Thank you for trying Sticky AMP!!

মুজিব বর্ষে থাকছেন আকরাম খান

১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মদিন উদ্‌যাপন এবং মুজিব বর্ষ ঘোষণা অনুষ্ঠানের মুখ্য আকর্ষণ আকরাম খান। বিশ্বমাতানো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার এদিন উপস্থিত থাকলেও মূল উপস্থাপনায় অংশ নিচ্ছেন কি না, সে রহস্য থেকেই যাচ্ছে।

এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আকরাম খান ১৫ মার্চ বিকেলে ঢাকায় আসছেন। ঝটিতি সফরে সঙ্গী হচ্ছেন তাঁর মা। ১৭ মার্চ প্যারেড গ্রাউন্ডের অনুষ্ঠানস্থল থেকে সোজা ছুটবেন বিমানবন্দরে।

তাঁর প্রতিষ্ঠান আকরাম খান কোম্পানি (একেসি) দীর্ঘ গবেষণা, পরিকল্পনা এবং অনুশীলন শেষেই নতুন প্রযোজনা মঞ্চে আনে। তবে বাংলাদেশ আর বঙ্গবন্ধু তাঁর অন্য আবেগের জায়গা। তাঁর চাচা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। আর মা সেই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চে সরাসরি শুনেছেন বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণ। এ জন্য বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবর্ষে তাঁর প্রতি অনিঃশেষ শ্রদ্ধা থেকেই ৭ মার্চের ভাষণকে ভিত্তি করে মাত্র ৫ দিনে এ নৃত্যায়োজনের পরিকল্পনা ও কোরিওগ্রাফ করেছেন আকরাম; এই অংশের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফাদার: ভিশন অব দ্য ফ্লোটিং ওয়ার্ল্ড’। চমৎকার এ নৃত্য পরিকল্পনায় সংগীতায়োজন করেছেন ভিনসেনজো লামাগনা।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষের অনুষ্ঠানে থাকবেন আকরাম খান। ছবি: একেসি/ জঁ লুই ফার্নান্দেজ

এ আয়োজনের ইভেন্ট কোম্পানি ব্লুজ কমিউনিকেশনের প্রধান নির্বাহী মো. ফারহাদুল ইসলাম জানালেন, আকরাম রাজি হলে ডিসেম্বরে বাংলাদেশে আসেন তাঁর ক্রিয়েটিভ অ্যাসোসিয়েট ম্যাভিন খু। বাছাই করা ৩৮ জন নৃত্যশিল্পী। মূল আসরে অংশ নেবেন ৩০ জনের সঙ্গে আকরামের দলের ৩ জন। ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চলছে অনুশীলন। ১১ থেকে ১৬ মার্চ মূল মঞ্চে হবে মহড়া।

দুই ডিজাইনার মারি ও ফাইজা। ছবি: প্রথম আলো

আট মিনিটের মূল পরিবেশনায় আরও থাকবেন একেসির তিনজন। নিজে অংশ না নিলেও নৃত্য পরিবেশনা শেষে আকরাম মঞ্চে উঠতে পারেন বলে জানা গেছে।

আকরাম খান কোম্পানির বাংলাদেশ প্রকল্প পরামর্শক ঈশিতা আজাদ জানান, আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যস্ত আকরাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাতটি পারফরম্যান্স ছাড়াও এ বছর ইংলিশ ন্যাশনাল অপেরার ২০ বছর পূর্তিতে থাকছে তাঁর নির্দেশনায় বিশেষ পারফরম্যান্স।

নৃত্যশিল্পীদের পোশাক। ছবি: প্রথম আলো

গেল মাসে কস্টিউমের খুঁটিনাটি দেখতে ঢাকা ঘুরে গেছেন কস্টিউম ডিজাইনার মারি কান্টেনিস। বাংলাদেশে সহায়তা করছেন ফ্যাশন ডিজাইনার ফাইজা আহমেদ। ইতিমধ্যে ৩৩ জনের কস্টিউম তৈরি শেষ। বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন কস্টিউম ডিজাইনারের কোলাবরেটর মারগ লালেন। মহড়া তত্ত্বাবধান করছেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক ক্রিস্টিন মপেতি।

এ নাচে গতির সঙ্গে থাকবে শক্তি। পড়ে গিয়ে যাতে কেউ চোট না পায়, সে জন্য প্যারিস থেকে আনা হচ্ছে জানুবন্ধনী, জানিয়েছেন ফাইজা।

বনানীর একটি জিমনেশিয়ামে মহড়া। ছবি: ব্লুজ কমিউনিকেশন

এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ জানান, ১৬ মার্চ রাত ১২টায় শেষ হবে ক্ষণগণনা। প্রতীক্ষার অবসান শেষে ১২টা ১ মিনিটে শুরু হবে মুজিব বর্ষ। যদিও সেই রাতে কোনো অনুষ্ঠান থাকছে না। বরং প্রতিবছরের মতোই ১৭ মার্চ উদ্‌যাপিত হবে শিশু দিবস হিসেবে। বিকেল চারটায় শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। বিরতিসহ প্রায় তিন ঘণ্টার অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব বস্তুত আনুষ্ঠানিকতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি থাকবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। শিশুকণ্ঠে জাতীয় সংগীত দিয়ে সূচনা হবে মুজিব বর্ষের মহানুষ্ঠানের। এর সঙ্গে থাকবে যন্ত্রসংগীতের পরিবেশনা।

বনানীর একটি জিমনেশিয়ামে মহড়া। ছবি: ব্লুজ কমিউনিকেশন

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য দেবেন কয়েক জন বিদেশি অতিথি। এ তালিকায় আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভুটানের রাজা অথবা প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও থাকছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এক ঘণ্টার দ্বিতীয় পর্ব পুরোটাই উদ্‌যাপনের। থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি আর লেজার শো। শিল্পকলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে ৭০০ শিল্পী অংশ নেবেন ৪০ মিনিটের বিষয়ভিত্তিক পরিবেশনায়। থাকবে আকরামের দলের আট মিনিটের উপস্থাপনা।

প্যারেড গ্রাউন্ডে অতিথিরা ছাড়াও থাকবে সাধারণ মানুষ। এ অনুষ্ঠানে মুজিব বর্ষের ঘোষণা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।