Thank you for trying Sticky AMP!!

রোগী কম, চিকিৎসাসুবিধা পর্যাপ্ত

কারণে-অকারণে মাথা ঘোরে? মেডিসিন, নিউরোলজি বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়েও সুরাহা হয়নি? ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা বিকট শব্দে? কানে কম শোনার সমস্যা? নাক-কান-গলার কোথাও টিউমার? রাজধানীর জাতীয় নাক কান গলা ইনস্টিটিউটে এসব রোগের অত্যাধুনিক চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে।
তবে ইনস্টিটিউটের পরিচালক মামুন হাসান বলছিলেন, ‘সমস্যা একটাই—লোকজন হাসপাতালটা চেনে না। ফলে রোগী কম। আমরা একটা সেবা সপ্তাহ করেছিলাম। তারপর রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে।’
তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়ীতে ২০১৩ সালের মাঝামাঝি স্বল্প পরিসরে ১০০ শয্যার এই হাসপাতাল ও চিকিৎসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাজ শুরু। পরে সেবার পরিসর বেড়েছে। তবে সে তুলনায় রোগী বাড়েনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল ছাড়া বাকি হাসপাতালগুলো শেরেবাংলা নগর ও মহাখালীতে। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটটি অবস্থানগত কারণে দলছুট হয়ে পড়েছে। যাতায়াতের অসুবিধার কারণেই মূলত রোগীরা আসছেন না।
দেশের ৩০ শতাংশ লোক নাক, কান, গলার কোনো না কোনো রোগে ভুগছেন। সারা দেশ থেকে এসবের জটিল রোগীদের এই হাসপাতালে পাঠানো হবে এবং চিকিৎসকেরা এখানে স্নাতকোত্তর লেখাপড়া শেষে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বেন—এই ভাবনা থেকেই হাসপাতালটি তৈরি। তবে প্রায় তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষা কার্যক্রম সেভাবে শুরু হয়নি।
গত মাসে এখানে বহির্বিভাগে সেবা নিয়েছেন ৫ হাজার ৬১৫ জন। অন্তর্বিভাগে গতকাল সব কটি শয্যাতেই রোগী ছিলেন। তবে এই একই সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন শ থেকে চার শ রোগী সেবা পেয়েছেন। বিছানার বাইরেও জায়গা দিতে হয়েছে রোগীদের। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে বহির্বিভাগে চিকিৎসকদের কক্ষের সামনে ছোট ছোট সারি দেখা গেছে। অস্ত্রোপচারের জন্যও অপেক্ষা করছিলেন কয়েকজন। কিছু রোগী ছিলেন অডিওলজি বিভাগেও। কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগ রোগীই তেজগাঁও এবং আশপাশের এলাকা থেকে এসেছেন। মোছা. তপু নামের এক নারীর গলাব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন। চিকিৎসায় সন্তুষ্ট, ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। জামালউদ্দিন নামের এক গাড়িচালকের ছেলের কানের পাতায় টিউমার। অস্ত্রোপচার করাবেন। কোনো টাকাপয়সা খরচ হবে না বলে তাঁকে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। অডিওলজি বিভাগে নাজমুল নামের সাত বছরের এক বালকের বধিরতার মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছিল। সে পাবনা থেকে এসেছে বলে জানায় এ প্রতিবেদককে।
নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটে বহির্বিভাগের ছয়টি কক্ষেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা সেবা দেন। এখানে সাইনাসের সমস্যা থেকে শুরু করে এন্ডোসকপির সাহায্যে নাকের হাড় বাঁকা, মাংসবৃদ্ধি, নাকের পলিপ ও টিউমার অপারেশন এবং নাক ডাকার চিকিৎসা হয়। আছে কানের শ্রবণ মাত্রা পরীক্ষা ও বধিরতার কারণ, কানের পর্দার ছিদ্র পরীক্ষা, শ্রবণজনিত মাথা ঘোরানো, জন্মগত শ্রবণস্বল্পতা/বধিরতার কারণ নির্ণয় এবং দেরিতে শিশুর কথা বলার কারণ নির্ণয় ও চিকিৎসার ব্যবস্থা। এ ছাড়া কণ্ঠস্বর পরিবর্তনের কারণ, কণ্ঠনালির ক্যানসার, স্বরনালি পলিপ অপসারণ, গলগণ্ডসহ থাইরয়েডের সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থাও আছে। বহির্বিভাগে যে রোগটি সাধারণভাবে ধরা পড়ে না, এমন সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম রোগনির্ণয়ের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে আরেকটি ইউনিট আছে।
হাসপাতালের অডিওলজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জুনায়েদ রহিম বলেন, নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউটে এমনকি যে শিশুটি আজ ভূমিষ্ঠ হয়েছে, তারও শ্রবণমাত্রা পরীক্ষা করা যায়। কর্তৃপক্ষের আশা, প্রচার হলে রোগীর সংখ্যাও বাড়বে।