Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বামপন্থী তিনটি ছাত্রসংগঠনের মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট আয়োজিত ছাত্রসমাবেশ

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর ‘শিক্ষার ওপর আক্রমণ’

২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর ধার্যের প্রস্তাবকে ‘শিক্ষার ওপর আক্রমণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে বামপন্থী তিনটি ছাত্রসংগঠনের মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট। জোটের নেতারা প্রস্তাবিত এ কর বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

‘আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ বা মুনাফা তৈরির কোনো সুযোগ নেই।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক ছাত্রসমাবেশ থেকে মোট পাঁচ দফা দাবি জানান প্রগতিশীল ছাত্রজোটের কেন্দ্রীয় নেতারা। নানা অভিযোগ তুলে বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তাঁরা।

জোটের পাঁচ দফা দাবি হলো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ কর আরোপের নামে শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধির পাঁয়তারা বন্ধ করা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের অবৈধ আয় বাজেয়াপ্ত করা ও টিউশন ফি নির্ধারণে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের বেতন-ফি মওকুফ, অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান–সংশ্লিষ্ট সবাইকে করোনার টিকা দেওয়া।

ছাত্রসমাবেশে কেন্দ্রীয় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের সমন্বয়ক ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা একটি ভয়াবহ সংকট অতিক্রম করছে। তাদের নানা আসক্তি বাড়ছে, নানান মানসিক রোগ তৈরি হচ্ছে, বাল্যবিবাহ হচ্ছে। বড়সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে পড়ছে। অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত। দেশের সবই যেখানে চলছে, সেখানে কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে, তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা আমরা পাইনি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে সরকার কোনো রোডম্যাপ প্রণয়ন করেনি। আমরা চাই, নানান আয়োজনের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক।

সরকারের সমালোচনা করে মাসুদ রানা বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ভয়াবহ বিপর্যয়ের এ সময়ে বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিকে নিশ্চিত করার পরিকল্পনা থাকবে। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে এগুলো অবহেলিত হলো। করোনাকালে মানুষের জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল, সরকার তা নেয়নি। তার ওপর আবার কর আরোপ করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত বাজেট খুনি, ব্যবসায়ী ও লুটেরাদের বাজেট।’ এতে শিক্ষার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও সরকার দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের কবে করোনার টিকা দেওয়া হবে, সে বিষয়ে সরকারের কোনো পরিকল্পনা নেই। প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষার্থীদের কথা ভাবা হয়নি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর কর আরোপের মধ্য দিয়ে তাদের অবৈধ মুনাফা অর্জনকে বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন বলেন, ‘আইন অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ বা মুনাফা তৈরির কোনো সুযোগ নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের ওই অবৈধ লভ্যাংশের ওপর কর ধার্য করার মধ্য দিয়ে সরকার এটিকে বৈধ করা ও লুটপাটকে বৈধতা দেওয়ার পাঁয়তারা করছে। আমরা কর আরোপের এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করছি। বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের অবৈধ আয়ের উৎস-লভ্যাংশ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলোর টিউশন ফি নির্ধারণে শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।’

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণের সঞ্চালনায় এ ছাত্রসমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (বাসদ) কেন্দ্রীয় সভাপতি আল কাদেরী, ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, সহসভাপতি সাদেকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।