Thank you for trying Sticky AMP!!

দেশের উপাত্ত দেশে রাখা নিয়ে উদ্বেগ কেন

যেসব দেশের সরকার কর্তৃত্ববাদী, সেখানে উপাত্ত সংরক্ষণ করতে চায় না বহুজাতিক কোম্পানিগুলো।

এটি বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের সবচেয়ে ভালো মানের ডেটা সেন্টার। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে অবস্থিত

বার্তা সংস্থা রয়টার্স গত ২১ এপ্রিল এক প্রতিবেদনে জানায়, ভিয়েতনামের সরকার নতুন একটি আইন করতে যাচ্ছে, যেখানে ফেসবুক, ইউটিউবের মতো মাধ্যমগুলোকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ‘অবৈধ’ আধেয় বা কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে বাধ্য করা যাবে। রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড ঠেকাতে ভিয়েতনাম সরকার আইনটি করছে।

রয়টার্স গত ১৮ আগস্ট আরেক প্রতিবেদনে জানায়, ভিয়েতনাম সরকার নতুন একটি আদেশ জারি করেছে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলোকে ভিয়েতনামের নাগরিকদের কাছ থেকে সংগৃহীত উপাত্ত সে দেশেই সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভিয়েতনামে তাদের অফিসও খুলতে হবে। এ জন্য তারা সময় পাবে ১২ মাস।

ভিয়েতনাম ফেসবুকের জন্য শতকোটি ডলারের একটি বাজার। রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২০ সালে ভিয়েতনাম সরকার ফেসবুকের ‘ট্রাফিক’ বা ব্যবহারকারীদের জন্য গতি কমিয়ে দিয়েছিল। তখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ আধেয়র ক্ষেত্রে আরও নিয়ন্ত্রণ আনতে সম্মত হয়।

এর আগে ২০১৯ সালে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ ইসরায়েলের শিক্ষক ও লেখক ইয়ুভাল নোয়াহ হারারির সঙ্গে এক আলাপচারিতায় বলেছিলেন, যেসব দেশে উপাত্ত সংরক্ষণ করলে কর্তৃত্ববাদী সরকারগুলো তা ব্যবহারের সুযোগ চাইতে পারে, সেসব দেশে তিনি উপাত্ত সংরক্ষণের পক্ষে নন। কারণ, নাগরিকদের উপাত্ত ভিন্নমত দমনে ব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে।

উপাত্ত সংরক্ষণ নিয়ে বিতর্ক ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশেও। কারণ, সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি) ‘উপাত্ত সুরক্ষা আইন ২০২২’ করতে যাচ্ছে। আইনটির সর্বশেষ খসড়ায় সংবেদনশীল উপাত্ত, ব্যবহারকারীর সৃষ্ট উপাত্ত, শ্রেণিবদ্ধকৃত উপাত্ত শুধু বাংলাদেশ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে।

আইনটির খসড়া নিয়ে গত ১৭ জুলাই আইসিটি বিভাগ অংশীজনদের সঙ্গে একটি পরামর্শ সভা করে। এতে কেউ কেউ এই উদ্বেগ তুলে ধরেন। বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞ, আইনের শিক্ষক ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মোটাদাগে উদ্বেগের দুটি কারণ উল্লেখ করেছেন—১. যেসব দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী নয়, সেসব দেশে সংরক্ষণ করা উপাত্ত ব্যবহার করে ভিন্নমত দমন করা হতে পারে। ২. দেশেই উপাত্ত সংরক্ষণের কঠোর বাধ্যবাধকতায় ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং ব্যয় বাড়তে পারে।

ডিজিটাল জগতের ক্ষেত্রে মানুষের অধিকার ও এ–সংক্রান্ত বিধিবিধান নিয়ে কাজ করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যে ডেটা সেন্টারে উপাত্ত রাখা হবে, তার নিয়ন্ত্রণ কার হাতে থাকবে? ডেটা সেন্টারে রাখা উপাত্ততে কি কর্তৃপক্ষের প্রবেশাধিকার থাকবে? যদি প্রবেশাধিকার থাকে, তাহলে কিন্তু বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি বাংলাদেশে সেবা দিতে চাইতে না–ও পারে। কারণ, তখন তাদের গ্রাহকদের উপাত্তের ‘এনক্রিপশন’ (গোপনীয়তা) ভাঙতে হবে।

উপাত্ত কেন গুরুত্বপূর্ণ

মার্কিন সাময়িকী ইকোনমিস্ট ২০১৭ সালের মে মাসের সংখ্যায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যার শিরোনাম ছিল ‘বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ এখন আর জ্বালানি তেল নয়, উপাত্ত’। মানুষের ব্যক্তিগত উপাত্ত অনেককে বিরাট ব্যবসার সুযোগ করে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থার (আঙ্কটাড) তথ্যমতে, বিশ্বের ১৯৪টি দেশের মধ্যে ৭১ শতাংশের উপাত্ত সুরক্ষাসংক্রান্ত বিধিবিধান রয়েছে। যেসব দেশে আইন নেই, তার মধ্যে একটি বাংলাদেশ।

