Thank you for trying Sticky AMP!!

ডাকসুর ভিপি লাঞ্ছিত, ডিম নিক্ষেপ

নুরুল হক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল সংসদ নির্বাচনে জিএস পদে ছাত্রলীগ থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন ফরিদ হাসান। অভিযোগ ওঠে, বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে তাঁকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়। সেই ঘটনার সূত্র ধরেই গতকাল সোমবার রাতে এসএম হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার ও হল শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ফরিদকে মারধরের অভিযোগ ওঠে৷

এর বিচার চেয়ে আজ মঙ্গলবার এসএম হলের প্রাধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক, সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, শামসুন নাহার হল সংসদের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ, ডাকসুতে স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান ও ছাত্র ফেডারেশন থেকে ডাকসুর জিএস প্রার্থী উম্মে হাবিবাসহ বেশ কয়েকজন৷ তাঁদের মধ্যে উম্মে হাবিবা আঘাত পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন৷

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা বলেন, ফরিদের ওপর হামলার বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার প্রক্টর কার্যালয়ে যান নুরুল হকসহ অন্যরা৷ প্রক্টর কার্যালয় থেকে তাঁদের এসএম হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিতে বলা হয়৷ হলের ভেতর ঢুকলে নুরুল ও আখতারের সঙ্গে থাকা অন্যদের ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে তাঁদের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে অবরুদ্ধ করে ফেলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা৷ এ সময় ওই কক্ষে ঢুকতে চাইলে সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছিত করা হয়৷ হল প্রাধ্যক্ষ মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার ভিপিসহ অন্যদের নিরাপদে বের করার চেষ্টা করেন, তিনিও তাঁদের সঙ্গে বের হন। এ সময় ডিম নিক্ষেপ করেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা৷ ছাত্রনেতারা ছাড়াও এ সময় প্রাধ্যক্ষের গায়ে ডিম লাগে৷ হলের মূল ফটকের বাইরে থাকা অরণি সেমন্তি খান, উম্মে হাবিবা, শেখ তাসনিম আফরোজসহ অন্যদেরও লাঞ্ছিত করা হয়৷

এ ঘটনার প্রতিবাদে এসএম হলের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে এসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা৷ রাত ১০টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নুরুল, আখতারসহ ৩৫-৪০ জন আন্দোলনকারী সেখানে অবস্থান করছিলেন৷

ডাকসুর ভিপি নুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে তুষ্ট রেখে কাজ করছে৷ এসএম হলে আমাদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, ছাত্রীদের লাঞ্ছিত করেছে, তাদের বিচার করতে হবে৷’ অরণি সেমন্তি খান বলেন, ‘আমরা যখন হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে হল থেকে বের হচ্ছিলাম, তখন পেছন থেকে আমাকে লাথি ও ঘুষি মারা হয়, এর বিচার চাই৷ ’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, এটি এসএম হলের অভ্যন্তরীণ একটি ঘটনা৷ হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হবে৷

এদিকে মারধরের শিকার হওয়া ফরিদ হাসানের কপালের ডান পাশ ও ডান কানে মোট ৩২টি সেলাই পড়েছে৷ বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি রয়েছেন৷ তাঁকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে হল সংসদের জিএস জুলিয়াস সিজার বলেন, ফরিদের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ থাকায় হল ছাড়তে বলা হয়েছে৷ উত্তেজিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাঁকে মারধর করে থাকলে সেটির দায় ছাত্রলীগের নয়৷

তবে এসএম হলের একাধিক শিক্ষার্থী জানান, মূলত ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ার কারণেই ফরিদের ওপর ক্ষোভ৷ যদিও হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফরিদের জনপ্রিয়তা রয়েছে৷