকে লক্ষ্য করে বদির গুলি, থানায় অভিযোগ
-
আমেথি থেকে সরে শেষ মুহূর্তে কেন রায়বেরেলি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল