Thank you for trying Sticky AMP!!

দেশ ‘রক্ষায়’ সব রাজনৈতিক দলকে এক ব্যানারে আসার আহ্বান নুরুলের

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন নুরুল হক

বর্তমান সরকার দেশকে একটি ‘ব্যর্থ, অকার্যকর ও মাফিয়া রাষ্ট্রে’ পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক। এই জায়গা থেকে বাংলাদেশকে ‘রক্ষায়’ সব রাজনৈতিক দলকে এক ব্যানারে আসার আহ্বান জানিয়ে নুরুল বলেছেন, ‘আর ভিন্ন ভিন্ন ব্যানারে নয়, একই ব্যানারে আসুন, বাংলাদেশকে রক্ষা করুন। দেশকে রক্ষার জন্য সবাইকে এক হতে হবে। বর্তমান স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মতো বাঁশের লাঠি তৈরি করতে হবে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে নুরুল হক এসব কথা বলেন। ‘শ্রমিকনেতা রুহুল আমিনসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সবার নিঃশর্ত মুক্তি ও আইনটি বাতিলের দাবিতে’ শ্রমিক অধিকার পরিষদ এই সমাবেশের আয়োজন করে।

বিক্ষোভ সমাবেশে নুরুল হক বলেন, ‘বর্তমান সরকার মাফিয়াদের সরকার, জনগণের সরকার নয়। দেশের প্রশাসন যন্ত্র অমানবিক হয়ে উঠেছে। জাতিসংঘসহ বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী ১৩টি রাষ্ট্র, বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ইতিমধ্যেই বর্তমান বিনা ভোটের সরকারের নির্যাতন-নিপীড়ন নিয়ে সরব হয়েছে। এখন জনগণকে জাগতে হবে। রাজপথে জনতার ঢল নামলেই প্রশাসন আমাদের পাশে দাঁড়াবে। সেই জাগানোর দায়িত্ব রাজনৈতিক সংগঠন ও কর্মীদের। আজকে একটাই সংকট, সেটা হলো দেশে গণতন্ত্র নেই। বিনা ভোটের সরকার দেশকে ইরাক, সিরিয়া ও মিয়ানমার বানাতে চায়। এই ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে আমরা জিম্মি থাকব না। এর বিরুদ্ধে সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। এখন থেকে আমাদের স্লোগান একটাই, “বাঁশের লাঠি তৈরি করো, বাংলাদেশ রক্ষা করো; স্বৈরাচার হটাও, বাংলাদেশ বাঁচাও”৷’

নুরুল বলেন, ‘একটা ফ্যাসিবাদী-মাফিয়া রাষ্ট্র ও অগণতান্ত্রিক সরকার দেখার জন্য ৩০ লাখ শহীদ জীবন দেননি, দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারাননি। মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনাকে ধারণ করা মানুষদের বলব, ২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা না হলে কালো আইন তৈরির কারখানা ওই অবৈধ সংসদ ভবন ঘেরাও করা হবে। ২৬ মার্চের পরে আমাদের এক দফা দাবি হবে সরকারের পতন।’

এক জরিপ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে নুরুল অভিযোগ করেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ফলে আজ ৭২ শতাংশ সাংবাদিক তাঁদের পেশা পরিবর্তন করতে চান, ৪২ শতাংশ মানসিক বিষণ্ণতায় ভোগেন। অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা করে সরকারের লুটপাট-দুর্নীতির তথ্য পরিবেশন করতে গেলে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তাঁদের বলা হয়, ‘এরা জামায়াত-শিবির, সরকারবিরোধী; এদের চাকরি থেকে সরাতে হবে।’ গণমাধ্যমগুলো এখন চালায় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। এ কারণে সাংবাদিকেরা মানসিক যন্ত্রণায় থাকেন। অনেক সাংবাদিকের চাকরি চলে গেছে। নোয়াখালীর সাংবাদিক মুজাক্কির হত্যায় ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা জড়িত। এর আগে নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিক হত্যা হয়েছে, বিচার হয়নি। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডে সরকারি দলের নেতারা জড়িত, তাই ১২ বছরেও বিচার হয়নি। করোনাকালে শতাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। টক শোতেও সরকারের অন্যায়-দুর্নীতির কথা বলা যায় না।

সরকারের উদ্দেশে নুরুল হক বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সরকারকে বলতে চাই, “ভারতের কসাই”খ্যাত দাঙ্গাবাজ ও উগ্র হিন্দুত্ববাদের দোসর মোদিকে বাংলাদেশে এনে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে তামাশা করবেন না। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনের জন্য, শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। জনগণকে বলব, বর্তমান অগণতান্ত্রিক সরকারের আমলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের অসম্মান হতে দেবেন না, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বেঈমানি করবেন না।’

এই বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান, মাহফুজুর রহমান খান ও মশিউর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।