৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হচ্ছে, সরবরাহ বাড়বে না
নারায়ণগঞ্জের হরিপুরে ৪১২ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক নতুন কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে আগামী শনিবার। জাইকার সহায়তায় স্থাপিত এই কেন্দ্র সরকারি খাতের ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি) প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রটি উদ্বোধন করবেন। কিন্তু এর ফলে এখনই জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়বে না। কারণ, কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় গ্যাসের সংস্থান নেই। এই কেন্দ্র পূর্ণ ক্ষমতায় চালাতে হলে গ্যাসভিত্তিক অন্য কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহ আরও কমিয়ে দিতে হবে। তাতে নতুন কেন্দ্রটিতে উৎপাদন বাড়লেও ওই সব কেন্দ্রে উৎপাদন কমবে। সে জন্যই জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুতের সরবরাহ সমানই থাকবে।
কেন্দ্রটির সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালানোর জন্য প্রতিদিন ছয় কোটি ৪০ লাখ (৬৪ মিলিয়ন) ঘনফুট গ্যাস লাগবে। এই গ্যাস পাওয়া গেলে আগামী মাসে কেন্দ্রটি পূর্ণ ক্ষমতায় চালানো যাবে।
প্রয়োজনীয় গ্যাস পাওয়া গেলে চলতি মাসেই সামিট গ্রুপের মালিকানাধীন ৩৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার মেঘনাঘাট-২ কেন্দ্রটিও চালু করা যেত। প্রধানমন্ত্রী একই সঙ্গে দুটি কেন্দ্রই উদ্বোধন করবেন, এমন পরিকল্পনাও সরকার ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর ছিল। কিন্তু এখন তা হচ্ছে না। কারণ, মেঘনাঘাট-২ কেন্দ্রটিকে এখন গ্যাস দেওয়া যাচ্ছে না।
মেঘনাঘাটের এই কেন্দ্র দ্বৈত জ্বালানিভিত্তিক। সরকারের সঙ্গে স্বাক্ষর করা চুক্তি অনুযায়ী এটি গ্যাস অথবা ফার্নেস তেল দিয়ে চালানোর কথা। কিন্তু কেন্দ্র চালানোর জন্য যে মানের (স্পেসিফিকেশন) ফার্নেস তেল সরবরাহের চুক্তি করা হয়েছিল, পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) এখন থেকে মাত্র তিন মাস আগে জানায় যে তাদের পক্ষে ওই মানের ফার্নেস তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে না।
এই অবস্থায় সরকারের অনুমোদন নিয়ে কেন্দ্রটির যন্ত্রপাতিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে গ্যাস অথবা ডিজেলে চালানোর উপযোগী করা হচ্ছে। এই কারণে মেঘনাঘাট-২ কেন্দ্রটি চালু হওয়ার সময় মাস দুয়েক পিছিয়েছে।
জানতে চাইলে সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আজিজ খান বলেন, অক্টোবরের শেষ নাগাদ কেন্দ্রটি চালু হতে পারে। তখন গ্যাস পাওয়া গেলে গ্যাস দিয়ে, না হলে ডিজেল দিয়ে কেন্দ্রটি চালানো হবে।
এই দুটি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎ খাতের মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হচ্ছে। এরপরই আগামী বছরের শেষ নাগাদ চালু হবে সামিটের বিবিয়ানা-২ কেন্দ্রটি। এরপর পর্যায়ক্রমে পিডিবির বিবিয়ানা-৩, ভোলা-২২৫ মেগাওয়াট প্রভৃতি কেন্দ্রও চালু করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহের কী হবে? এ প্রসঙ্গে জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলার সূত্রগুলো জানায়, আগামী বছরের শেষ নাগাদ বিবিয়ানা ক্ষেত্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় পাইপলাইন ও কম্প্রেসর স্থাপন শেষ করা গেলে ওই সময় গ্যাসের সমস্যা হবে না। তার আগে ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হবে।
এদিকে সার কারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ ৮৫ কোটি ঘনফুটেরও নিচে নেমে গেছে, যা পবিত্র রমজান মাসে ছিল প্রায় ১০০ কোটি ঘনফুট। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনও সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াটের কাছাকাছি নেমে এসেছে, যা চাহিদার তুলনায় ৬০০ থেকে ৭০০ মেগাওয়াট কম।
আরও পড়ুন
-
স্কুল, মাদ্রাসায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ হাইকোর্টের
-
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, সব প্রাথমিক বিদ্যালয় ২ মে পর্যন্ত বন্ধ
-
আগামীকালও ঢাকাসহ ২৭ জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়
-
সামান্য রদবদলে নতুন টেলিযোগাযোগ আইনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন
-
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় পালা বন্ধ হচ্ছে, শাখা ক্যাম্পাস হবে আলাদা প্রতিষ্ঠান