Thank you for trying Sticky AMP!!

পঙ্গু হাসপাতালে একযোগে সাত নার্স বদলি

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল)।

রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সাতজন নার্সকে বদলি করা হয়েছে। পাঁচ দিন আগে একযোগে তাঁদের ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, নার্সিং অধিদপ্তর তাঁদের মতামত উপেক্ষা করে একযোগে সাতজন নার্সকে বদলি করায় হাসপাতালে সেবায় বিঘ্ন ঘটছে।

এই নার্সদের বদলির পেছনে হাছনা বেগম নামের একজন নার্স নেত্রীর ভূমিকা আছে বলে মন্তব্য করেছেন হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল গণি মোল্যাহ।
নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ৭ জানুয়ারি পঙ্গু হাসপাতালের সাত নার্সকে কক্সবাজার, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে বদলি করা হয়। প্রশাসনিক কারণে তাঁদের বদলি করা হয়েছে।

পঙ্গু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক তড়িৎ কুমার সাহা আজ মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, বদলি করা নার্সরা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), অস্ত্রোপচারকক্ষ, জরুরি ও বহির্বিভাগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের দায়িত্বে (ইনচার্জ) ছিলেন। এসব বিভাগে দায়িত্ব পালন করতে হলে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়। যেকোনো নার্সকে এসব বিভাগের দায়িত্ব দেওয়া হলে কাঙ্ক্ষিত সেবা মিলবে না। এ অবস্থায় হাসপাতালে রোগীর সেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। যাঁদের বদলি করা হয়েছে তাঁরা হাসপাতালের নিবেদিত কর্মী। কী কারণে নার্সিং অধিদপ্তর তাঁদের বদলি করেছে, তা তিনি জানেন না।

আজ মঙ্গলবার তড়িৎ কুমার সাহা স্বাস্থ্যসচিব বরাবর আবেদন করেছেন। আবেদনে হাসপাতালের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে ও প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে নার্সদের বদলি বাতিল করার পাশাপাশি দুই সেবা তত্ত্বাবধায়ক হাসনে আরা আক্তার, রহিমা খাতুন এবং নার্সিং সুপারভাইজার হাছনা বেগম ও তায়েবা খাতুনকে বদলি করে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, বদলি হওয়া নার্সরা ৫ বছর থেকে ২০ বছর পর্যন্ত এখানে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ফলে নানা ধরনের প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। দায়িত্ব পালনের জন্য রোস্টার করা হলে তাঁরা ছিঁড়ে ফেলেছেন। এসব বিষয় অধিদপ্তরকে জানানো হলে ওই সাতজনকে বদলি করা হয়।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল গণি মোল্যাহ ছুটিতে আছেন। মঙ্গলবার যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হাছনা বেগম নামের এক নার্স নেত্রী হাসপাতালের দুজন সেবা তত্ত্বাবধায়ককে ‘ম্যানেজ’ করে নার্সিং অধিদপ্তরকে দিয়ে এই সাত নার্সকে একযোগে ঢাকার বাইরে বদলি করেন। দুজন করে নার্সকে হাসপাতালের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলি করতে তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন দুই সেবা তত্ত্বাবধায়ক। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে ঢাকার বাইরে এই বদলিতে তাঁর অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে তিনি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারকে রোগীর সেবার স্বার্থে বদলির আদেশ স্থগিত করতে বলেছিলেন।

কিন্তু তিনি তাঁর অনুরোধ রাখেননি। ফলে হাসপাতালে সেবা ব্যাহত হচ্ছে। সাত নার্সের বদলি স্থগিত করতে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবকেও জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পঙ্গু হাসপাতালের সেবা তত্ত্বাবধায়ক হাসনে আরা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসপাতালে আমাদের আরও নার্স দরকার। বদলি করার মালিক নার্সিং অধিদপ্তর। তারাই করছে। আর বদলির বিষয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপও করেননি।’

এ নিয়ে কথা বলতে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সাত নার্সের বদলির আদেশ বাতিলের দাবিতে নার্সরা বুধবার হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।