Thank you for trying Sticky AMP!!

ক্ষতি ১১০০ কোটি টাকা

এক বছর পর একটি উড়োজাহাজের ইঞ্জিন বিকল হয়। এরপর আরও দুটি ইঞ্জিন আনা হয়।

মিসর থেকে দুটি বোয়িং উড়োজাহাজ ভাড়া করেছিল বাংলাদেশ বিমান। পাঁচ বছরে এই দুটি উড়োজাহাজের কারণে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বিমানের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের মার্চ ও মে মাসে মিসরের ইজিপ্ট এয়ার থেকে পাঁচ বছরের চুক্তিতে দুটি উড়োজাহাজ (বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর) ভাড়ায় আনে বাংলাদেশ বিমান। এক বছর পর প্রথম উড়োজাহাজটির একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে আরেকটি ইঞ্জিন ভাড়ায় আনা হয়। দেড় বছরের মাথায় সেটিও নষ্ট হয়ে যায়। ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। সেটিও নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু প্রতি মাসে ইঞ্জিনের ভাড়া দিতে হয়েছে।

এর আগে দশম সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি ওই দুটি উড়োজাহাজ ভাড়ায় আনার অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করেছিল। সে সময় তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কোনো খোঁজখবর না করেই মিসর থেকে দুটি বোয়িং উড়োজাহাজ ভাড়া করায় সাড়ে তিন বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩০৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। উড়োজাহাজ ভাড়ার চুক্তিকে ‘আত্মঘাতী’ উল্লেখ করে উড়োজাহাজ দুটি দ্রুত ইজিপ্ট এয়ারকে ফেরত দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, বিমান কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে নতুন উড়োজাহাজ কেনার চেয়ে ভাড়ায় আনতে উৎসাহী। এ ধরনের পদক্ষেপ থেকে সরে না আসা পর্যন্ত বিমানকে রক্ষা করা যাবে না।

সংসদীয় কমিটির কার্যপত্রে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বরে কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, ওই দুটি উড়োজাহাজে প্রতি মাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। দায়দেনা পরিশোধ করে লিজ বাতিলের মধ্য দিয়ে গত মার্চ মাস থেকে উড়োজাহাজ দুটি থেকে বিমান মুক্ত হতে পেরেছে। উড়োজাহাজ দুটি ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এই বিমান দুটি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। আর ওই দুটি বিমানের পেছনে খরচ হয়েছিল ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ফলে পাঁচ বছরে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মুহিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, সব মিলে ওই দুটি উড়োজাহাজের পেছনে বিমানের প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়েছিল। সংসদীয় কমিটি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে। এখনো মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন পায়নি।

এর আগে সংসদীয় কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, উড়োজাহাজ দুটি ভাড়া নেওয়ার সময় ইঞ্জিনের সক্ষমতা যাচাইয়ে ব্যর্থতা ছিল। এই উড়োজাহাজ ভাড়া নেওয়া ছিল বিমানের স্বার্থের পরিপন্থী। কারিগরি কমিটি উড়োজাহাজ দুটি সম্পর্কে কোনো খোঁজখবর নিয়েছে বলে তদন্তে প্রতীয়মান হয়নি।