Thank you for trying Sticky AMP!!

কামাল লোহানী গুরুতর অসুস্থ

কামাল লোহানী। ছবি: আবদুস সালাম

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ফুসফুস ও কিডনির জটিলতা ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্‌রোগ ও ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন ৮৬ বছর বয়সী এই প্রবীণ সাংবাদিক।

গত ১৭ মে থেকে রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি আছেন তিনি। হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. লেলিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, একদল চিকিৎসক সম্মিলিতভাবে তাঁকে চিকিৎসা দিচ্ছেন, যাঁরা বিভিন্ন রোগের বিশেষজ্ঞ। গত কিছুদিনের চিকিৎসায় কিছুটা স্থিতিশীল হলেও তিনি ঝুঁকিমুক্ত নন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেনিন জানান, ওনার ফুসফুসে পানি জমেছে, কিডনির একটি অংশ অকার্যকর। অন্যান্য সমস্যা তো আছেই।

তাঁর ছেলে সাগর লোহানী প্রথম আলোকে জানান, ‘ওনার অবস্থার খুব উন্নতি হয়েছে বলা যাবে না। তবে হাসপাতালের চিকিৎসক, সেবাকর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা পূর্ণ আস্থাশীল।’ হাসপাতালে দর্শনার্থীদের না যাওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।

কামাল লোহানীর প্রকৃত নাম আবু নাইম মো. মোস্তফা কামাল খান লোহানী। সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায় ১৯৩৪ সালে জন্ম। জীবনভর ছায়ানট, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মতো প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সাংবাদিকতা করেছেন, আজীবন কমিউনিস্ট ভাবাদর্শে অবিচল আছেন কামাল লোহানী। তিনি বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ছিলেন।

১৯৭১ সালে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কামাল লোহানী একজন শিল্পী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। এর আগে ১৯৫৩ সালে নুরুল আমিনসহ মুসলিম লীগ নেতাদের পাবনা আগমনের প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলায় পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে কামাল লোহানী ও তাঁর অন্য সহযোদ্ধারা গ্রেপ্তার হন। তাঁর বয়স তখন ১৯ বছর। মুক্ত হতে না হতেই আবার ১৯৫৪ সালে গ্রেপ্তার হন। ১৯৫৫ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ প্রমুখের সঙ্গে একই জেল কক্ষে বন্দিজীবন কাটান। তখন তিনি বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে আসেন।

১৯৬২ সালে কামাল লোহানী ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন । পরে ১৯৬৭ সালে গড়ে তোলেন সাংস্কৃতিক সংগঠন 'ক্রান্তি' । ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর হয়ে তখন গান গেয়েছেন আলতাফ মাহমুদ, শেখ লুৎফর রহমান, সুখেন্দু দাশ, আবদুল লতিফসহ প্রথিতযশা শিল্পীরা।

দৈনিক মিল্লাত দিয়ে সাংবাদিকতার শুরু, এরপর আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন তিনি।