অংশীজনদের সঙ্গে গত জুলাইয়ের সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, সরকার আইনের খসড়ায় অংশীজনদের মতামত নিয়ে চলতি বছরের শেষ নাগাদ জাতীয় সংসদে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

দেখা যাক, সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মানুষের কী কী তথ্য সংগ্রহ করে। সাধারণভাবে নাম, ঠিকানা অনেকেই সংগ্রহ করে। কেউ কেউ ব্যক্তির জন্মতারিখ, বায়োমেট্রিক তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ফোন নম্বরও নেয়। রোগীর উপাত্ত সংগ্রহ করে হাসপাতাল। বিভিন্ন অ্যাপ মানুষের মুঠোফোনে থাকা সব উপাত্তই ব্যবহারের অনুমতি চায়। মানুষ এখন কোথায় যায়, কী খায়, কী কথা বলে, তা সবই ডিজিটাল জগৎ পর্যবেক্ষণ করে।

উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, সরকার কোনো উপাত্তকে শ্রেণিবদ্ধ বলে ঘোষণা দিলে তা অনুমোদন ছাড়া অন্য কোনো স্থানে স্থানান্তর করা যাবে না। অন্য উপাত্ত দেশের বাইরে স্থানান্তর করতে হলে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে উপাত্ত সুরক্ষা এজেন্সির মহাপরিচালককে অবহিত করতে হবে।

প্রস্তাবিত আইনটিতে আরও বলা আছে, উপাত্তধারীর প্রয়োজনে তার কোনো অনুমতি নিয়ে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তদেশীয় ব্যবসা–বাণিজ্য, বহির্গমনে বিধি ধারা দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে বাংলাদেশের বাইরে উপাত্ত স্থানান্তর করা যাবে।

ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ

ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, ব্যবসায় প্রভাব পড়বে, এমন কোনো বিধান যেন না করা হয়। বাংলাদেশে উপাত্ত সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, সক্ষমতা, দক্ষ জনবল, নিরাপত্তা আছে কি না, সে প্রশ্নও তুলেছে তারা।

রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) গত জুলাই মাসে এক দেশ থেকে অন্য দেশে উপাত্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, তার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে তারা বলেছে, উপাত্তপ্রবাহে বিধিনিষেধ এলে বাংলাদেশের ডিজিটাল সেবা রপ্তানি ২৯ থেকে ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

র‌্যাপিডের চেয়ারপারসন আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, উপাত্ত দেশে সংরক্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ যদি ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো কঠোর নীতিতে যায় তাহলে ডিজিটাল সেবা রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। ভারত চাইলে কঠোর নীতিমালা করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে তথ্যপ্রযুক্তিতে সক্ষমতা ও দক্ষ জনবল বেশি। তিনি বলেন, ডেটা সেন্টার, ক্লাউড সেবাসহ উপাত্ত সংরক্ষণ এবং নিজ দেশের উপাত্ত সুরক্ষিত করার মতো অবকাঠামোর উন্নয়ন না ঘটিয়ে কঠোর কোনো নীতি নেওয়া ঠিক হবে না।

ভারতেও উপাত্ত সুরক্ষা আইনে সে দেশেই উপাত্ত সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশটির ব্যবসায়ী ও স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো সমালোচনা করছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস–এর এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট ভারত এই বিলটি তুলে নেয়। এটি পুনর্মূল্যায়ন করে সংসদে পরে তোলা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।

বাংলাদেশে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ছাড়াও গুগল, টিকটকসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর যেমন ব্যবসা আছে, তেমনি আছে বহুজাতিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, শরিকি যাত্রা বা রাইড শেয়ারিং, ই–কমার্স কোম্পানিসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যারা নানা প্রয়োজনে গ্রাহকদের কাছ থেকে নানাভাবে তথ্য নেয়।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ই–কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ বাংলাদেশের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এ এইচ এম হাসিনুল কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। ব্যবসায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়তে পারে, এমন কিছু করা ঠিক হবে না।

দেশের উপাত্ত সংরক্ষণ সক্ষমতা কতটুকু

বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্স গত বছর ডেটা সেন্টার নিয়ে একটি প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে সরকারিভাবে তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের (থার্ড ও ফোর্থ টিয়ার) ডেটা সেন্টার রয়েছে, যেখানে সরকারের উপাত্ত সংরক্ষিত থাকে। এ ছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যারা ডেটা সেন্টার সেবা দিচ্ছে। যদিও তাদের বেশির ভাগই তৃতীয় স্তরের মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। বাণিজ্যিক পর্যায়ে ও বড় বড় প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় স্তর মানের ডেটা সেন্টার আছে। ডেটা সেন্টার ছাড়াও শুধু ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারী কিছু প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশে আছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ডেটা সেন্টার কোম্পানি লিমিটেডের (বিডিসিসিএল) চতুর্থ স্তরের (সবচেয়ে ভালো মানের) ডেটা সেন্টার আছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে এ ডেটা সেন্টারের যাত্রা শুরু হয়। কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ প্রথম আলোকে জানায়, প্রায় ২৯টি সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের থেকে সেবা নেয়। প্রতি মাসে এ ডেটা সেন্টারের আয় ৭ কোটি ২১ লাখ টাকা।

উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়ে গত ১০ আগস্ট সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, বাংলাদেশে ক্লাউড বা ডেটা সেন্টার অবকাঠামো ও সক্ষমতা তৈরিতে যদি দুই বছর বা তিন বছর সময় লাগে, সেটা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, আইন করা হচ্ছে এ জন্য যে আইন হওয়ার পরে উপাত্তগুলো যেন দেশের বাইরে না রাখে বা সম্মতি ছাড়া রাখতে না পারে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এবং খুব সংবেদনশীল উপাত্ত দেশেই সংরক্ষণ করা উচিত। কিন্তু সব উপাত্তই দেশে সংরক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত না।

তথ্যপ্রযুক্তিবিশেষজ্ঞ সুমন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে এখনো ক্লাউডসেবা তেমনভাবে বিস্তৃত হয়নি। অল্প কিছু প্রতিষ্ঠান আছে, যারা এ সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু বড় প্রতিষ্ঠান দেশের বাইরের ক্লাউডেই তথ্য রাখতে ভরসা পায়। এখানে সক্ষমতা ও দক্ষতার বিষয় আছে। তিনি বলেন, গুগল বা আমাজনের মতো ক্লাউড সেবাদাতারা কোনো দেশে ক্লাউডসেবা অবকাঠামো স্থাপন করার ক্ষেত্রে কিছু মানদণ্ড বিবেচনায় নেয়। বাংলাদেশে সেই মানদণ্ডে পড়লেই কেবল তারা এখানে ব্যবসা করতে আসবে।

সুমন আহমেদ আরও বলেন, দেশে ব্যবসাসহায়ক নীতি আছে কি না, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিষয়ে একটি প্রবিধান হতে যাচ্ছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই বাংলাদেশে ব্যবসা করার কথা ভাববে।

ফ্রিল্যান্সিং ও কল সেন্টার ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, উপাত্তের অবাধ আদান–প্রদান থাকতে হবে, নয়তো ব্যবসা করা কঠিন হবে। দেশে এখনো ক্লাউড বা ডেটা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা ততটা উন্নত হয়নি। তথ্য চুরির আশঙ্কা থাকতে পারে। অ্যামাজন বা গুগলের ক্লাউডের যে ধারণক্ষমতা ও শক্তিশালী ব্যবস্থা, বাংলাদেশের সে সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। এ ছাড়া এখানে আস্থার বিষয়ও রয়েছে।

কল সেন্টার ব্যবসায়ীদের সমিতি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সরকার কোন ডেটাকে উন্মুক্ত ঘোষণা করে, সেটা দেখতে হবে। দেশের ডেটা সেন্টার ও ক্লাউডসেবা নিতে পারলে খরচের দিক থেকে সাশ্রয়ী হবে। কিন্তু দেশে সেই অবকাঠামো ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকা দরকার।

বাক্‌স্বাধীনতা সুরক্ষা নিয়েই শঙ্কা

সরকারের আইসিটি বিভাগ যেমন উপাত্ত সুরক্ষা আইনে উপাত্ত সংরক্ষণ দেশে করার বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে যাচ্ছে, তেমনি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জন্য একটি প্রবিধান করতে যাচ্ছে, যেখানে নানা বিধিনিষেধের কথা
বলা হয়।

এই প্রবিধান নিয়ে গত মার্চে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানি ও মানবাধিকার সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম গ্লোবাল নেটওয়ার্ক ইনিশিয়েটিভ (জিএনআই) বিটিআরসির একটি চিঠি দেয়। এতে প্রবিধানটির কিছু বিষয়কে বাক্‌স্বাধীনতার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করা হয়। পরে বিটিআরসি প্রবিধানটির কিছু বিষয় সংশোধন করে নতুন খসড়া করে। এতে নির্দেশ দেওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য সরবরাহ ও নোটিশ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ‘নিষিদ্ধ’ আধেয় সরানোর বাধ্যবাধকতার কথা বলা হয়। পাশাপাশি ‘নিষিদ্ধ’ আধেয়র উৎসকে শনাক্ত করতে দিতে হবে।

এদিকে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, উপাত্ত সুরক্ষা আইনের অধীনে একটি উপাত্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ গঠিত হবে। সরকার রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলাসহ নানা প্রয়োজনে সময়ে সময়ে উপাত্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালককে যেকোনো নির্দেশ প্রদান করতে পারবে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক সাইমুম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, এতে হস্তক্ষেপের সুযোগও তৈরি হয়। উপাত্ত সুরক্ষা কর্তৃপক্ষকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ হতে হবে। এর জবাবদিহির কাঠামোও থাকা উচিত।