Thank you for trying Sticky AMP!!

সাম্প্রদায়িক শক্তিকে প্রতিরোধের ডাক

সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি। আজ সকাল ১০টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে

বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষই অসাম্প্রদায়িক, গুটিকয়েক সাম্প্রদায়িক মানুষ রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলে চলবে না।

সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আজ শনিবার সকাল ১০টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন বিশিষ্টজনেরা। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্মসূচিটির আয়োজন করে। এতে কুমিল্লার মুরাদনগরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, হামলাসহ সব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানানো হয়, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।

কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগরে সহিংস হামলার ঘটনায় স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ভূমিকার তদন্ত দাবি করে বলেন, রাজাকার-আলবদরদের মতাদর্শীরা প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে আছে। কুমিল্লায় হামলার আগে মাইকিং করা হয়েছিল। ওসি ও ইউএনও কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলেন না।

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ও উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর পক্ষ থেকেও সংহতি জানানো হয়। সংহতি জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী।

ধর্ম কোনো অবস্থাতেই আরেকজন মানুষের অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে না বলে মন্তব্য করেন সাংবাদিক আবেদ খান। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ যুদ্ধ শেষ হবে না।

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকে এই মহামারির সময় ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখছেন আয়োজক সংগঠনের অন্যতম সভাপতি ও সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, এটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। গুটিকতক সাম্প্রদায়িক লোক এর সঙ্গে জড়িত। সংগঠনটির আরেকজন অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও সাম্প্রদায়িক হামলা তদন্তে কমিশন গঠনের দাবি জানান।

কর্মসূচিতে উদীচীর সহসাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম বলেন, ‘উদীচী নিপীড়িত মানুষের পক্ষে কথা বলে, সেই আদর্শ থেকে এখানে এসেছি।’ তিনি আরও বলেন, ৫৬ হাজার বর্গমাইলে যে শহীদদের (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ) রক্ত আছে, তা আলাদা করা যায় না। তাই এ দেশে কেউ সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু নেই; সবাই মানুষ। যে সাম্প্রদায়িক হামলা চালায়, তার কোনো ধর্ম নেই, তার পরিচয় সাম্প্রদায়িক হামলাকারী।

সভাপতির বক্তব্যে নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, কুমিল্লার মুরাদনগরে মাইকিং করে লোক জড়ো করা হয়েছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে এমন ঘটনা ঘটতো না। সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার সময় চেয়ে চেয়ে না দেখে প্রতিরোধ করতে হবে।

কর্মসূচিতে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের সচেতন নাগরিক ও বৌদ্ধ সমাজ, বাংলাদেশ আইনজীবী ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ, মাইনরিটি রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। অবস্থান কর্মসূচি শেষে জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শাহবাগ এলাকা ঘুরে শেষ হয়।