Thank you for trying Sticky AMP!!

উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোর ভেতরে এই রেললাইন বসানো হয়েছে। দ্বায়িত্ব পালন করছেন নির্মাণ প্রকৌশলীরা। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে।

মেট্রোরেলের উত্তরে দৃশ্যমান, দক্ষিণে পিছিয়ে

একনজরে মেট্রোরেল প্রকল্প

  • রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উড়ালপথে মেট্রোরেলের দূরত্ব ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার। প্রতিদিন ৪ লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। ৩৫ মিনিট সময় লাগবে।

  • চালু হওয়ার কথা আগামী বছরের ডিসেম্বরে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ।

উত্তরে দৃশ্যমান

  • উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত দূরত্ব ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। কাজের অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। স্টেশন সংখ্যা ৯টি।

দক্ষিণে পিছিয়ে

  • আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দূরত্ব ৮ দশমিক ১২ কিলোমিটার। কাজের অগ্রগতি ৪৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ। স্টেশন সংখ্যা ৭টি।

যানজটের শহর ঢাকার পল্লবীতে গেলেই চোখে পড়বে উড়ালপথ। মূল সড়ক থেকে প্রায় ১৩ মিটার উঁচুতে এই পথে বসছে রেললাইন। চলছে স্টেশন নির্মাণের কাজ। বিদ্যুৎ-সংযোগের জন্য খুঁটিও বসে গেছে। এগুলো মেট্রোরেলের নির্মাণযজ্ঞের অংশ।

শুধু পল্লবী নয়, এর আগে-পরে প্রায় ১২ কিলোমিটার মেট্রোরেলের পথের এমন দৃশ্য চোখে পড়বে সবার। ১০ অক্টোবর প্রকল্প এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, নানা কাজে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। কেউ রেললাইন বসানোর কাজ করছেন, কেউ করছেন রেলের ডিপোর বিভিন্ন ভবনের সজ্জার কাজ। কাউকে কাউকে দেখা গেল, বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা স্থাপনের কাজে ব্যস্ত।

রাজধানীর যানজট কমাতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উড়ালপথে ২০.১০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মিত হচ্ছে। এখন আগারগাঁও থেকে উত্তরার (উত্তর অংশ) দিকে এগোলে মেট্রোরেলের অনেকটাই দৃশ্যমান। তবে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত (দক্ষিণ অংশ) কাজ ততটা এগোয়নি। এই অংশে খুঁটি উঠেছে। কিন্তু উড়ালপথ দৃশ্যমান হয়নি। ফলে সড়কের মাঝ দিয়ে নির্মাণযজ্ঞের কারণে প্রায় ছয় বছর ধরে নগরবাসী যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে, তা আরও কিছুটা দীর্ঘায়িত হতে পারে। অবশ্য সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বছরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মেট্রোরেল চালুর কথা।

মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ এন সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর কাজ ছয় মাস পিছিয়েছিল। এবার করোনার প্রভাবটা আরও সুদূরপ্রসারী, শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বর থেকে। এখন প্রকল্পের কাজে যুক্ত বিদেশি নাগরিকেরা ধীরে ধীরে আসছেন। তবে শীতে করোনার প্রভাব বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এমনটা হলে প্রকল্প নিয়ে দুশ্চিন্তা আরও বাড়বে।

২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর কাজ ছয় মাস পিছিয়েছিল। এবার করোনার প্রভাবটা আরও সুদূরপ্রসারী, শুরু হয়েছে গত ডিসেম্বর থেকে। এখন প্রকল্পের কাজে যুক্ত বিদেশি নাগরিকেরা ধীরে ধীরে আসছেন। তবে শীতে করোনার প্রভাব বাড়তে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। এমনটা হলে প্রকল্প নিয়ে দুশ্চিন্তা আরও বাড়বে।
এম এ এন সিদ্দিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)
মাটি থেকে প্রায় ১৩ মিটার ওপরে এই উড়ালসড়ক। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের খুঁটি বসেছে। চলছে রেললাইন স্থাপনের কাজ। এরপর এই পথ দিয়েই চলবে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। ১০ অক্টোবর রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায়।

উত্তরে এগিয়ে, দক্ষিণে পিছিয়ে

মেট্রোরেলের ১১.৭৩ কিলোমিটার পড়েছে রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁওয়ে।

শুরুটা উত্তরায়। সেখানে মেট্রোরেলের ডিপো গড়ে তোলা হচ্ছে ৫৯ একর এলাকাজুড়ে। ডিপোর ভেতরে রয়েছে ছোট-বড় ৫২টি ভবনসহ নানা স্থাপনা। কিছু ভবন পুরোপুরিই প্রস্তুত, দেয়াল লাল টাইলসে মোড়ানো হয়েছে। কোনোটায় চলছে টাইলস স্থাপনসহ অন্যান্য সজ্জার কাজ। অফিসসহ নানা কাজে এসব ভবন ব্যবহৃত হবে।

