Thank you for trying Sticky AMP!!

'মা'-এর স্নেহই জয়ী হলো

রুমা আক্তারের কোলে শিশু আরাফাত। গতকাল বিকেলে নগরের রৌফাবাদের ছোটমনি নিবাসে। প্রথম আলো

দেড় বছর ধরে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ‘ছেলে’ আরাফাতকে বড় করে আসছিলেন রুমা আক্তার। হাসপাতালে ফেলে যাওয়া শিশুটিকে মায়ের স্নেহে কাছে টেনে নেওয়ায় কম ত্যাগ করতে হয়নি তাঁকে। মাঝে তো ছেলের সঙ্গে বিচ্ছেদের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রুমা আক্তার তা হতে দেবেন কেন! নানা দেনদরবারের পর জয়ী হয়েছে মায়ের স্নেহ। গতকাল বৃহস্পতিবার ছেলের সঙ্গেই তাঁর ঠাঁই হয়েছে নগরের রৌফাবাদের ছোটমনি নিবাসে।

ছেলের সঙ্গে থাকতে পারবেন এই আনন্দে আপ্লুত রুমা। আশ্রিত হিসেবে নয়, ওই নিবাসে বেসরকারি আয়া হিসেবে চাকরি পেয়েছেন তিনি।

রুমা আক্তার বলেন, ‘ছেলেটিকে আমি মানুষ করেছি। আমি তার মা। আমি তার সঙ্গে থাকতে পারব এর চেয়ে আনন্দের আর কিছুই নেই।’

২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেওয়া নবজাতকটি ফেলে যান তার স্বজনেরা। ১৫ দিন বয়সের নবজাতকটিকে বুকে তুলে নেন রুমা আক্তার। পাশের একটি শয্যাতেই তখন নিজের এক ভাগনিকে শুশ্রূষার জন্য কক্সবাজার থেকে এসেছিলেন তিনি। কয়েক দিন পর নিজের ভাগনি মারা গেলেও আরাফাতের টানে আর বাড়ি ফেরেননি রুমা।

জন্মগতভাবে আরাফাতের মাথা বড় ছিল। তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর আরাফাত সুস্থ হয় প্রায় আট মাস আগে। এরপর নিয়ম অনুযায়ী আরাফাতকে সরকারি শিশু আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর কথা। কিন্তু রুমার তীব্র আপত্তির মুখে দ্বিধায় পড়ে যায় হাসপাতাল ও সমাজসেবা কর্তৃপক্ষ। অবশেষে মা-ছেলেকে একসঙ্গে রাখার উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তা অভিজিৎ সাহা বলেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে আরাফাতের সঙ্গে রুমাকেও বেসরকারি আয়া হিসেবে ছোটমনি নিবাসে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বেতন দেবেন হাসপাতালের পরিচালক।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ‘রুমা ও আরাফাত যাতে একসঙ্গে থাকতে পারে সবাই মিলে সেই চেষ্টাই করেছি।’