Thank you for trying Sticky AMP!!

'ওয়াসার পানি কেউ খায় নাকি'

নিজেদের পরিশোধিত পানি নিজেরাই পান করেন না ঢাকা ওয়াসার নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। নাগরিকদের সুপেয় পানি সরবরাহের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটিতে পান করা হয় বাইরে থেকে নিয়ে আসা জারের বিশুদ্ধ পানি।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ নগরের খানপুরে অবস্থিত ঢাকা ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়-১১–এর রাজস্ব বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, একটি কক্ষে দুটি বিশুদ্ধ পানির জার রাখা। সেখানেই বসে আছেন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক সুফিয়া বেগম। সংবাদকর্মী পরিচয়ে খাওয়ার পানি চাইতেই তিনি বলেন, এখনো (সকাল সাড়ে ১০টা) বাইরে থেকে বিশুদ্ধ পানির জার আসেনি। খাওয়ার পানির জন্য কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। ট্যাব থেকে ওয়াসার পানি দিচ্ছেন কেন প্রশ্ন করলে মৃদু হেসে তিনি বলেন, ‘এই পানি কেউ খায় নাকি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কার্যালয়টির একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ৩৫ টাকা দরে প্রতিদিন দুটি বিশুদ্ধ পানির জার এনে কার্যালয়ে রাখা হয়। সেই পানিই ঠান্ডা করে পান করেন কর্মকর্তারা। কার্যালয়ে শীতলক্ষ্যার পরিশোধিত পানি থাকলেও সেই পানিতে দুর্গন্ধ। ফলে কেউই সে পানি পান করেন না। তবে পাশের একটি গভীর নলকূপ থেকে নিয়ে আসা বোতলভর্তি পানি সব সময়ই কর্মকর্তাদের টেবিলের পাশে রাখা থাকে।

ওয়াসার পানি সম্পর্কে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের জামতলার গৃহিণী সালমা আক্তার বলেন, ‘এই পানিতে ময়লা ও দুর্গন্ধ থাকে। পান করা তো দূরের কথা, আমরা রান্নার কাজেও ব্যবহার করি না।’

কার্যালয়টির রাজস্ব কর্মকর্তা সেকান্দার আলী বলেন, ১১ দশমিক ২ টাকা থেকে ৩৫ দশমিক ২৮ টাকা দরে প্রতি ইউনিট (১ হাজার লিটার) পানি সরবরাহ করে ওয়াসা। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যার দুই পারে তাঁদের সক্রিয় গ্রাহক রয়েছেন প্রায় ২৭ হাজার।

আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল হাসেম প্রথম আলোকে বলেন, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলে দুটি শোধনাগারে পরিশোধিত ২ কোটি ৮০ লাখ লিটার এবং ৩১টি গভীর নলকূপ থেকে প্রায় ৬ কোটি লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হয়। ওয়াসার পানি বিশুদ্ধ হলে বাইরে থেকে কেন বিশুদ্ধ পানির জার নিয়ে আসা হয়, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবাই ভালো পানি পান করতে চায়। এখানে (নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়) আমাদের ট্রিটমেন্টের পানি (শীতলক্ষ্যার পরিশোধিত পানি)। তাই কেউ পান করতে চায় না। তবে গভীর নলকূপের পানি অনেকেই পান করেন।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক বলেন, ওয়াসার এমডি দাবি করছেন, তাঁদের পানি শতভাগ সুপেয়। আর ওয়াসার কার্যালয়ে বাইরে থেকে পানি নিয়ে যাওয়া হয় পান করার জন্য। এটা খুবই হাস্যকর। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, যে কারণেই হোক, ওয়াসার পানি অন্তত পানযোগ্য নয়।