Thank you for trying Sticky AMP!!

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে তিন ছাত্রের অনশন-অবস্থান চলছে

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে আমরণ অনশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম। তাঁর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অবস্থান করছেন বিইউপির শিক্ষার্থী নাজমুল করিম। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ২৭ জানুয়ারি। ছবি: সংগৃহীত

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে চার দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম। একই ইস্যুতে রাজধানীতে আরও দুই শিক্ষার্থী যথাক্রমে দুই ও তিন দিন ধরে অবস্থান করছেন।

আরিফ গত শনিবার বিকেল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন শুরু করেন। একই সময় সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ও ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী নাসির আবদুল্লাহ। অন্যদিকে, গতকাল রোববার বিকেল থেকে আরিফের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান শুরু করেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) বিবিএর শিক্ষার্থী নাজমুল করিম ওরফে রিটু।

আরিফের চার দফা দাবি হলো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সব হত্যার আন্তর্জাতিক আইনে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা। ভারতকে সীমান্তে হত্যার জন্য ক্ষমা চেয়ে আর হত্যা না করার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সীমান্তে হত্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে তদন্ত সাপেক্ষে দুই দেশের যৌথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জাতীয় সংসদে সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদ করে নিন্দা জানাতে হবে। নাসিরের দুই দফা দাবি হলো বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশের নাগরিকদের হত্যার সব ঘটনার বিচার ও সীমান্ত সমস্যার সমাধান।

আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, আজ সোমবার সকাল থেকে অনেকে ব্যক্তিগত ও সংগঠনের পক্ষ থেকে তাঁদের (আরিফ ও নাজমুল) সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গেছেন। এর মধ্যে ব্যক্তিপর্যায়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, শ্রমিক নেতা ও বাম রাজনীতিক মোশরেফা মিশু, মানবাধিকারকর্মী উৎসব মোসাদ্দেক, ছাত্রনেতা ইকবাল কবির, গোলাম মোস্তফা ও হানিফ বাংলাদেশি রয়েছেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রচিন্তা, বাংলাদেশ ছাত্র মিছিল, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, ইশা ছাত্র আন্দোলন, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লিগ, সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, ছাত্র ফেডারেশন, বাসদ (মার্ক্সবাদী), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি প্রভৃতি সংগঠনের পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে সংহতি জানানো হয়। আজ বেশ কয়েকটি বাম সংগঠন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদের প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করে।

সীমান্তে হত্যার প্রতিবাদে ও দুই দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী নাসির আবদুল্লাহর অবস্থান। গতকাল রাজু ভাস্কর্যের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

আরিফুল ইসলাম ওরফে আদীব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের স্নাতকোত্তরের (৪৩ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক। তবে আরিফের ভাষ্য, তিনি একক সিদ্ধান্তে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে তাঁর সংগঠনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই। গত ২২ ডিসেম্বর ডাকসুতে হামলার সময় তিনিও ভিপি নুরুল হকের সঙ্গে আহত হয়েছিলেন । চিকিৎসক আরিফকে তিন মাস বিশ্রামে থাকতে বলেছেন।

তিন দিন টানা অনশনের কারণে স্বাস্থ্যের অবস্থান কেমন—জানতে চাইলে আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, শরীরে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে গেছে। ঘাড়ে ব্যথা অনুভব হচ্ছে, সম্ভবত প্রেশার অবনতি হচ্ছে। সকাল থেকে ডায়রিয়ার লক্ষণও দেখা দিয়েছে। গতকাল রাতে আরিফ ও নাজমুল প্রেসক্লাবের সামনেই অবস্থান করেন। তবে এর আগে শনিবার রাতে ‘নিরাপত্তা শঙ্কায়’ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে নাসির আবদুল্লাহর সঙ্গে অবস্থান করেন । পরে গতকাল সকালে আবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চলে আসেন। এরপর বিকেলে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন বিইউপির শিক্ষার্থী নাজমুল।