Thank you for trying Sticky AMP!!

বৈচিত্র্যময় জামদানি পণ্যের সন্ধানে ভিন্নধর্মী কর্মশালা

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশ। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের নিজস্ব শিল্প মাধ্যম হিসেবে তাঁতশিল্পের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ঐতিহ্যবাহী মসলিন কিংবা জামদানির কথা সকলেই কমবেশি জানে। মসলিন বিলুপ্ত হয়ে গেছে অনেক আগেই, কিছুটা ম্রিয়মাণ হলেও এখনো বেঁচে আছে জামদানি বস্ত্র। ইউনেসকো জামদানিকে বাংলাদেশের জিআই পণ্য ঘোষণা করলেও বর্তমানে বাংলাদেশের জামদানি শিল্পের অবস্থা খুব ভালো, এমনটা দাবি করা যায় না। পরম্পরাগতভাবে যারা জামদানি বয়নের কাজ করতেন, তারা ক্রমশ এই পেশায় আস্থা হারিয়ে ফেলছেন। নতুন প্রজন্ম এই পেশায় আগ্রহী নন। ক্রমশ কমে আসছে জামদানি তাঁতির সংখ্যা। এ ছাড়া জামদানি বস্ত্রের বৈচিত্র্য আনতেও চেষ্টা হয়নি বাংলাদেশের সরকারি বা বেসরকারি কোনো পর্যায়ে। ফলে জামদানি এখনো আটকে আছে শাড়ির মধ্যে। অথচ বিভিন্ন গবেষণা এবং খুব অল্প কিছু ভিন্ন ধর্মী উদ্যোগ থেকে দেখা গেছে জামদানি দিয়ে ভিন্নধর্মী পণ্যও তৈরি করা সম্ভব।

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ডিজাইনার এবং অন্যান্যরা। ছবি: সংগৃহীত

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী জামদানি শিল্পের প্রচার, প্রসার ও বাজার উন্নয়নে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর অর্থায়নে ‘বৈচিত্র্যময় জামদানি পণ্যের বাজার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে যথাশিল্প (ঐতিহ্যবাহী ও সমকালীন শিল্পকেন্দ্র) ও পিদিম ফাউন্ডেশন (উন্নয়ন সংস্থা)। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে গত ১০ ও ১১ মার্চ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের সেমিনার কক্ষে বৈচিত্র্যময় জামদানি পণ্যের ডিজাইন কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। কর্মশালা পরিচালনা করেন শিল্পী ও গবেষক শাওন আকন্দ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক শিল্পী শামীম রেজা। এই কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কারুশিল্প বিভাগ, শান্ত-মরিয়ম ক্রিয়েটিভ ইউনিভার্সিটির ফ্যাশান ডিজাইন বিভাগ, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশান অ্যান্ড টেকনোলজি এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। আড়ং, কুমুদিনী, অরণ্য, কে ক্র্যাফট, দেশাল, রং বাংলাদেশ, খুঁতসহ মোট পণেরটি ফ্যাশান হাউসের ডিজাইনার ও প্রতিনিধিরাও এই কর্মশালায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন আকর্ষণীয় পণ্য তৈরি করেছেন জামদানি এবং এর আদি নকশার মোটিফ ব্যবহার করে। এ ছাড়া তিনজন অভিজ্ঞ তাঁতি এই কর্মশালায় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন— যাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় পণ্যের ডিজাইন ও নমুনা তৈরি করা হয়েছে। এসব বৈচিত্র্যময় পণ্য দিয়ে ভবিষ্যতে একটি জামদানি প্রদর্শনী আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

দুই দিন ব্যাপী এই বৈচিত্র্যময় জামদানি পণ্যের ডিজাইন উন্নয়ন শীর্ষক কর্মশালার বিভিন্ন পর্বে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য কারু-ব্যক্তিত্ব মালেকা খান, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজেশ ভৌমিক, মসলিন গবেষক সাইফুল ইসলাম, বিলেত প্রবাসী শিল্পী আবু জাফর, পিদিম ফাউন্ডেশনের পরিচালক হুমায়ুন কবীর প্রমুখ।

উল্লেখ্য, বৈচিত্র্যময় জামদানি পণ্যের ডিজাইন বিষয়ে বাংলাদেশে এটিই প্রথম কর্মশালা।