Thank you for trying Sticky AMP!!

৩ বছরের মধ্যে সমাধানে জোর দিয়ে প্রস্তাব গ্রহণ

প্রথম আলো ফাইল ছবি

তিন বছরের মধ্যে রোহিঙ্গা সমস্যার সামগ্রিক সমাধানের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত এবং ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তিন বছর, অর্থাৎ ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর মানবাধিকার কমিশনারকে ওই পরিষদের সামনে রোহিঙ্গাদের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে মৌখিক প্রতিবেদন দিতে হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

গত মঙ্গলবার রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার পরিষদে একটি বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। চীন ভোটাভুটির আহ্বান জানালে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতক্রমে গৃহীত হয়নি। ভোটাভুটিতে ৩৩ জন সদস্য ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন এবং ৩ জন ‘না’ ভোট দেন।

পরিষদের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ধারাবাহিক, নির্দিষ্টভাবে ও ইচ্ছাকৃতভাবে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং তাদের বেসামরিক জনগণের একটি অংশ সহায়তা দিয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে আছে শিশুসহ অন্যদের আইনবহির্ভূতভাবে হত্যা, ধর্ষণসহ যৌন নিপীড়ন, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ ও ভূমিমাইন স্থাপন, গুম, নির্যাতন, ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা ইত্যাদি।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একটি নির্দিষ্ট সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান থাকে না। মানবাধিকার পরিষদে প্রস্তাব গ্রহণের ফলে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আগামী তিন বছর হারিয়ে যাবে না। এই প্রস্তাবে পরিষদের সদস্যরা মানবাধিকার কমিশনারকে রোহিঙ্গা বিষয়ে ২০১৯ সালের মার্চের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রস্তুত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা জানান, ওই প্রতিবেদনে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এবং জাতিসংঘের অন্য সংস্থাগুলোকে মিয়ানমার সহযোগিতা করছে কি না, এই প্রস্তাবের বাস্তবায়ন, অগ্রগতি, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনাসহ আরও অনেক বিষয় থাকবে। মানবাধিকার পরিষদে বাংলাদেশের সদস্যপদ চলতি বছরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই প্রস্তাব গ্রহণের কারণে মিয়ানমারকে আগামী তিন বছর রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।

রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব

প্রস্তাবে মিয়ানমার সরকারকে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে তাদের যেন পূর্ণ নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, যাতে তারা অন্য নাগরিকদের সমান সুবিধা ভোগ করতে পারে।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, ফেরত যাওয়া রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার নিশ্চিত থাকে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তারা যেন মর্যাদার সঙ্গে বসবাস করতে পারে।

প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, যাচাই প্রক্রিয়া একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করে তাদের আদি বাসস্থানে পুনর্বাসিত করতে হবে।

বিচারপ্রক্রিয়া

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রাখাইনে ধর্মীয় উপাসনালয়, কবরস্থানে বেসরকারি সম্পত্তি ইত্যাদি ধ্বংস করা হয়েছে। গণধর্ষণের মতো যৌন নির্যাতনের কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মিয়ানমার সরকারকে যেকোনো সম্পত্তি ধ্বংস বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, যারা নির্যাতনমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত সম্পন্ন করে সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।