বছরজুড়েই সড়কে ময়লা পানি
বছরজুড়েই সড়কে জমে থাকে ময়লা পানি। সেই পানিতে পয়োবর্জ্য থাকে প্রায়ই। সপ্তাহে একবার ওই বর্জ্য সরিয়ে পাশেই স্তূপ করে রাখা হয়। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা মাঝেমধ্যে ওই সব বর্জ্য সরালেও বেশির ভাগ সময় এসব বর্জ্য সেখানেই পচে পানির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। স্থানীয় ব্যক্তিদের নিরুপায় হয়ে ওই পথ দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে। এমন চিত্র পূর্ব জুরাইনের তিতাস খালপাড় সড়কের।
স্থানীয় ব্যক্তিদের অভিযোগ, সড়কটির পাশেই খাল থাকার কারণে সব সময় সড়কে পানি জমে থাকছে। খালের যেসব অংশ পরিষ্কার করলে পানির প্রবাহ ঠিক থাকবে, ওই অংশে পরিষ্কার করা হচ্ছে না। মাঝেমধ্যে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা পরিচ্ছন্নতার নামে এসে ছবি তুলে চলে যান। স্থানীয় কাউন্সিলর ও সিটি করপোরেশনের দ্বারস্থ হতে হতে তাঁরা ক্লান্ত। এখন অবস্থার উন্নতির বিষয়টি তাঁরা নিয়তির ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন।
পূর্ব জুরাইনের তিতাস খালপাড় সড়কটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এই সড়কের পাশে আরও কয়েকটি সড়ক রয়েছে, যা ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে পড়েছে। ওই ওয়ার্ডের কয়েকটি সড়কেও বছরের বেশির ভাগ সময় পানি জমে থাকে। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
ওই এলাকার বাসিন্দা মো. সুমন প্রথম আলোকে বলেন, মশার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার তাঁরা খুব দুশ্চিন্তায় আছেন। কারণ, ওই এলাকায় অলিগলিতে বছরের বেশির ভাগ সময় ময়লা পানি জমে থাকে। মাঝেমধ্যে ওষুধ ছিটাতে সিটি করপোরেশনের লোকজন এলেও ছবি তুলেই তাঁরা সেখান থেকে চলে যান। সড়কে স্তূপ হয়ে থাকা বর্জ্য এই প্রতিবেদককে দেখিয়ে তিনি বলেন, পাঁচ দিন আগে এসব বর্জ্য সড়ক থেকে সরিয়ে পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এরপর এগুলো সরানো হয়নি।
তিতাস খালপাড় সড়কে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে দেখা গেছে, সেখানকার বাসিন্দারা ময়লা পানি মাড়িয়েই যাতায়াত করছে। এক ঘণ্টায় মাত্র একটি রিকশা এবং একটি মোটরসাইকেলকে ওই সড়ক হয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কটির আশপাশের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। যে কটি দোকান চালু আছে, সেসব দোকানে যাওয়ার জন্য সড়কের পাশ ঘেঁষে ইট বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূল সড়কের পাশের খালের বেশির ভাগই উন্মুক্ত। তাই সড়কের পাশ ঘেঁষে চলাচলের কোনো উপায় নেই। সড়কটির পাশের কয়েকটি বাড়িতেও ময়লা পানি ঢুকছে। একটি বাড়ির রান্নাঘরে গিয়ে দেখা গেল, রান্নাঘরে পানি জমে আছে। ইট বিছিয়ে সেখানে রান্নার কাজ করছেন এক নারী। তিনি বলছেন, ভাড়া তুলনামূলক কমসহ নানা কারণে তাঁকে ওই এলাকায় থাকতে হচ্ছে। এই ভোগান্তি তিনি মেনে নিয়েছেন। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে তিনি কিছুটা ভীতিকর পরিস্থিতিতে আছেন। তাঁর আশপাশের বাসাবাড়ির কয়েকজনের ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। সম্প্রতি তিতাস খালপাড় রোডের পাশেই মুরাদপুর কবরস্থান এলাকায় এক শিশু ডেঙ্গুতে মারা গেছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে তারা ওই এলাকায় একটি সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) নির্মাণ করতে চাচ্ছে। তবে এর জন্য তারা জায়গা পাচ্ছে না। সংস্থাটি বলছে, সড়কটি সিটি করপোরেশনের হলেও পাশে থাকা খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। একটি প্রকল্প সেখানে চলছে। এই প্রকল্পের শেষ হলে খালগুলোর পানির প্রবাহ ঠিক থাকবে, জলাবদ্ধতা কমবে।
জানতে চাইলে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপদেষ্টা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকার সড়ক সরু। তাই ভেতরে ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না। বিকল্প ব্যবস্থায় তাঁরা প্রতিদিনই বর্জ্য অপসারণ করছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই পানিতে মল ভাসছে। খালের আউটলেট না থাকার কারণে পানি উল্টো দিকে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন
-
ইরান-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে যে বদল এসেছে
-
আইসিইউর এসি নষ্ট, অস্ত্রোপচারও বন্ধ, কষ্টে রোগীরা
-
দিনাজপুরে ভোট গণনার পর দুই প্রার্থীর সমর্থকদের উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে নিহত ১
-
এবার ‘কিপটে’ মোস্তাফিজের ২ উইকেট, বড় জয়ে শীর্ষ তিনে ফিরল চেন্নাই
-
ঢাকাসহ ৫ জেলা: মাধ্যমিক সোমবার বন্ধ হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলাই থাকছে