Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকার অধিকাংশ বিপণিবিতান বন্ধ

ফাইল ছবি

ঈদের বেচাকেনার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনেক বিপণিবিতন ও দোকানপাট খুলেছে। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে অধিকাংশ নগরবাসীই এখনো ঘরেই অবস্থান করছেন। সে কারণে দোকানপাটে ক্রেতার সংখ্যা খুব অল্প। তবে ধানমন্ডি এলাকা ঘুরে দেখে গেল হাতে গোনা দু–একটি ছাড়া সব বড় বিপণিবিতান বন্ধ।

সাতমসজিদ সড়ক এবং মিরপুর সড়কে যথেষ্ট যানবাহন চলাচল করলেও ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ভেতরের সড়কগুলো বেশ নিরিবিলি।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়ক দিয়ে জিগাতলা মোড় হয়ে সাতমসজিদ সড়ক দিয়ে ২৭ নম্বর সড়ক পর্যন্ত পথের দুই পাশে ওষুধদের দোকান, মুদিখানা—এসব দোকান খোলা দেখা গেলেও আলমাস সুপারশপ ও আনাম র‍্যাংগ্‌স প্লাজা ছাড়া আর কোনো বড় বিপণিবিতান খোলা দেখা যায়নি।

আলমাস সুপারশপের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান জানালেন, গত ২৩ এপ্রিল থেকে তাঁরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলেছেন। তবে ক্রেতার সংখ্যা নগণ্য। এখানে বাচ্চার পোশাক কিনতে এসেছিলেন জিগাতলা এলাকার গৃহবধূ বেবী ইসলাম। তিনি জানালেন, নিজেদের জন্য এবার ঈদে কিছু কেনাকাটা করছেন না। কেবল বাচ্চার জন্য দু–একটি জামা কিনতে চান, সে জন্য এই দিনই এবার প্রথম কেনাকাটা করতে বের হয়েছেন। এখানে পোশাক–আসাকের পাশাপাশি গৃহসামগ্রী ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্যও পাওয়া যায়। বিক্রয় প্রতিনিধিরা জানালেন, এসব রোজকার দরকারি জিনিস কিনতেই মূলত আশপাশের লোকজন এখানে আসছেন।

আনাম র‍্যাংগ্‌স প্লাজায় গিয়ে দেখা গেল, অধিকাংশ দোকানে ক্রেতা নেই। মেয়েদের তৈরি পোশাকের দোকান নুদার্স কালেকশনে দুজন ক্রেতা থ্রিপিস বাছাই করছিলেন। তাঁদের একজন রায়েরবাজারের বাসিন্দা আফরিন। তিনি জানালেন, নিজেরা এবার ঈদের কেনাকাটা করছেন না। তাঁর ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে গত ফেব্রুয়ারি মাসে। বিয়ের পর প্রথম ঈদ, তাই বোন ও ভগ্নিপতির জন্য কিছু কিনতে বের হয়েছেন। এই দোকানের ব্যবস্থাপক মো. বাবু জানালেন, ঈদের আগে এ রকম সময় তাদের প্রতিদিন অনন্তপক্ষে এক লাখ টাকা বিক্রি হতো, এখন বড়জোর পাঁচ–ছয় হাজার টাকা হয়। ১০ মে মার্কেট খুলেছে। এর মধ্যে কেবল এক দিনই ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে।

>

 আড়ংয়ে চলছে অনলাইনে নিবন্ধন করে নির্দিষ্ট সময়ে কেনাকাটা। বিক্রয়কেন্দ্রের ভেতরে নিরিবিলি পরিবেশ।

এই বিপণিবিতানের শাড়ির দোকান পলক শাড়িঘরে কোনো ক্রেতা ছিল না। ব্যবস্থাপক আবদুর রাজ্জাক জানালেন কোনো কোনো দিন ‘বিসমিল্লাহ্’ও হয় না। শুধু হাতে দোকান বন্ধ করতে হয়।

মিরপুর রোড়–সংলগ্ন ধানমন্ডি ২ থেকে ২৭ নম্বর পর্যন্ত পথের উভয় পাশে হ্যাপি অর্কিড শপিং কমপ্লেক্স, কনকর্ড আর্কেডিয়া, রয়েল প্লাজা, অরচার্ড পয়েন্ট, মেট্রো শপিং মল, কসমস হলিডে, হোসেন প্লাজা, রাপা প্লাজাসহ সব বড় বিপণিবিতান বন্ধ। লালমাটিয়া এলাকায় এসে একমাত্র সানরাইজ প্লাজা খোলা দেখা গেল। তবে এখানেও ক্রেতা নেই। থ্রিপিসের দোকান কাশিকা ফ্যাশনের মালিক জিশান আহমেদ জানালেন, এই মার্কেটে মূলত সেলাই ছাড়া থ্রিপিসের কাপড় বিক্রি হয়। শবেবরাতের পর থেকে রোজার প্রথম ১৫ দিনেই বিক্রি হয় বেশি। এবার দরজি দোকান বন্ধ আর এখন তৈরি করার সময়ও নেই। বেচাকেনা নেই বললেই চলে।

এই পুরো এলাকায় একমাত্র আড়ংয়ের বিক্রয়কেন্দ্রেই দেখা গেল ক্রেতার সমাগম। এবার আড়ংয়ে কেনাকাটার জন্য অনলাইনে আগাম নিবন্ধন করে আসতে হচ্ছে। তবে যাঁরা আগাম নিবন্ধন করেননি, তাঁরা মূল প্রবেশপথের সামনেও নিবন্ধন করে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কেনাকাটা করতে পারবেন। ব্র্যাকের মিডিয়া প্রধান রাফে সাদনান আদেল জানালেন, ক্রেতা ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের নিরাপত্তার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত সময়কে কয়েকটি পর্বে ভাগ করে ক্রেতাদের নিবন্ধনের সময় কেনাকাটার নির্ধারিত সময় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিক্রয়–কেন্দ্রের ভেতরে যাতে বেশি ভিড় না থাকে, সেই জন্য এই ব্যবস্থা।

ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, ক্রেতা আছে তবে বেশ ফাঁকা ফাঁকা, বছরের স্বাভাবিক সময় যেমন থাকে তেমন। এখানে পাঞ্জাবি আর স্ত্রীর গয়না কিনতে মিরপুর থেকে এসেছিলেন ফখরুল আলম ও বীথি দম্পতি। গত সোমবার তাঁরা আগাম নিবন্ধন করেছিলেন। কেনাকাটার জন্য ৪০ মিনিট সময় পেয়েছিলেন বেলা একটা থেকে। ভেতরে ঈদের আগের সেই গায়ে গা লাগানে ভিড় নেই। অনেকটাই নিরিবিলি। আধা ঘণ্টার কম সময় লেগেছে তাঁদের কেনাকাটা করতে। এই ব্যবস্থাটি তাঁদের ভালোই লেগেছে বলে তাঁরা জানালেন।