Thank you for trying Sticky AMP!!

ফুটপাত বন্ধ করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়

নাখালপাড়ায় নাবিস্কোর কাছে ফুটপাতে বানানো হয়েছে আওয়ামী লীগের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার কার্যালয়। তার সামনে সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি, ভ্যানগাড়ি ও পণ্যবাহী পিকআপ পার্ক করে রাখা হয়। ফলে ফুটপাত ছেড়ে রাস্তায় নেমেও ভুগতে হয় পথচারীদের। প্রথম আলো


নাবিস্কোর পশ্চিম অংশের ফুটপাত বন্ধ করে রেখেছে টিন, কাঠ ও বাঁশের তৈরি দুটি ঘর। পথচারীদের রাস্তায় নেমে চলাচল করতে হয়। ঘর দুটির একটি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা আওয়ামী লীগের কার্যালয়। অপরটি এসআর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেন্ট-এ-কারের কার্যালয়।

স্থানীয় লোকজন বলেন, নাখালপাড়া ও তেজগাঁওয়ের সংযোগস্থলে এই ফুটপাতের ওপর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টি আছে বেশ কয়েক বছর থেকে। নেতা-কর্মীরা মাঝেমধ্যে এসে বসেন। পথচারীদের চলাচলের পথ সুগম করতে প্রায় তিন মাস আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকার ফুটপাতের উন্নয়নকাজ করে। তখন ওই ফুটপাতটিরও সংস্কার করা হয়। সংস্কারের সময় দলীয় কার্যালয় এবং রেন্ট-এ-কারের অস্থায়ী ঘরটি ফুটপাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সংস্কারের পর আবার ফুটপাত দখল করে বসে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় এবং রেন্ট-এ-কারের অস্থায়ী ঘরটি।

গত বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ফুটপাতের ঘরগুলোর পূর্ব দিকে চার-পাঁচটি এবং পশ্চিমে একটি চায়ের দোকান আছে। পুরো ফুটপাতের সামনের সড়কজুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ি, ভ্যানগাড়ি ও পণ্যবাহী পিকআপ পার্ক করে রাখা। নাখালপাড়ামুখী নাবিস্কো মোড়ের সড়কটির দক্ষিণ অংশের ফুটপাত দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। তবে উত্তরাংশের ফুটপাত দিয়ে হাঁটার কোনো পথ নেই। এখানে একাধিক চায়ের বন্ধ স্টল ত্রিপলের কাপড়ে মোড়ানো। এরপর রেন্ট-এ-কারের ঘর ও টিনে ঘরের কারণে ওই ফুটপাতের নিচের গাড়ি চলাচলের রাস্তা দিয়ে পথচারীরা হাঁটছে। তবে নিচের রাস্তায় নেমেও নিস্তার নেই। এই পথের পুরোটা জুড়ে ব্যক্তিগত গাড়ি, পিকআপ ভ্যান, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ভ্যানগাড়ি পার্ক করে রাখা।

‘ফুটপাত দখল করে দলের কার্যালয় বা অন্য কিছু বানানো একটা অনিয়ম। তবে দেশে যে অনিয়ম চলছে, এটা তারই একটা। এটাকে আলাদাভাবে কীভাবে ঠিক করা যাবে!’ বলছিলেন আহসানউল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। আরেক পথচারী মোস্তফা হাবিব বলেন, এই সড়ক একসময় ১৫ ফুট প্রশস্ত ছিল। সে সময়ও সড়কে যানজট ছিল। এখন এই সড়ক ৫০ ফুট। তারপরও দখলের কারণে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা যায় না।

গণসাহায্য সংস্থা নামের একটি বেসরকারি সংস্থার ভবনের দেয়ালঘেঁষা এই ফুটপাত। এখানে অন্তত ৪৫ বছর ধরে চায়ের দোকান করছেন বলে দাবি করেন মো. হান্নান নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, এখন যেখানে বেসরকারি সংস্থার অফিস, সেখানে একটি প্লেনশিট তৈরির কারখানা ছিল। তিনি স্বাধীনতার আগে থেকেই এই কারখানায় কাজ করতেন। এরপর থেকেই সেখানে একটি ছোট চায়ের দোকান দিয়ে বসেছেন। তিনি বলেন, ফুটপাতের কাজ চলাকালে তিনি চায়ের দোকান সরিয়ে আরেক জায়গায় বসেছিলেন। এরপর আবার সেখানে বসেন।

সড়কের ওপর এখানে কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ ফল বিক্রেতা আছেন। তাঁদের একজন বলেন, ‘আমাদের যখন-তখন উঠে যেতে হয়। কিন্তু এইটা প্রাইভেট গাড়ি রাখারও জায়গা না। রিকশা তো পুলিশ ওঠায় দেয়, কিন্তু প্রাইভেট গাড়িগুলো উঠাইতে পারে না।’

এই রাস্তাটি ডিএনসিসির ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সফিউল্লাহ তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি অবশ্য প্রথম আলোর কাছে দাবি করছেন, নাবিস্কোর ফুটপাতে এই কার্যালয় নতুন করা হয়েছে। তবে এখানে কেউ বসে না। তিনি বলেন, শিল্পাঞ্চল থানার একটি কার্যালয় তিব্বতে কলোনি মোড়ে আছে। তাই এটি আর রাখা হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিটি করপোরেশনও বলেছে এখান থেকে কার্যালয় তুলে দিতে। শিগগিরই এই কার্যালয় তুলে দেওয়া হবে।

এসআর এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড রেন্ট-এ-কারের মালিক মো. দুলাল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এলাকার ছেলে। সেই পরিচিতির সূত্র ধরে অস্থায়ীভাবে এই অফিস দিয়েছি। তবে এখানকার ফুটপাত দিয়ে কেউ চলাচল করে না। খালি থাকলে রিকশাচালকেরা প্রস্রাব করে। তখন হাঁটা-চলার অবস্থা থাকে না। আমাদের অফিস থাকায় আমরা নিয়মিত পরিষ্কার রাখি।’