ডিপোর ভেতরে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল আকারের দুটি ছাউনি। একটি ছাউনির নিচে রয়েছে মেরামত কারখানা। অন্য ছাউনির নিচে থাকবে ট্রেন। দুটি ছাউনির ভেতরে প্রয়োজনীয় যন্ত্র-অবকাঠামো বসানোর কাজ চলছে। এরই মধ্যে স্টেশন থেকে ডিপোতে আসা-যাওয়ার দুটি রেললাইনও বসানো হয়েছে।

উত্তরায় থাকছে মেট্রোরেলের তিনটি স্টেশন। প্রথম স্টেশন উত্তরা উত্তর ডিপো থেকে আধা কিলোমিটার দূরত্বে। স্টেশনে এখনো সিঁড়ি বসেনি। অস্থায়ী সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠেই বিরাট হলরুম দেখা গেল, যা লম্বায় ১৮০ মিটার আর চওড়া ৩৩ মিটার। এর নাম কনকোর্স হল। যাত্রীরা সিঁড়ি, এস্কেলেটর ও লিফটে চড়ে কনকোর্স হল থেকে টিকিট কাটবেন। এর এক তলা ওপরে ট্রেনে চড়ার প্ল্যাটফর্ম। স্টেশনের ছাউনির কাজ শেষ হয়নি। তবে প্ল্যাটফর্মের কাজ অনেকটাই শেষ। স্টেশনে চারটি রেললাইন বসানোর জন্য রেলের পাত জোড়া দিয়ে রাখা হয়েছে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। ছবিটি সোমবার ফার্মগেট এলাকা থেকে তোলা।
উড়ালপথের ওপর রেললাইন বসানোর কাজ করছেন এক শ্রমিক। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে।
সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সার্বিক কাজের অর্ধেকের বেশি সম্পন্ন। করোনা পরিস্থিতিতে কাজের গতি কম। ১ হাজার বিদেশির মধ্যে ৬০০ এসেছেন।

দ্বিতীয় স্টেশন উত্তরা সেন্টার মিরপুর ডিওএইচএস ও উত্তরার ডিপোর ঠিক মাঝামাঝি। সেখানেও কনকোর্স হল নির্মিত হয়েছে। প্ল্যাটফর্মের কাজও শেষ পর্যায়ে। চলছে রেললাইন বসানোর কাজ। ডিওএইচএস লাগোয়া স্টেশন হচ্ছে উত্তরা দক্ষিণ। এখানে কনকোর্স ও প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি স্টেশনের ছাউনির স্টিলের কাঠামো বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এরপর পল্লবী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত আরও ছয়টি স্টেশন তৈরির কাজ চলছে। এর মধ্যে আগারগাঁওয়ের কিছু অংশ বাদে পুরোটাতেই উড়ালপথ তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন রেললাইন বসানোর প্রস্তুতি চলছে।

মেট্রোরেলের ৮.১২ কিলোমিটার পড়েছে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত। এই পথে খুঁটি নির্মিত হয়েছে। কিন্তু উড়ালপথ তৈরি হয়নি। এই অংশে সাতটি স্টেশনের কাজও শুরু হয়নি।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, উত্তরের চেয়ে দক্ষিণে কাজ পিছিয়ে থাকার কারণ দুটি। প্রথমত, এই অংশের মূল কাজ শুরু হয়েছে উত্তরের এক বছর পর। দ্বিতীয়ত, এই অংশের মূল ঠিকাদার দুটি জাপানি প্রতিষ্ঠান। করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা জাপানি নাগরিকেরা নিজ দেশে চলে গেছেন। আগারগাঁও থেকে কারওয়ান বাজার অংশের বাংলাদেশি অংশীদার আবদুল মোনেম লিমিটেড কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

গণপরিবহনের মধ্যে মেট্রোরেল সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ। যত তাড়াতাড়ি চালু হবে, তত মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যত দেরি হবে, তত ছোট গাড়ি, মোটরসাইকেল বাড়তে থাকবে। এগুলো যানজট বাড়ায়।
সামছুল হক, বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপকআনোয়ার হোসেন, ঢাকা
মাটি থেকে প্রায় ১৩ মিটার ওপরে এই উড়ালপথ। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের খুঁটি বসেছে। চলছে রেললাইন স্থাপনের কাজ। এরপর এই পথ দিয়েই চলবে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। ১০ অক্টোবর রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায়।

পাঁচ দেশের ঠিকাদার

মেট্রোরেলের কাজ আট ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটি কাজ উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উড়ালপথ ও স্টেশন নির্মাণসংক্রান্ত। দুটি কাজ ডিপো তৈরির। বাকি দুটি কাজ বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা ও রেললাইন বসানো এবং ইঞ্জিন কোচ সংগ্রহের।

এসব কাজের পাঁচটি ভাগের মূল ঠিকাদার জাপানি কোম্পানি। জাপানিদের কাজের একটি ভারত এবং একটিতে বাংলাদেশের ঠিকাদার অংশীদার হিসেবে আছে। বাকি তিনটি কাজের দুটি করছে থাইল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি এবং একটি চীনা কোম্পানি। এর বাইরে পুরো প্রকল্পের কাজের তদারকি করছে জাপানের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
মেট্রোরেলের ইঞ্জিন-কোচ ও ডিপোর মালামাল সংগ্রহের কাজটি শুরু হয়েছে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৩০.০৫ শতাংশ।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাপানে ইঞ্জিন-কোচের নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। গত জুনেই এক সেট ট্রেন বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি। ছয়টি যাত্রীবাহী ট্রেনের দুটি সেট ইতিমধ্যে জাপানে নির্মিত হয়েছে। আরও তিনটির কাজ চলছে।

