Thank you for trying Sticky AMP!!

'আল্লাহর আদালতে যেন খুনিগো বিচার হয়'

আবু বকর ছিদ্দিক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আবু বকর ছিদ্দিক হত্যা মামলার আসামিরা খালাস পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোয় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁরা হত্যাকারীদের খালাস পাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন।
আবু বকরের বাবা রুস্তম আলী ও মা রাবেয়া বেগম বলছেন, আবু বকরের হত্যাকারীরা সবাই খালাস পেয়েছেন, এটা ভাবতেই তাঁদের কষ্ট লাগছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আমার নির্দোষ বাবারে যারা হত্যা করল, তাগো বিচার হইল না, এইডা ক্যামন আইন?’ বাবা রুস্তম আলী বলেন, ‘আসামিগো পিছনে বড় বড় মানুষ আছে। তাগো সাজা হইব না, এইডাই স্বাভাবিক। তবে দুনিয়ার আদালতে খালাস হইলেও আল্লাহর আদালতে যেন খুনিগো বিচার হয়।’


দরিদ্র কৃষক রুস্তম আলীর তিন ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে আবু বকর তৃতীয়। মেধাবী ছাত্র আবু বকরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার খরচ জোগাতে বাবা-মাসহ পরিবারের সবাই কঠোর পরিশ্রম করতেন। আবু বকর নিজেও ছুটি পেলে বাড়িতে গিয়ে মাঠের কাজে নেমে পড়তেন।

২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় আবু বকর ছিদ্দিক গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকীসহ অনেকে আবু বকরের বাড়িতে এসে বলেছিলেন, হত্যাকারীদের যাতে বিচার ও শাস্তি হয়, সেই ব্যবস্থা তাঁরা নেবেন।

আবু বকরের বড় ভাই আব্বাস আলী এখন টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে চাকরি করেন। ছোট ভাই ওমর ফারুক একই বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। দুই বোনের বিয়ে হয়েছে। এক বোন গ্রামের মাদ্রাসায় লেখাপড়া করছেন।

বড় ভাই আব্বাস আলী বলেন, পরিবারের সবার আশা ছিল মেধাবী আবু বকর লেখাপড়া শেষে পরিবারের হাল ধরবেন। তাঁর মৃত্যুতে সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু আসামিরা শাস্তির মুখোমুখি হলে তাঁরা কিছুটা হলেও সান্ত্বনা পেতেন।

আবু বকর মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেন। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বজলুর রশীদ খান বলেন, একজন নির্দোষ মেধাবী ছাত্র খুন হলেন। আর তার আসামিরা সবাই খালাস পেল। এটা মেনে নেওয়া কঠিন। এ ধরনের ঘটনায় অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হবে।