Thank you for trying Sticky AMP!!

যমুনার টাকাও সরানোর চেষ্টা করেছিল চক্রটি

ওয়ালটন ও ইউনাইটেডের টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাঁচ মাস আগে এই ঘটনা ঘটে। তখনো তারা বিফল হয়।

দেশের আরেকটি শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীর ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা সামনে এসেছে। ঘটনাটি ঘটেছিল পাঁচ মাস আগে। ওই ঘটনায়ও জড়িত ছিল সেই চক্র, যারা গত সপ্তাহে ওয়ালটন ও ইউনাইটেড গ্রুপের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরানোর চেষ্টা করেছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারক চক্রটি পাঁচ মাস আগে জালিয়াতি করে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিডেটের (ডিবিবিএল) রামপুরা ও মতিঝিল শাখায় থাকা যমুনা গ্রুপের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা সরিয়ে নিতে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (আরটিজিএস) ভুয়া আবেদন করে। তবে ওই দফায়ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিচক্ষণতা দেখান। তাঁরা যমুনা গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ফলে প্রতারকেরা টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় সফল হননি।

ঘটনাটি ঘটে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর। পরদিন রাজধানীর রামপুরা থানায় দুজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন যমুনা গ্রুপের আইন কর্মকর্তা মো. সোলায়মান কবির। তিনি গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আর কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।

পুলিশ জানিয়েছে, যমুনা গ্রুপের টাকা সরিয়ে নেওয়ার জন্য ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের আবেদনটি জমা দিয়েছিলেন চক্রের সদস্য মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম ও নুরুল আলম। ব্যাংক কর্মকর্তারা যমুনা গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তাঁরা ব্যাংকের শাখা থেকে পালিয়ে যান। তবে ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাঁদের শনাক্ত করা হয়।

রামপুরা থানায় করা যমুনা গ্রুপের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পরও আসামি গ্রেপ্তার করতে পারছিলাম না। ভাটারা থানার পুলিশ চক্রটিকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হয়েছি, তারাই যমুনা গ্রুপের ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।’ তিনি জানান, যমুনার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।

চক্রটি ওয়ালটন ও ইউনাইটেড গ্রুপের ১৮ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল গত ২৫ জানুয়ারি। যদিও তারা সফল হয়নি। এর দুই দিন পর চক্রটির ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের মূল হোতা ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখার এসএমএই সেলস টিমের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসান মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের সদস্যরা যমুনা গ্রুপের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁরা আরও দুজনের নাম বলেছেন। এই দুজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আরও বলেন, জাকির ব্যাংকে যে কম্পিউটারটি ব্যবহার করতেন, সেটি জব্দ করা হবে। কারণ, সেখানে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে।

এর আগে পুলিশ জানিয়েছিল, চক্রটি ব্যাংক হিসাবধারীদের সই জাল করে ভুয়া ‘ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারে’র আদেশ দিত। অবশ্য ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকার বেশি স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সাধারণত ব্যাংক হিসাবধারীকে জানানো হয়। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন প্রথম আলোকে গত শুক্রবার বলেছিলেন, কোনো গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা স্থানান্তর করতে হলে কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করতে হয়। গ্রাহক সরাসরি না এলে ফোনেও যোগাযোগ করা হয়। আর ব্যাংকের কোনো দুর্বলতায় জালিয়াতি হলে গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তাই ঘটনাটি নিয়ে গ্রাহকদের আতঙ্কের কিছু নেই।