Thank you for trying Sticky AMP!!

'আমার আর পরীক্ষা দেওয়া হলো না'

পরীক্ষা দেওয়া হলো না সাদিয়ার। স্কুলের বেতন দিতে গিয়ে ফেরার পথে হরতাল সমর্থকদের ককটেলে আহত সাদিয়া এখন ব্যথায় কাতর। চোখের কোণে পানি নিয়ে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আমার আর পরীক্ষা দেওয়া হলো না।’

গতকাল বুধবার রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) কথা হয় সাদিয়ার সঙ্গে। আগামী ৯ জুন থেকে শুরু তার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার প্রস্তুতি-পরীক্ষা শুরু আজ বৃহস্পতিবার থেকে।সাদিয়া আক্তার বলে, ‘সেদিন স্কুল থেকে দুপুরের পর রিকশা করে ফিরছিলাম। শহরের ফতেহ আলী ব্রিজ পার হওয়ার পর হঠাৎ পেছন দিকে বিকট শব্দ হয়। আমি রিকশায় বসে ডান হাত দিয়ে আমার চোখ ঢাকলাম। রিকশাওয়ালা আমাকে ফেলেই পালিয়ে যান। আমি নেমে সামনের মুচির দোকানের কাছে যেতেই আরও একটা বিকট শব্দ। তারপর টের পাই আমার ডান পায়ের পেছন থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। এরপর আর আমার মনে নেই আমি কোথায় ছিলাম বা কী হয়েছিল।’

গত মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামীর হরতাল চলাকালে হরতাল সমর্থকেরা বগুড়া শহরে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এই নির্মম সহিংসতায় আক্রান্ত হয় বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া আক্তার। সে দুই ভাইয়ের একমাত্র ছোট বোন। বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর সাদিয়াকে প্রথমে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গতকাল বুধবার সকালে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তিনি প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, ‘আমি গরিব মানুষ। আমরা রাজনীতি করিও না, বুঝিও না। কেন আমাদের ওপর এমন হামলা হবে? আমার মেয়ের মতো এমন আর কত মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে?’

মা জাহান আরা জানান, প্রতিদিন তিনিই সাদিয়াকে স্কুলে নিয়ে যেতেন, নিয়ে আসতেন। কিন্তু সেদিন সাদিয়া একাই যায়। জাহান আরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমত যে আমার মেয়ের মুখটা বেঁচে গেছে।’

পঙ্গু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক আবদুস সবুর বলেন, কোমর থেকে হাঁটু অবধি শরীরের পেছন দিক ঝলসে গেছে সাদিয়ার। ঊরুতে ক্ষতের মাত্রা বেশি। সাত দিনের আগে ক্ষত সম্পর্কে বলা সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। তবে সাদিয়া এখন বিপদমুক্ত।

গতকাল দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাদিয়াকে দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের হরতালের নামে বোমাবাজি, ভাঙচুরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।’