Thank you for trying Sticky AMP!!

'এত দুর্ঘটনা, কোনো বিচার তো অয় না'

মেয়ে রিয়া রানী সাহাকে হারিয়ে বিলাপ করছেন মা জয় জয়ন্তী রানী সাহা। গতকাল দুপুরে সদর দক্ষিণের দুর্গাপুর গ্রামে। প্রথম আলো

‘এত দুর্ঘটনা, কোনো বিচার তো অয় না। হয়তো ক্ষতিপূরণ দেবে, শোক হবে, মেয়েকে তো আর দেখব না।’ এ আহাজারি রিয়া রানী সাহার মা জয়ন্তী রানী সাহার। গতকাল মঙ্গলবার কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাড়িতে একমাত্র মেয়েকে হারিয়ে বিলাপ করছিলেন তিনি।
রিয়া (১৫) এ এলাকার দীপু রঞ্জন সাহার মেয়ে। তিনিও শোকে পাথর হয়ে বসে আছেন। ফ্যালফ্যাল চেখে এদিক-ওদিক তাকিয়ে আছেন।

রিয়া রানী সাহা বিজয়পুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। গতকাল সকালে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সেসহ ২৭ জন ছাত্রী লেগুনায় করে উপজেলা পরিষদের মাঠে কুচকাওয়াজে যাচ্ছিল। লেগুনাটি সকাল সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলা ফটকের সামনে লরির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। এতে ঘটনাস্থলে রিয়া নিহত হয়। আহত হয়েছে আরও ৯ জন।

রিয়ার বাড়ি বিজয়পুর বাজারের পূর্ব পাশে, বারপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। বাবা দীপু রঞ্জন বিজয়পুর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

গতকাল সেখানে গিয়ে দেখা যায়, রিয়ার বাড়িতে শোকের মাতম চলছে। বিলাপ করে করে রিয়ার কথা বলছেন মা জয়ন্তী রানী। তিনি বলেন, ‘ঝি (মেয়ে) স্কুল থেকে আসতে দেরি হলে ডায়েরি থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে স্যারদের ফোন দিতাম। এখন আমি কার জন্য ফোন দেব? ওর স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করে ব্যাংকে চাকরি করবে। এ জন্য কমার্সে গেছে। ও প্রায়ই বলত, “২৪ বছরের আগে আমারে বিয়া দিবা না। তাহলে কিন্তু আমি নিজেকে শেষ করে দেব। আমি মরে যাব।” এমন সোহাগী মেয়েটা নেই। এটা কেমন করে ভুলব?’

বড় চাচি ও চাচাতো ভাইবোনেরা রিয়াকে স্নেহ করতেন। তাঁরা জানান, ভোরে ঘুম থেকে উঠে রিয়া চাচিকে বলে, ‘আমি আসি। এরপর এসেছে লাশ হয়ে।’

রিয়ার চাচাতো ভাই বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) প্রাক্তন শিক্ষার্থী রনি কুমার সাহা বলেন, ‘সান্ত্বনাতেই কী সব শেষ? আমি আদরের বোন রিয়া হত্যার বিচার চাই। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটা আমাদের সড়কের সামগ্রিক অব্যবস্থাপনারই চিত্র।’