Thank you for trying Sticky AMP!!

জামদানির গালভরা নাম

মেলায় শাড়ি পরখ করছেন এক ক্রেতা। ছবি: আবদুস সালাম

বাঙালি নারীর পছন্দের পোশাক জামদানি শাড়ি। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির যৌথ উদ্যোগে একাডেমির চিত্রশালা প্রাঙ্গণে চলছে এই মেলা। চলবে ২৫ মে পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থী ও ক্রেতাসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা।

মেলায় ২৫ টি স্টলে জামদানি কারুশিল্পীরা তাঁদের শাড়ির পসরা নিয়ে বসেছেন। শাড়িগুলোর নামও বাহারি। কোনোটার নাম তেরছা। কোনোটা জলপাড়। আরও আছে পান্নাহাজার, করোলা, দুবলাজাল, সাবুরগা, বলিহার, শাপলা ফুল, আঙ্গুরলতা, ময়ূরপ্যাচপাড়, বাঘনলি, কলমিলতা, চন্দ্রপাড় ও ঝুমকা।

মেলায় এবার ২৫টি স্টল রয়েছে। একটিতে দেখা মিলল দুই লাখ টাকা দামের শাড়ির। এর বিক্রেতা রূপগঞ্জের মো. সেলিম বলেন, তিনি নিজ হাতে এ শাড়ি তৈরি করেছেন। সঙ্গে একজন সহকারী ছিলেন। দুজন মিলে প্রতিদিন গড়ে ১৪ ঘণ্টা ধরে কাজ করে সাত মাসে শাড়িটি তৈরি করেছেন।

শাড়িটির নকশা, সুতা সবকিছুই অন্য শাড়ি থেকে আলাদা। তিনি বলেন, ‘মেলায় আমি যেসব শাড়ি নিয়ে এসেছি এর মধ্যে সবচেয়ে কম দাম ছয় হাজার টাকা। আর সবচেয়ে বেশি দামি এই দুই লাখ টাকার শাড়িটি। এ ছাড়া ১ লাখ ৮০ হাজার, ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের শাড়িও আছে। মাঝারি দামের শাড়ির দাম পড়বে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা।’

বিক্রেতা মো. রমজান আলী ৩ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা দামের জামদানি শাড়ি নিয়ে এসেছেন মেলায়। তিনি আশা করেন, বিক্রি হবে। তবে এক যুগ আগেও যেভাবে শাড়ি বিক্রি হতো, এখন আর হয় না। এ কারণে রূপগঞ্জের অনেক ব্যবসায়ীই জামদানি শাড়ি বানানো বন্ধ করে দিয়েছেন।

মম জামদানি হাউজের মালিক আবুল কালাম আজাদ জানান, তিনি নিজেই তাঁর প্রতিষ্ঠানে মম জামদানি শাড়ি উৎপাদন করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৪০ জন কর্মচারী আছেন। তাঁর জামদানি শাড়ি নানা ধরনের রয়েছে। এর মধ্যে করলাফুল নামে জামদানি শাড়িটি ৭ দিনে তৈরি করা হয়। জুঁইলতা শাড়ি তৈরি করতে ১৫ দিন সময় লাগে। কলমিলতা শাড়ি তৈরিতে সময় লাগে এক মাস। বড় গোলাপ ও বনগাছ জামদানি শাড়ি তৈরিতে ৪ মাস সময় লেগে যায়। চিংড়ি নকশা জামদানি শাড়ি তৈরি করতে ৬ থেকে ৮ মাস সময় লাগে।

আনিসা জামদানি হাউজের মালিক মো. সোহেল বলেন, তাঁরা নিজেরাই জামদানি শাড়ি তৈরি করেন। সন্দেশ ফুল শাড়িটি তৈরি করতে ৭ দিন সময় লাগে। জাল/তেসরি নকশার শাড়ি তৈরি করতে লাগে ১ মাস। ঘুড়ি ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করতে ৮ মাস লাগে।

আধুনিক শাড়ি দোকানের মালিক পূর্ণিকা সরকার জানান, এখানে থ্রিপিছ ও পাঞ্জাবি সবই পাওয়া যায়। তিনি বলেন, বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে গিয়ে এই শিল্পে নিয়োজিত আছেন তাঁরা।


নাজিয়া হোসেন: প্রথম আলোর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী সাংবাদিক