মেট্রোরেলে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। চুক্তি অনুসারে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ সেট ট্রেন সরবরাহের কথা। বাকি ১৯ সেট সরবরাহের কথা আগামী বছরের মধ্যে।
মেট্রোরেলের লাইন বসানো, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন ও ট্রেনের বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন নির্মাণ, সংকেত ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন, স্বয়ংক্রিয় ভাড়া আদায় পদ্ধতি স্থাপন, প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর স্থাপন এবং স্টেশন ও ডিপো এলাকায় লিফট ও এস্কেলেটর স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি ৪৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এটি মেট্রোরেলের একটি স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম। চালু হলে এখান থেকে যাত্রীরা মেট্রোরেলে চড়বে। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে

করোনার প্রভাব

মেট্রোরেল প্রকল্পের উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের আগস্টে। পরের বছরের আগস্টে শুরু হয় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের কাজ।

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দুই মাস কাজ বন্ধ ছিল। গত জুন থেকে কাজ শুরু হলেও প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিদেশি নাগরিকদের ৪০ শতাংশ এখনো আসেনি। ফলে কাজে পুরো গতি আসেনি।

প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিসংক্রান্ত মাসিক প্রতিবেদন অনুসারে, মার্চে কাজের সার্বিক অগ্রগতি ছিল ৪৪ দশমিক ১২ শতাংশ। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে ৭০ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশের অগ্রগতি ছিল ৩৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

ছয় মাস পর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৫০.৪০ শতাংশ। আর এ সময় পর্যন্ত উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের কাজের মোট অগ্রগতি ৭৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগারগাঁও থেকে মতিঝিলে অগ্রগতি ৪৩ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

প্রকল্পের সূত্র জানায়, মেট্রোরেল প্রকল্পে কম-বেশি ১০ হাজার ব্যক্তি কাজ করেন। এর মধ্যে ১ হাজারের মতো বিদেশি নাগরিক আছেন। জাপান, ভারত, চীন, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আছেন। এর মধ্যে বর্তমানে ৬০০ জনের মতো বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশে আছেন।

প্রকল্পের কাজ তদারকির সঙ্গে যুক্ত সূত্র বলছে, পরামর্শক ও প্রকৌশলীদের একটা বড় অংশই জাপান ও ভারতের নাগরিক। করোনার পরিস্থিতিতে দুই দেশের সঙ্গেই ভিসা-ফ্লাইট বন্ধ। বিশেষ ব্যবস্থায়ও আসতে রাজি হচ্ছেন না অনেক বিদেশি নাগরিক। বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠরা জানিয়ে দিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে তাঁরা আসবেন না। এর মধ্যে পরামর্শক দলের প্রধান জাপানি নাগরিক হিদিও ওমরি রয়েছেন।

এখানে নিচে একটি সেতু আছে। তাই এর নির্মাণ প্রক্রিয়াও কিছুটা ভিন্ন। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে

মেট্রোরেল চালু হচ্ছে কবে?

প্রকল্পের নথি বলছে, মেট্রোরেল দিয়ে ৩৫ মিনিটে উত্তরা থেকে মতিঝিল যাওয়া যাবে।

শুরুতে দৈনিক ৪ লাখ ৮৩ হাজার যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। ব্যয় ধরা হয় ২২ হাজার কোটি টাকা। এর সিংহভাগই দিচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকা। বাকিটা সরকার দিচ্ছে। প্রথমে ২০১৯ সালে মেট্রোরেল চালুর ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। পরে দুই বছর বাড়ানো হয়।

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কোম্পানি ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশের কাজ পুরোপুরি শেষ করা সম্ভব। কিন্তু মতিঝিল পর্যন্ত কাজ শেষ হতে আরও দুই বছর লাগতে পারে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, গণপরিবহনের মধ্যে মেট্রোরেল সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ। যত তাড়াতাড়ি চালু হবে, তত মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে যত দেরি হবে, তত ছোট গাড়ি, মোটরসাইকেল বাড়তে থাকবে। এগুলো যানজট বাড়ায়।

মেট্রোরেল প্রকল্পের উত্তরে দৃশ্যমান, দক্ষিণে পিছিয়ে থাকার বিষয়ে এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ বলেন, একাংশ আগে শেষ হলেও কারিগরি নানা সীমাবদ্ধতার কারণে তা চালু করা যাবে না। তাই পুরোটাই একসঙ্গে শেষ করতে হবে। এর জন্য রাতের পালায় কাজ বাড়িয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে শহরের ভেতরে রাতে কাজ করলে মানুষের দুর্ভোগও কমবে।

রাজধানীর বাংলামোটর এলাকায় চলছে মেট্রোরেলের কাজ। আজ সোমবার তোলা।