Thank you for trying Sticky AMP!!

'তুম জয় বাংলা বলতা, পাকিস্তান নেহি চাহতা'

মো. আবদুল মুকতাদির

শহীদ ড. মো. আবদুল মুকতাদির সিলেটের সদর থানার সিলাম পশ্চিমপাড়া গ্রামে ১৯৪০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূতত্ত্বে এমএসসি পাস করে ড. মুকতাদির ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে বিদ্যুৎ ও পানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (ওয়াপদা) চাকরি নেন। ১৯৬৪ সালের ১৯ অক্টোবর প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন নিজ বিভাগে। ১৯৬৭ সালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাইড্রোলজিতে স্নাতকোত্তর করেন। ব্রিটিশ সরকারের সহযোগিতায় একই বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণও নেন।

ভূতত্ত্বে উচ্চতর গবেষণার জন্য ড. মুকতাদিরের আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল। তিনি ও তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকায় ১২ নম্বর বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করলে তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে তিনতলায় ড. সৈয়দ নকীর বাসায় আশ্রয় নেন। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি।

পরদিন ভোরে চার–পাঁচজন পাকিস্তানি সেনার দল ওপরে উঠে এসে ড. মুকতাদিরকে বলে, ‘তুম জয় বাংলা বলতা, পাকিস্তান নেহি চাহতা।’ সন্তানসম্ভবা স্ত্রী স্বামীকে বাঁচাতে তিনবার পাকিস্তানিদের তাক করা বন্দুকের সামনে গিয়ে দাঁড়ান, হাত জোড় করে প্রাণভিক্ষা চান। তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে গুলির পর গুলিতে ড. মুকতাদিরের বুক, পেট ঝাঁজরা করে দেয় পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ড. মুকতাদিরের লাশ টেনে নিয়ে সূর্য সেন হলে রাখে। পরদিন মুকতাদিরের আত্মীয়রা বহু কষ্টে তাঁর লাশ সংগ্রহ করেন।

‘বাবা কী’ বা ‘বাবা কেমন হয়’—এ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই কন্যা ইলোরা মুকতাদিরের। মুক্তিযুদ্ধের পরেই ভূতত্ত্ব বিভাগে আবদুল মুকতাদিরের নামে একটি জাদুঘর করা হয়। ২০১৪ সালে ড. সৈয়দ হুমায়ূন আখতার ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে এসে জাদুঘরটি পুনঃসংস্কার করেন এবং সেখানে ড. মুকতাদিরের ছবিসহ দুটি প্রবেশপথে ‘শহীদ মুকতাদির ভূতাত্ত্বিক জাদুঘর’ নামে দুটি নামফলক যুক্ত করেন।