Thank you for trying Sticky AMP!!

'ভিআইপিদের ৮ নম্বর বাসে উঠিয়ে দিন'

যানজটের কারণে শুধু ঢাকায় দৈনিক ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। যার আর্থিক ক্ষতি বছরে প্রায় ৩৭ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে একটি পদ্মা সেতু তৈরি সম্ভব। যানজটের কারণে প্রায় সবারই নাজেহাল অবস্থা। যানজট কমাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, তাই জানতে চাওয়া হয়েছিল পাঠকের কাছে। প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে পাঠকেরা তাঁদের মতামত জানান।

যানজটে নিত্যদিনের ভোগান্তির কথা শেয়ার করেছেন অনেক পাঠক। এ কারণে কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভও জানিয়েছেন তাঁরা। এ ছাড়া যানজট কমানোর কিছু উপায়ও জানিয়েছেন।

নূর তাহসিন শিল্প কিছুটা মজা করে লিখেছেন, ‘মন্ত্রী, সচিব, ভিআইপিদের প্রাইভেট কার বাতিল করে ৮ নম্বর বাসে উঠিয়ে দিন। নিজেদের জন্য হলেও যানজট দূর করবে।’

আসাদ বিন খলিল লিখেছেন, ‘ঢাকা শহরের সব ট্রাফিক সিগন্যাল তুলে দিন। ধরুন ঢাকা শহরের ৪০০টি গুরুত্বপূর্ণ চার লেন ও তিন লেনের রাস্তা আছে। সেই চার লেন ও তিন লেনের মোড়ে সব ট্রাফিক সিগন্যাল তুলে দিয়ে আন্ডারপাস ও ওভারপাস বানিয়ে নন স্টপ গাড়ি চালানোর ব্যবস্থা করুন। কোনো গাড়িই কোনো চার লেন বা তিন লেনে থামবে না। পার হয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় যাত্রী নামবে। একবার ভাবুন তো যদি ঢাকাকে গোলাকার বৃত্ত ধরেন আর সেখানে যদি নন স্টপ গাড়ি চলতে থাকে, কোথাও কোনো ট্রাফিক সিগন্যাল না থাকে, তাহলে কি কোনো জ্যাম হবে? আরও এক কোটি গাড়ি যদি ঢাকায় ঢোকানো হয়, তবুও কিছুই হবে না।’

ফুয়াদ হাসানুল লিখেছেন, ‘প্রথমে সব ধরনের গাড়ির জন্য লেন নির্দিষ্ট করতে হবে। যেমন, চার লেনের রাস্তায় প্রথম লেন ভিআইপি, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের জন্য, দ্বিতীয় লেন প্রাইভেট গাড়ির, তৃতীয় লেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার আর চতুর্থ লেন পাবলিক গাড়ির জন্য হবে। তাহলে ৯৭ শতাংশ মানুষ আর জ্যামে থাকবে না। ফলে মানুষ কাজ করার অনেক সময় পাবে।’

আবদুর রহমানের মতে, ‘ডিসেন্ট্রালাইজেশনের বিকল্প নেই।’

আহম্মদ রেদোয়ানও সেই সুরে সুর মিলিয়ে বিভিন্ন কারখানা, অফিস–আদালত, আর সরকারি দপ্তর বিভিন্ন জেলায় স্থানান্তর করতে বলছেন। এতে রাজধানীর ওপর কিছুটা হলেও চাপ কমবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

মো. আবদুল মালেকেরও অনেকটা একই মত। লিখেছেন, ‘ঢাকা শহরকে বসবাসের উপযোগী গড়ে তুলতে হলে বিভাগীয় শহরে অর্থনৈতিক জোন এলাকা ঘোষণা করতে হবে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে সরকারি আঞ্চলিক কেন্দ্র গঠন করতে হবে। এতে ঢাকা শহরে প্রবেশের নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। ঢাকা শহর–নির্ভরতা কমাতে হলে বিভাগীয় শহরের গ্যাস–সংযোগ প্রদান করে সেখানে শিল্প–কারখানায় প্রতিষ্ঠিত গড়ে তুলতে হবে। এতে ঢাকা শহরের বাইরে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। বেকারত্ব কমবে। যানজট কমবে। আর একটি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে, ঢাকায় যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যক্তিগত গাড়ি। ঢাকায় গণপরিবহনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।’

জাহাঙ্গীর কবির দিয়েছেন সোজাসাপ্টা সমাধান। বলছেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, প্রয়োজনের অতিরিক্ত গাড়ি ব্যবহার না করা, ফুটপাত দখল থেকে বিরত থাকা, যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং না করা, ট্রাফিক আইন মেনে চলা, সর্বোপরি আমাদের বিবেকবোধ জাগ্রত করা প্রয়োজন। তাহলে যানজট থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে।’

শেখ কুদ্দুস কিছুটা আশাবাদ ব্যক্ত করে লিখেছেন, ‘এটা সত্য যে মেট্রোরেল চালু হলে হয়তো কিছুটা যানজট কমতে পারে। তা ছাড়া মিনিবাস তুলে দিয়ে রাস্তায় বড় বাসের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিআরটিসির বাসগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করলে সুফল আসতে পারে।’

নাজিমউদ্দিনের মতে, শুধু বাসচালকদের শৃঙ্খলার মধ্যে এনে যেখানে সেখানে পার্কিং ও যাত্রী ওঠানো–নামানো বন্ধ করে আর মহাসড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের মাধ্যমেই ৫০ ভাগ ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। পাশাপাশি তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসন এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণই ব্যর্থ এবং এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগও নেই!’