Thank you for trying Sticky AMP!!

উন্মুক্ত স্থান ঘোষণা ও গেজেট প্রকাশ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ৩৭ বিশিষ্ট নাগরিকের চিঠি

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠ

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠকে উন্মুক্ত স্থান ঘোষণা ও গেজেট প্রজ্ঞাপন প্রকাশের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন ৩৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। সোমবার বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

৩৭ বিশিষ্ট ব্যক্তি মনে করেন, কলাবাগান থানার জন্য অন্যত্র জমি কেনা হবে। তাই মাঠটি পুলিশ প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে না রেখে এর ব্যবস্থাপনা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে দেওয়া যেতে পারে। মাঠের সৌন্দর্যবর্ধনে ও এটিকে ব্যবহারবান্ধব করতে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট বিনা খরচে নকশা প্রস্তুত করে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তেঁতুলতলা মাঠে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এলাকার শিশুরা খেলাধুলা করে আসছে। এলাকার বাসিন্দারা ঈদের নামাজ আদায়, বিভিন্ন সামাজিক–সাংস্কৃতিক উৎসবের কেন্দ্রস্থল হিসেবে মাঠটি ব্যবহার করে আসছে। এ ছাড়া মৃতদেহ গোসল করানোর কাজেও এলাকাবাসী মাঠটি ব্যবহার করে থাকে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, তেঁতুলতলা মাঠ একটি অর্পিত সম্পত্তি। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মালিকানাধীন ছিল মাঠটি। তবে ঢাকা জেলা প্রশাসন কলাবাগান থানা নির্মাণের জন্য টাকার বিনিময়ে মাঠটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে তেঁতুলতলা মাঠে কলাবাগান থানা নির্মাণ করা হবে বলে একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে পুলিশ। কলাবাগান থানা কর্তৃপক্ষ এই মাঠে দেয়াল তৈরির কাজ শুরু করলে জন অসন্তোষের সৃষ্টি হয়।

Also Read: প্রতিবাদ করলেই গ্রেপ্তার কেন: প্রশ্ন ১৯ নাগরিকের

গত ২৫ এপ্রিল মাঠটি রক্ষার দাবিতে আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তাঁর কিশোর ছেলেকে পুলিশ ধরে নিয়ে ১৩ ঘণ্টা কলাবাগান থানায় আটকে রাখে। প্রতিবাদের মুখে মধ্যরাতে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলনের গতি আরও বাড়ে। এমন অবস্থায় তেঁতুলতলা মাঠে আর কোনো নির্মাণকাজ হবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে এই সিদ্ধান্ত হয় বলে তখন জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।

Also Read: ‘অল্প বয়সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার শিকার হলাম’

বেলার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালে তৎকালীন ঢাকা মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ থেকে এ জায়গাটি মাঠ হিসেবে সংরক্ষণের প্রস্তাব দেয়। পরে স্থাপত্য অধিদপ্তর, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে জায়গাটি মাঠ হিসেবে সংরক্ষণের অনুরোধ জানায়। এর ধারাবাহিকতায় রাজউক প্রস্তাবিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় বিদ্যমান ব্যবহারের প্রতিফলন ঘটিয়ে কলাবাগানের এ জায়গাটিকে প্রকাশিত গেজেটে উন্মুক্ত স্থান হিসেবে দেখানো হয়।

Also Read: মধ্যরাতে মা–ছেলেকে ছাড়ল পুলিশ

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বাপার সভাপতি সুলতানা কামাল, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, সেন্ট্রাল উইমেন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পারভীন হাসান, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, নিজেরা করির সমন্বয়কারী খুশী কবির, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মালেকা বানু, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, গবেষক মেঘনা গুহঠাকুরতা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক, ব্লাস্টের অনারারি ডিরেক্টর সারা হোসেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফেরদৌস আজিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, কোস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী শারমীন মুরশিদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল, বাপার সহসভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, বাপার যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব, গ্রিন ভয়েসের সমন্বয়ক আলমগীর কবির, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি জামশেদ আনোয়ার তপন, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহসাধারণ সম্পাদক সংগীতা ইমাম, বহ্নিশিখার প্রতিষ্ঠাতা তাসাফি হোসেন, সংগীতশিল্পী ও লেখক অরূপ রাহী, উন্নয়ন কর্মী নবনীতা চৌধুরী, আলোকচিত্রী মাহমুদ রহমান, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, গ্রিন সেইভার্সের প্রতিষ্ঠাতা আহসান রনি।

Also Read: তেঁতুলতলা মাঠে থানা হবে না, খেলার মাঠই থাকছে

Also Read: সৈয়দা রত্না ও তাঁর সন্তানকে আটক ধৃষ্টতা নয়, দুর্বৃত্তায়ন