Thank you for trying Sticky AMP!!

কারু তিতাসের চিত্রকলায় প্রকৃতি ও জীবনের গল্প

শিল্পী কারু তিতাসের একক চিত্রকলা প্রদর্শনী ‘মৃত্তিকা মোহে’র উদ্বোধনের পর শিল্পকর্ম দেখছেন অতিথিরা। গতকাল শনিবার রাজধানীর লালমাটিয়ার শিল্পাঙ্গন গ্যালারিতে

দেশের সজল সবুজ প্রকৃতি ও তার সংলগ্ন প্রান্তিক মানুষের গল্প চিত্রকর্মে তুলে এনেছেন শিল্পী কারু তিতাস। এসব চিত্রকর্ম নিয়ে এই শিল্পীর পঞ্চম একক চিত্রকলা প্রদর্শনী শুরু হয়েছে লালমাটিয়ার ডি ব্লকের ২/৮ বাড়ির শিল্পাঙ্গনে।

বিশিষ্ট শিল্প সমালোচক ও স্থপতি সামসুল ওয়ারেস গতকাল শনিবার ‘মৃত্তিকা মোহে’ নামে তার এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। সেখানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ।

প্রদর্শনীতে কারু তিতাসের অনেক মাধ্যমে কাজ রয়েছে। অ্যাক্রিলিক, জলরং, মিশ্র মাধ্যম তো আছেই। আরও আছে বড় আকারের চারকোলের ড্রয়িং। চীনা কালি আর প্যাস্টেলেরও কাজ আছে কয়েকটি। সব মিলিয়ে শিল্পকর্ম ৪৯টি। প্রদর্শনী চলবে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

কারু তিতাসের চারুকলার শিক্ষা রাজশাহী ও ঢাকা মিলিয়ে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে ১৯৯০ সালে অঙ্কন ও চিত্রণ বিভাগে স্নাতক এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট (বর্তমানে অনুষদ) থেকে স্নাতকোত্তর করেন। এর পর থেকে স্বাধীনভাবেই চিত্রকলার চর্চা করে চলেছেন তিনি।

কারু তিতাস প্রকৃতি ও জীবনের আখ্যান তুলে এনেছেন শিল্পের নান্দনিক সুষমায়। তাঁর রঙের প্রয়োগ মনোরম, যেমন মনোমুগ্ধকর আমাদের প্রকৃতি। এক সবুজের কত ভিন্নতা। গাছের পুরোনো পাতার আর নবীন কিশলয়ের সবুজে কত তফাত! রঙের খেলায় তিতাসের সিদ্ধহস্তের প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর ছবির দিকে তাকালেই।

বান্দরবানের পাহাড়, দেশের উত্তর প্রান্তে বয়ে যাওয়া মহানন্দার স্বচ্ছ বুকে আকাশের নীল ছবি, তামাবিলে পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে আসা দিন শেষের আলো যেমন তিনি এঁকেছেন, তেমনি ‘কোন্ ভাঙনের পথে এলে’ কবিগুরুর চরণ শিরোনাম করে চারকোলে এঁকেছেন নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া মানুষের কথা। হয়তো কাজের সন্ধানে বের হয়েছেন, এঁকেছেন এমন প্রান্তিক মানুষের সারি। তাঁর চিত্রকর্মে অনেক রকম আঙিক ও পরিপ্রেক্ষিতে এসেছে নদী ও নৌকা।

শিল্পী কারু তিতাসের আরও একটি প্রিয় বিষয় পুরোনো দরদালান। এর মধ্যে আছে পুরোনো রেলস্টেশন, পলেস্তারা খসে পড়া পাকাবাড়ি। ঔপনিবেশিক আমলের লালচে রঙের ইমারত প্রভৃতি। এককালে কত মানুষের বসবাস, কত আনন্দ-বিষাদের স্মৃতি মিশে আছে এসব ঘরবাড়িতে। হয়তো সেখানে এখন কেউ থাকে না অথবা কেউ থাকে। তিতাসের ছবিতে বাড়ির পটভূমিতে মানব অবয়বের আভাস আছে। তাদের গল্পগুলো শিল্পী যেমন নিজের কল্পনায় অনুভব করেছেন, তেমনি দর্শকদের সুযোগ করে দিয়েছেন নিজের মতো করে ভাবার।