প্রকৃত অপরাধীর যাতে বিচার হয়: হাইকোর্ট
পি কে হালদারের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্তের অগ্রগতিবিষয়ক শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হলো তদন্ত যাতে যথাযথ হয় এবং প্রকৃত অপরাধীদের বিচার হয়। আমরা সেটিই চাচ্ছি।’
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই মন্তব্য করেন।
প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে ধরতে ও তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলার তদন্তের অগ্রগতিবিষয়ক শুনানি হয় হাইকোর্টে।
গতকাল আদালতে এই মামলায় পক্ষভুক্ত হতে আবেদন করেন পিপলস লিজিংয়ের সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিক্যুডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খান। এই আবেদনের ওপর এবং বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নথিতে আসা ৮৩ জনের বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ‘পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সহায়তা চাইবে দুদক’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এই বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুল দেন। একই সঙ্গে পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে ও তাঁকে গ্রেপ্তারে নেওয়া পদক্ষেপ বিষয়ে লিখিতভাবে দুদক চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের জানাতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় শুনানিতে ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের দখল করা আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিংয়ে পাঁচ আমানতকারী আদালতে আবেদন করেন। সেদিন আদালত পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদারসহ ২৫ ব্যক্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। পি কে হালদারকে ধরতে রেড নোটিশ ইন্টারপোলের কাছে পাঠানো ও তদন্তের অগ্রগতি জানাতে বলে ২০ জানুয়ারি শুনানির দিন রাখেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল শুনানি হয়।
শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, পি কে হালদারকে ধরতে ইন্টারপোলের সদর দপ্তর থেকে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। বিএফআইইউ নথিতে ৮৩ জনের নাম আছে, যাঁরা প্রশান্ত কুমারের সঙ্গে সম্পর্কিত। আদালত বলেন, ২৫ জনের (দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা) নাম কি এখানে আছে? জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অনেকগুলো নাম আছে। হালনাগাদ নামও আসছে। তদন্তে আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে।
দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ২৫ জনের মধ্যে ইতিমধ্যে অবন্তিকা বড়ালসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চার-পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
আদালতে পিপলস লিজিংয়ের সাবেক চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দীর পক্ষে আইনজীবী মোশারফ হোসেন ও পি কে হালদারের স্বজন ও পিপলস লিজিংয়ের সাবেক পরিচালক অমিতাভ অধিকারীর পক্ষে আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক এবং পিপলস লিজিংয়ের সাময়িক অবসায়ক আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে আইনজীবী মেজবাহুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।
পি কে হালদার ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেডসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।