Thank you for trying Sticky AMP!!

'মা, একখান সুইটার কিনে দিবো নি'

‘মা, খুব জার কচ্ছে। একখান সুইটার কিনে দিবো নি। দে না গে।’ গতকাল মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও শহরের বড় মাঠে শীতবস্ত্র কিনতে এসে এভাবেই মায়ের কাছে একটি সোয়েটারের জন্য আবদার করছিল মিষ্টি (৯)। জবাবে মা জমিলা বেগম বারবার বলছিলেন, ‘সুইটার কিনিবার টাকা কুনঠে পামো?’

জমিলা বলেন, তাঁদের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের বলদিয়া গ্রামে। স্বামী কৃষিশ্রমিক। নিজের জমিজিরাত নেই। গরম কাপড় না থাকায় ছেলেমেয়েরা ঠান্ডায় খুব কষ্ট পাচ্ছিল। কয়েক দিন আগে আগুন পোহাতে গিয়ে মিষ্টির শরীরের পেছনটা পুড়ে যায়। সদর হাসপাতালে মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। পথে পুরোনো কাপড়ের দোকান দেখে একটা সোয়েটারের আবদার করে বসে মিষ্টি। সেই আবদার মেটাতেই এখানে আসা। কিন্তু তাঁর গাঁটে যে টাকা আছে, তা দিয়ে সোয়েটার কেনা যাবে না।

জমিলার মতো যাঁদের টাকাপয়সার জোর কম, তাঁরা পুরোনো কাপড়ের দোকানে দোকানে ঘুরছিলেন। অনেকে দর-কষাকষি করেও কিনতে পারছিলেন না। সদর উপজেলার বড়গাঁও গ্রামের বাসিন্দা জয়ন্তী রানী (৪৯) বলেন, ‘খুবই ঠান্ডা পড়িছে। নতুন কাপড় কিনিবার টাকা নেই। পুরান কাপড় কিনিবা আইছু। এইঠে দাম খুব বেশি। ঠান্ডা দেখিয়া দোকানদারলা সুযোগ নেছে।’

পুরোনো গরম কাপড় বিক্রেতা মো. আসলাম বলেন, গত বছর সোয়েটার-জ্যাকেটের যে গাঁইট তিনি আট হাজার টাকায় কিনেছিলেন, এ বছর সেই গাঁইটের দাম বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার টাকা।

ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আগুন পোহাতে গিয়ে এবার দগ্ধ হয়েছেন অনেকেই। গত কয়েক দিনে সদর হাসপাতালে ২০ জন দগ্ধ রোগী চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছেন। তবে হাসপাতালে বার্ন ইউনিট না থাকায় অধিকাংশ রোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।